এক সপ্তাহ কেটে গিয়েছে। অথচ এখনও গ্রেফতার হয়েছে নয় জন। অভিযোগ ২৪ জনের বিরুদ্ধে। পুলিশের দাবি, ধৃতদের সাত জন রয়েছে তাদের হেফাজতে। কিন্তু এ সব মেনে নিতে পারছেন না নিহত তামান্না শেখের পরিবার। রবিবার তামান্নার মা সাবিনা খাতুন সাফ জানিয়ে দেন, “আর ক’টা দিন দেখব। যদি ২৪ জনকে না ধরা হয়, অস্ত্র উদ্ধার না হয়-তাহলে অনশনে বসব আমি।”
এ দিন তামান্নার গ্রাম মোলান্দি কিছুটা হলেও স্বাভাবিক চেহারা নিয়েছে। গত শনিবার থেকেই গ্রাম লাল পতাকায় মুড়ে ফেলা হয়। তবে গ্রামের মোড়ে মোড়ে ও মূল অভিযুক্ত গাওয়াল সেখ আনোয়ার শেখের বাড়ির সামনে পুলিশের পাহারাও আছে। দুপুরে তামান্নার বাড়িতে আসেন ‘আমরা আক্রান্ত’ সংস্থার পক্ষ থেকে অম্বিকেশ মহাপাত্র-সহ আট প্রতিনিধির দল। প্রথমেই তামান্নার বাড়িতে গিয়ে পরিবারের সঙ্গে কথা বলে পাশে থাকার আশ্বাস দেন। অম্বিকেশ বলেন, “আরজি কর থেকে কালীগঞ্জ, তার পরে কসবা। বাংলার মানুষকে প্রতিবাদ করতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী এবং পুলিশ প্রশাসনকে পাশে রেখে সম্ভব নয়। রাজ্যে এ সব বন্ধ করতে হবে প্রতিবাদ করে।”
তামান্নার মৃত্যুর প্রথম দিন থেকেই সিপিএম নেতৃত্বকে পরিবারের পাশে থাকতে দেখা গিয়েছে। স্থানীয় নেতৃত্ব তো বটেই রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম, মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়-সহ একাধিক নেতৃত্ব তামান্নার বাড়িতে এসেছেন। সিপিএমের যুব সংগঠনের পক্ষ থেকে এ দিন পলাশি রেলগেট সংলগ্ন সিনেমা হলের সামনে অবস্থান-বিক্ষোভ কর্মসূচি শুরু করে। সংগঠনের পক্ষ থেকেও এ দিন দাবি তোলা হয় অভিযুক্তকে অবিলম্বে গ্রেফতার ও যথাযথ শাস্তি দিতে হবে। সমস্ত বেআইনি অস্ত্র উদ্ধার করতে হবে।
সংগঠনের জেলা সম্পাদক রুদ্রপ্রসাদ মুখোপাধ্য়ায় বলেন, ‘সারা দেশ জেনেছে, তৃণমূলের জল্লাদ বাহিনী চুরি করে জেতা ভোটের বিজয় উল্লাস করতে গিয়ে ছোট শিশুকে খুন করা হয়েছে। সারা রাজ্যে দেশে গণতান্ত্রিক মানুষ রাস্তায় নেমেছে। কালীগঞ্জ ব্লকে সাধারণ মানুষ রোজ আসছে।’’ তাঁর দাবি, দরকার হলে কৃষ্ণনগর পুলিশ সুপারের অফিস ঘেরাও করে বিক্ষোভ আন্দোলন চলবে। জানা গিয়েছে, এই অবস্থান কর্মসূচি চলবে দুই দিন ব্যাপী।
গত ২৩ জুন কালীগঞ্জ বিধানসভার উপনির্বাচনের ভোট গণনার দিন তৃণমূলের জয় নিশ্চিত হতেই কালীগঞ্জের বড় চাঁদঘরের মোলান্দি গ্রামে বিজয়মিছিল থেকে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে সিপিএমের সমর্থকদের বাড়ি লক্ষ্য করে বোমা ছোড়ার অভিযোগ ওঠে। দুষ্কৃতীদের ছোড়া ওই বোমায় চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী বছর দশেকের তামান্না নিহত হয়।