• পেট্রাপোলে রোজগার কমায় চিন্তিত শ্রমিকেরা বৈঠকে
    আনন্দবাজার | ৩০ জুন ২০২৫
  • গত কয়েক মাসের মধ্যে দেশের বৃহত্তম স্থলবন্দর পেট্রাপোল দিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের পণ্য আমদানি-রফতানি কমে গিয়েছে অনেকাংশেই। এর ফলে ট্রাকে পণ্য ওঠানো-নামানোর কাজে যুক্ত এক হাজারের বেশি শ্রমিক রুজি-রোজগার হারানোর আশঙ্কায় আছেন। এই পরিস্থিতিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শ্রমিক সংগঠন একত্রে বৈঠক করল রবিবার।

    সুসংহত চেকপোস্টের মধ্যে প্রায় এক হাজার শ্রমিক বৈঠকে উপস্থিত ছিল। উপস্থিত ছিলেন পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং এজেন্ট স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী। তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি অনুমোদিত বনগাঁ ট্রাক লোডিং-আনলোডিং শ্রমিক ইউনিয়নের সম্পাদক রামপদ বিশ্বাস বলেন, ‘‘এ দিন বৈঠকে আমরা আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, পেট্রাপোল বন্দরে পণ্য বাণিজ্যের কাজ দ্রুত স্বাভাবিক গতিতে ফিরিয়ে আনার দাবি তোলা হবে। প্রথমে আমরা ল্যান্ড পোর্ট অথরিটি অব ইন্ডিয়া কর্তৃপক্ষ, বিএসএফ, মন্ত্রী, সাংসদ, বিধায়ক, পুরপ্রধান, শুল্ক দফতর এবং ক্লিয়ারিং এজেন্ট সংগঠনের কাছে চিঠি দিয়ে আবেদন করব। তাতে পরিস্থিতির উন্নতি না হলে লাগাতার আন্দোলনের পথে যাব।’’ তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে। শ্রমিকদের রুজি-রোজগার কমে গিয়েছে। অথচ, সে দিকে কেন্দ্রের নজর নেই।’’

    শ্রমিকেরা জানিয়েছেন, পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে আমদানি করা পণ্যের মধ্যে বেশিরভাগই ছিল তৈরি পোশাক, কাঁচাপাট এবং কিছু পাটজাত পণ্য (পাটের ন’টি দ্রব্য)। কেন্দ্র স্থলবন্দর দিয়ে এই পণ্যগুলি আমদানি বন্ধ করেছে। অথচ, সমুদ্রবন্দর বা জলবন্দর দিয়ে সেগুলি আমদানি করা হচ্ছে। শ্রমিকদের একাংশের কথায়, ‘‘যদি কেন্দ্র ওই পণ্যগুলির আমদানি সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিত, তা হলে আমাদের কিছু বলার ছিল না। কিন্তু স্থলবন্দরের পরিবর্তে সমুদ্রবন্দর কেন ব্যবহার করা হবে? এর পিছনে বহুজাতিক কিছু সংস্থার মুনাফা জড়িয়ে থাকতে পারে বলে আমরা মনে করছি।’’

    শ্রমিকেরা জানালেন, স্বাভাবিক সময়ে পণ্য আমদানি-রফতানি যখন বেশি হত, তখন এক জন শ্রমিক দিনে গড়ে ৫০০-৬০০ টাকা আয় করতেন। এখন শ্রমিকদের দৈনিক কাজই থাকছে না। ১০০-২০০ টাকা আয় করছেন।

    পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং এজেন্ট স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন সূত্রে জানা গিয়েছে, ২৫ জুন পণ্য রফতানি হয়েছে ২৭৭ ট্রাক। আমদানি হয়েছে ৬৭ ট্রাক। ২৪ জুন রফতানি হয়েছে ৩১৯ ট্রাক। আমদানি হয়েছে ৭৬ ট্রাক। ২৩ জুন পণ্য রফতানি হয়েছে ২৭৭ ট্রাক। আমদানি হয়েছে ৬৭ ট্রাক। স্বাভাবিক সময়ে পণ্য রফতানি হত ৪৫০-৫০০ ট্রাক। আমদানি হত ১৫০-২০০ ট্রাক। কেন্দ্র কাঁচপাট এবং কিছু পাটজাত পণ্যের আমদানি বন্ধ করায় পণ্য আমদানি আরও কমে যাবে বলে অনেকে মনে করেছেন।

    কার্তিক বলেন, ‘‘পণ্য বাণিজ্যের ক্ষেত্রে কেন্দ্র যে সিদ্ধান্তই নিক, তা আঞ্চলিক অর্থনীতিতে কী প্রভাব ফেলতে পারে, তা বিবেচনা করে পদক্ষেপ করা উচিত।’’
  • Link to this news (আনন্দবাজার)