• আগুন আনাজ
    আনন্দবাজার | ৩০ জুন ২০২৫
  • সম্প্রতি নিম্নচাপের টানা বৃষ্টি আনাজের খেত জলে ভরিয়েছে। চাষিদের কিছু করে ওঠার আগে জমিতেই নষ্ট হয়েছে বেশির ভাগ আনাজ। তারই ধাক্কা এসে লেগেছে বাজারে। বিক্রেতারা জানাচ্ছেন, বাজারে আনাজের জোগান অনেকটা কমে গিয়েছে। চাহিদা আর জোগানের এই অসামঞ্জস্য ঠেলে তুলছে আনাজের দর। আনাজের আগুনে দর হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন গৃহস্থেরা।

    পুরুলিয়ায় আনাজের জোগানের বড় অংশ আসে বাঁকুড়া ও মেদিনীপুরের একাংশ থেকে। যদিও গত কয়েক বছর ধরে জেলাতেও আনাজ উৎপাদন বেশ গতি পেয়েছে। তবে বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া, দু’জেলাতেই নিম্নচাপের বৃষ্টিতে আনাজ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় জোগানে বেশ টান পড়েছে। ক্রেতারা জানাচ্ছেন, প্রায় দিন দশেক ধরে চড়া আনাজের দর। আদ্রার আনাজ বিক্রেতা বিনয় পাল, পুরুলিয়া শহরের অনিল খানেরা বলেন, “টানা বৃষ্টিতে আনাজের ক্ষতি হওয়ায় জোগান কমেছে। অল্প আনাজই বাজারে আসছে। তাই দাম চড়া।”

    ক্রেতাদের বড় অংশও জানান, বাজারে গিয়ে আনাজ কার্যত পাওয়াই যাচ্ছে না। যা পাওয়া যাচ্ছে, আকাশছোঁয়া দাম। বান্দোয়ানের আনাজ চাষি রামকমল মাহাতোর আশঙ্কা, টানা বৃষ্টিতে আনাজের খেত জলে ভরেছে। আদৌ তা বাঁচবে কি না, সন্দেহ। বাঘমুণ্ডির চাষি বাসুদেব কুইরিও বলেন, “বরবটি, শসা মাঠেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। জল না নামলে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে।”

    একই অবস্থা বাঁকুড়াতেও। জেলা সদর-সহ বিষ্ণুপুর, সোনামুখী, জয়পুর, কোতুলপুর ও বড়জোড়ার বাজারে ঊর্ধ্বমুখী আনাজের দাম। চরম গরমেও আনাজের দাম অর্ধেক ছিল বলে জানান বিষ্ণুপুরের কৃষ্ণ গরাঁই, হাফিজুল শেখের মতো আনাজ বিক্রেতারা। খুচরো বিক্রেতাদের দাবি, আমদানি না থাকায় ফি বছর এক বার আনাজের দাম এমন বাড়ে। চাষিরা তবে আঙুল তুলছেন অতিবৃষ্টির দিকে। পাত্রসায়রের আনাজ চাষি সুবল মণ্ডল, বড়জোড়ার রবি বিশ্বাসদের কথায়, “বার বার নিম্নচাপের বৃষ্টিতে আনাজ গাছ মরছে। মাচার আনাজেরও ভীষণ ক্ষতি হচ্ছে। ঝিঙে একবারে নষ্ট হয়ে গিয়েছে। বাজারে জোগান কম। দাম তো বাড়বেই।” যদিও পুরুলিয়া জেলা এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চের এক আধিকারিকের দাবি, এখনও আনাজের দর অস্বাভাবিক হওয়ার অভিযোগ আসেনি। বাজারগুলিতে নজরদারি আছে।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)