• দু’দফায় মেট্রো বিপর্যয়! লাইনে জল জমে ঘণ্টা দুয়েক দুর্ভোগের পর স্বাভাবিক হতে না হতেই আত্মহত্যার চেষ্টা বেলগাছিয়ায়
    আনন্দবাজার | ৩০ জুন ২০২৫
  • সপ্তাহের প্রথম দিনে সকালের ব্যস্ত সময়ে প্রায় দু’ঘণ্টা ব্যাহত রইল মেট্রো পরিষেবা। সোমবার সকাল ৯টা থেকে কবি সুভাষ থেকে দক্ষিণেশ্বর পর্যন্ত টানা পথে বন্ধ থাকল মেট্রো চলাচল। ভাঙা পথে চলল মেট্রো। মাঝের কয়েকটি স্টেশনে আবার পুরোপুরি বন্ধ থাকল পরিষেবা। এর ফলে বিপাকে পড়েন যাত্রীরা। রাস্তায় তৈরি হয় তীব্র যানজট। ১১টা নাগাদ মেট্রো পরিষেবা স্বাভাবিক হলেও নতুন করে বিপত্তি দেখা দেয়। মেট্রো সূত্রেই জানা যায়, বেলগাছিয়া লাইনে আত্মহত্যার চেষ্টা হয়েছে। তার জেরে দক্ষিণেশ্বর থেকে কবি সুভাষগামী মেট্রো খালি করে দেওয়া হয়।

    মেট্রো সূত্রে খবর, সোমবার ১১ টা ২০ মিনিট নাগাদ এক জন ঝাঁপ দিয়েছেন ডাউন লাইনে। এখন গিরিশ পার্ক থেকে কবি সুভাষ পর্যন্ত ভাঙা পথে মেট্রো চলছে।

    মেট্রো কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, সোমবার সকাল ৯টা নাগাদ চাঁদনি ও সেন্ট্রাল স্টেশনের মাঝখানে লাইনে জল দেখা যায়। যাত্রী সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে সকাল ৯টা ০৫ থেকে ভাঙা পথে মেট্রো পরিষেবা চালু করা হয়। ১০টা ৫৮ থেকে আবার সম্পূর্ণ পথে মেট্রো চলতে শুরু করে। কিন্তু তার পরেই বিপত্তি। আত্মহত্যার চেষ্টার কারণে আবার ভেঙে পড়ে পরিষেবা। যদিও যাত্রীদের দাবি, সোমবার সকাল ৮টা ৪৫ মিনিট নাগাদই মেট্রো পরিষেবায় সমস্যা দেখা দেয়। স্টেশনেই থমকে যায় মেট্রো। ৯টা নাগাদ মেট্রো কর্তৃপক্ষের তরফে ঘোষণা করা হয় যে, ভাঙা পথে চলবে ট্রেন। ওই সময় কবি সুভাষ থেকে ময়দান স্টেশনের মধ্যে চলাচল করে মেট্রো। অন্য দিকে উত্তরে দক্ষিণেশ্বর থেকে গিরিশ পার্কের মধ্যে চলাচল করে মেট্রো। মাঝে পার্ক স্ট্রিট থেকে এমজি রোড স্টেশনের মধ্যে মেট্রো চলাচল বন্ধ ছিল।

    মেট্রো পরিষেবা ব্যাহত হওয়ার কারণে বিপাকে পড়েন অফিস এবং স্কুল, কলেজ যাত্রীরা। তাঁদের অভিযোগ, ভাঙা পথে চলার সময়েও বিঘ্নিত হয়েছে পরিষেবা। নির্ধারিত সময়ের পরে স্টেশনে এসেছে মেট্রো। ফলে প্রবল ভিড় জমেছে। ট্রেনের ভিতরেও একই অবস্থা। ভিড়ের চাপে দরজা বন্ধ হয়নি। যাত্রীদের অভিযোগ, এ সব কারণে ঠিকমতো এসি কাজ করেনি। ফলে দরদর করে ঘেমেছেন যাত্রীরা। সপ্তাহের প্রথম দিনেই সঠিক সময়ে অফিস, স্কুল, কলেজে পৌঁছোতে পারেননি তাঁরা।

    কবি সুভাষ থেকে দক্ষিণেশ্বরগামী মেট্রো থেমে যায় ময়দান স্টেশনে। দক্ষিণেশ্বর থেকে কবি সুভাষগামী মেট্রো থেমে যায় গিরিশ পার্কে। এই দুই স্টেশনে আবার আর এক বিপত্তি দেখা দেয়। যেহেতু সব যাত্রীরা সেখানে নেমে পড়তে বাধ্য হন, ফলে ওই দুই স্টেশনেই ভিড়ে হাঁসফাঁস অবস্থা হয়। তাঁদের অভিযোগ, ভিড় সামাল দেওয়ার জন্য কোনও রক্ষী সেখানে ছিলেন না। যে কোনও সময়ে বিপদ ঘটতে পারত। স্টেশন থেকে বেরিয়ে নতুন সমস্যায় পড়েন নিত্যযাত্রীরা। তাঁদের অভিযোগ, পর্যাপ্ত যানবাহন নেই। বাসগুলিতে বাদুড়ঝোলা অবস্থা। সুযোগ বুঝে ইচ্ছামতো ভাড়া হাঁকান হলুদ ট্যাক্সির চালক। অ্যাপ ক্যাবগুলি অতিরিক্ত ভাড়া (সার্জ চার্জ) দাবি করতে শুরু করে দেয়। পার্ক স্ট্রিট থেকে ধর্মতলা মোড়, অন্য দিকে গিরিশ পার্ক থেকে সেন্ট্রাল পর্যন্ত রাস্তায় তীব্র যানজট। যাত্রীদের প্রশ্ন, বর্ষার শুরুতেই যদি লাইনে জল জমে পরিষেবার এই হাল হয়, তবে বেশি বৃষ্টি হলে কী হবে? প্রসঙ্গত, গত বছর বর্ষায় পার্ক স্ট্রিট মেট্রো স্টেশনে জল জমে বিপত্তি হয়।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)