• লাল কুর্তা, খয়েরি প্যান্ট! সিসি ক্যামেরায় দেখা সেই পোশাকই ‘এম’-এর বাড়িতে খুঁজে পেল সিট, আর কী কী উদ্ধার
    আনন্দবাজার | ৩০ জুন ২০২৫
  • সিসি ক্যামেরায় যেমনটা দেখা গিয়েছিল, সেই পোশাকই খুঁজে পাওয়া গিয়েছে কসবার কলেজে ধর্ষণের ঘটনায় মূল অভিযুক্তের বাড়িতে। তাঁকে ‘এম’ হিসাবে চিহ্নিত করা হচ্ছে। এই ঘটনার তদন্ত করছে কলকাতা পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দল। তারা রবিবার তিন অভিযুক্তের বাড়িতেই গিয়েছিল। সেখান থেকে নানা নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এক আধিকারিক সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘এম’-এর বাড়ি থেকে সেই পোশাকগুলিই পাওয়া গিয়েছে, যেগুলি তিনি ঘটনার সময়ে পরেছিলেন। সিসি ক্যামেরায় ওই পোশাক পরে থাকতে তাঁকে দেখা গিয়েছে। এই পোশাকগুলি ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হচ্ছে। তদন্তে এই পোশাক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে বলে মনে করছে সিট।

    কলকাতা পুলিশের অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার (দক্ষিণ শহরতলি) প্রদীপকুমার ঘোষাল সিটের নেতৃত্বে রয়েছেন। প্রথমে তাঁর নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের সিট গঠন করা হয়েছিল। রবিবার সেই সদস্যসংখ্যা বাড়িয়ে ৯ করা হয়। সিটে যোগ দেন এক মহিলা অফিসারও। তাঁরা ‘এম’-এর বাড়ি থেকে লাল রঙের কুর্তা এবং খয়েরি রঙের প্যান্ট উদ্ধার করেছেন। এই প্যান্টে মোট ছ’টি পকেট রয়েছে। এ ছাড়া কালো শর্ট্‌স। এক অফিসারের কথায়, ‘‘আগে সিসিটিভি ফুটেজে যে পোশাক দেখা গিয়েছিল, বাড়ি থেকে সংগ্রহ করা পোশাকের সঙ্গে তা মিলে গিয়েছে। এগুলি ফরেন্সিক প্রমাণ হিসাবে এই তদন্তে কাজে লাগতে পারে।’’ বাকি দুই অভিযুক্তের বাড়ি থেকেও পোশাক এবং অন্যান্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। তাঁরা মোবাইল ছাড়া অন্য কোনও বৈদ্যুতিন গ্যাজ়েট ব্যবহার করেন কি না, তার খোঁজও করা হয়েছে।

    নির্যাতিতা তরুণীকে কলেজে নিয়ে গিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করেছে পুলিশ। সিট তাঁর বয়ানও রেকর্ড করেছে। সূত্রের খবর, সিটকে তরুণী জানিয়েছেন, রক্ষীর ঘরে যখন তাঁকে ধর্ষণ করা হচ্ছিল, তাঁর মাথায় আঘাত লেগেছিল। তার পরেও থামেননি অভিযুক্ত। তরুণী মৃতপ্রায় অবস্থায় পড়েছিলেন। একটা সময়ের পর তিনি আর বাধা দেননি, যাতে দ্রুত কলেজ থেকে বেরোতে পারেন। হকি স্টিক দিয়ে তাঁকে মারার চেষ্টা করা হয়েছিল বলেও সিটকে জানিয়েছেন তরুণী। একই কথা তিনি জানিয়েছিলেন থানায় লিখিত অভিযোগপত্রেও। ঘটনাস্থল থেকে সেই হকি স্টিক পুলিশ উদ্ধার করেছে। সূত্রের খবর, রক্ষীর ঘরে ধস্তাধস্তির প্রমাণ মিলেছে। পাওয়া গিয়েছে ছেঁড়া কিছু চুল। তবে তা কার চুল, এখনও স্পষ্ট নয়। ফরেন্সিক নমুনা হিসাবে এ সবই সংগ্রহ করা হয়েছে।

    গত ২৫ জুন সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজে ক্যাম্পাসের ভিতরে ছাত্রীকে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ। সে দিন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে রাত ১০টা ৫০ মিনিট পর্যন্ত সিসিটিভি ফুটেজ পুলিশ সংগ্রহ করেছে। ছাত্রীর অভিযোগ, ইউনিয়ন রুমের ভিতরে প্রথমে তাঁকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছিল। পরে নিয়ে যাওয়া হয় রক্ষীর ঘরের ভিতর। রক্ষীর কাছে সাহায্য চেয়েও পাননি নির্যাতিতা। এই ঘটনায় তিন অভিযুক্তের পাশাপাশি রক্ষীকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। নির্যাতিতার পরিবার রবিবার জানিয়েছে, তারা সিবিআই তদন্ত চায় না। তারা কলকাতা পুলিশের তদন্তেই আপাতত আস্থা রাখতে চায়।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)