• ফের নিম্নচাপের দুর্যোগে বন্ধ মাছ ধরা, ইলিশ বাড়ার আশা
    এই সময় | ৩০ জুন ২০২৫
  • এই সময়, কাকদ্বীপ: একের পর এক নিম্নচাপের জেরে গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়ার মরশুমের শুরুতেই ধাক্কার মুখে সুন্দরবনের উপকূল এলাকার মৎস্যজীবীরা। রবিবার থেকে আগামী টানা তিন দিন মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে প্রশাসন। ইতিমধ্যে সমস্ত মৎস্যজীবী ট্রলার সুন্দরবনের ঘাটগুলোতে ফিরে এসেছে।

    দ্বিতীয় এবং তৃতীয় ট্রিপে পর্যাপ্ত পরিমাণে ইলিশ না মেলায় ট্রলার মালিকরা ক্ষতির সম্মুখীন হলেও একের পর এক নিম্নচাপের জেরে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বেশি থাকায় আগামী দিনে সমুদ্রে ইলিশের ঝাঁক মিলবে বলে আশাবাদী মৎস্যজীবী সংগঠনের কর্মকর্তারা।

    কাকদ্বীপ ফিশারম্যান ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক বিজন মাইতি বলেন, ‘নতুন করে আরও একটি নিম্নচাপের জেরে মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।

    মরশুমের শুরুতে ইলিশের দেখা মিললেও একের পর এক নিম্নচাপের জেরে গভীর সমুদ্র উত্তাল হয়ে ওঠায় মাছ ধরার জন্য জাল ফেলার ক্ষেত্রে বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছে মৎস্যজীবীদের।

    ফলে বড় অংশের ট্রলার মালিকদের ক্ষতির মুখে পড়তে হলেও আগামী দিনে দুর্যোগের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সমুদ্রে পর্যাপ্ত ইলিশ মিলবে বলে আমরা আশাবাদী। এই বৃষ্টিতে সমুদ্রের জলের নোনাভাব কেটে গিয়ে মিষ্টি জল তৈরি হলেই ইলিশের দেখা মিলবে।’

    অন্যদিকে, গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি ও অমাবস্যার কটালের জেরে নতুন করে বেহাল বাঁধ উপচে নোনা জলে প্লাবিত হয়েছে পাথরপ্রতিমার গোবর্ধনপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা। সমুদ্রবাঁধ লাগোয়া ৫০টির বেশি বাড়ি জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। ডুবেছে পুকুর, চাষের জমি। দুর্ভোগে কয়েকশো মানুষ।

    স্থানীয় বাসিন্দা তপন মণ্ডল বলেন, ‘বাঁধ বলতে এখানে কিছুই নেই। জোয়ারে হু হু করে জল ঢুকছে শুরু করে গ্রামে। হাতের কাছে যা পেয়েছি, তা নিয়ে এক কাপড়ে বাচ্চাদের নিয়ে উঁচু রাস্তায় উঠে এসেছি। বাড়ির ভিতরে যা ছিল সব ঢেউয়ের তোড়ে তলিয়ে গিয়েছে। জল নামলে বাড়িটাও আর থাকবে না।’

    গ্রামবাসীদের অভিযোগ, স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের জন্য বারবার পঞ্চায়েত, প্রশাসন এবং বিধায়ককে জানিয়েও লাভ হয়নি। দায়সারা মাটির রিং বাঁধ অর্ধেকটা তৈরি করে জিও চট দিয়ে ঢাকা দিয়েছে সেচ দপ্তর। সেটুকু শেষ হওয়ার আগেই বৃষ্টিতে ধুয়ে গিয়েছে গোটা বাঁধটাই।’

    জল ঢুকছে মৌসুনি দ্বীপের সল্টঘেরিতেও। গঙ্গাসাগরের কপিলমুনি মন্দিরের সামনে সমুদ্রতট জলোচ্ছ্বাসের জেরে প্রতিনিয়ত ভাঙছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় জেলা প্রশাসন সতর্ক৷ সেচ দপ্তরকে আপৎকালীন মেরামতির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

    প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যে বীজতলার জমি থেকে পাম্প বসিয়ে জমা জল সরাতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হলো এক ব্যক্তির। রবিবার সকালে দুর্ঘটনাটি ঘটে কাকদ্বীপের নারায়ণপুর দ্বিতীয় ঘেরিতে। মৃতের নাম প্রণব মাইতি (৫৪)।

    কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে বীজতলার জমি জলে ডুবে গিয়ে বীজতলায় পচন শুরু হওয়ায় এ দিন সকালে বাড়ি থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে পাম্প বসিয়ে জল সেচ করছিলেন তিনি। আচমকা বিদ্যুতের তারে হাত লেগে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন প্রণব। কাকদ্বীপ মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

  • Link to this news (এই সময়)