• বয়স্ক ব্যক্তিকে রাস্তায় ফেলে বেদম মার, কাঠগড়ায় তৃণমূলের মহিলা নেত্রী
    এই সময় | ৩০ জুন ২০২৫
  • অন্যায়ের প্রতিবাদ করায় ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তিকে রাস্তায় ফেলে নির্মমভাবে মারধর করার অভিযোগ উঠল এলাকায় তৃণমূল নেত্রী হিসেবে পরিচিত এক মহিলার বিরুদ্ধে। রাস্তায় উপর প্রকাশ্যে সঙ্গীদের নিয়ে বেদম মারধর করা হয়েছে অনিল দাস ওরফে ভীম দা নামের ওই বয়স্ক ব্যক্তিকে। সোমবার সকালে পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়্গপুর শহরের খরিদা এলাকার ঘটনা।

    অনিল দাস নামে যে ব্যক্তির উপর হামলা হয়েছে। তিনি আগে সিপিএমের নেতা ছিলেন। দীর্ঘদিন ধরেই তাঁর সঙ্গে সিপিএমের যোগাযোগ নেই। তিনি এখন ‘আমরা বামপন্থী, খড়্গপুর’ নামে একটি সংগঠন চালান। সোমবার তাঁর উপরেই হামলার অভিযোগ উঠেছে বেবি কোলে এবং তাঁর সঙ্গীদের বিরুদ্ধে। প্রথমে রাস্তায় চড়-থাপ্পড় মারা হয়। তারপরে রাস্তায় ফেলে চটি দিয়ে মারধর করা হয়। নিজেকে বাঁচাতে রাস্তার পাশে একটি রংয়ের দোকানে আশ্রয় নেন অনিল। সেই দোকানে ঢুকে রংয়ের বালতি দিয়ে মারধর করা হয় তাঁকে। খড়্গপুর টাউন থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন অনিল দাস।

    আক্রান্ত অনিল দাসের অভিযোগ, দিনকয়েক আগে খরিদায় তাঁর পড়শি দুর্গা সাহুর বাড়ির দেওয়াল ভেঙে দিয়ে এবং শৌচাগার বন্ধ করে দিয়ে অত্যাচার চালাচ্ছিলেন তৃণমূল নেত্রী বেবি কোলে। সেই ঘটনার প্রতিবাদ করেন তিনি। দুর্গা সাহুকে নিয়ে খড়্গপুর টাউন থানায় যান। সেখানে বেবি কোলের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন দুর্গা সাহু। তার প্রতিশোধ নিতে সোমবারের হামলা বলে তাঁর দাবি। তিনি বলেন, ‘প্রথমে আমাকে রাস্তায় ফেলে মারধর করে। বাঁচতে রঙের দোকানে ঢুকে গেলে, সেখানেও মারে। গায়ে রং ঢেলে দেয়। আমি কোনওমতে নিজেকে বাঁচাই।’ অবিলম্বে বেবি কোলেকে গ্রেপ্তারের দাবি তুলেছেন অনিল দাস।

    ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন খড়্গপুরের প্রাক্তন বিধায়ক তথা তৃণমূল নেতা ও কাউন্সিলর প্রদীপ সরকার। তিনি বলেন, ‘এই ধরনের ঘটনার বিরুদ্ধে পুলিশের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’ বিজেপি-র জেলা মুখপাত্র অরূপ দাস বলেন, ‘একজন বয়স্ক নেতার উপর এইভাবে আক্রমণ মেনে নেওয়া যায় না। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ করছি। যেখানেই তৃণমূলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হয়, সেখানেই এভাবে আক্রমণ নেমে আসে।’

    স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রের খবর, অভিযুক্ত বেবি কোলে আগে বিজেপি করতেন। ২০২২ সালের শেষ দিকে তৃণমূলে যোগ দেন। তাঁর অভিযোগ, ৩ জনের কাছ থেকে কাজ দেওয়ার নাম করে ৫০ হাজার টাকা করে নিয়েছেন। সেই টাকা ফেরত দিচ্ছেন না। উল্টে ওই মহিলাদের সঙ্গে অশালীন ব্যবহার করেছেন। মুখ্যমন্ত্রীকে কুরুচিকর মন্তব্য করেছেন। এ দিন বেবি কোলে এই অভিযোগগুলি করলেও, এই বিষয়টি নিয়ে এর আগে পুলিশের কাছে কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি বলে জানিয়েছেন। এমনকী দলকেও কিছুই জানানো হয়নি বলে জানিয়েছেন তিনি। এ বার অনিল দাস ওরফে ভীমের বিরুদ্ধে টাকা নেওয়া ও অশালীন ব্যবহারের অভিযোগ দায়ের হবে বলে জানিয়েছেন বেবি কোলে।

    এই ঘটনায় বেবি কোলের পাশেই দাঁড়াননি তাঁর দলের জেলা সভাপতি। তৃণমূলের জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা বলেন, ‘অনিল দাস নামে ওই বয়স্ক ব্যক্তিকে যে ভাবে রাস্তায় ফেলে নির্মমভাবে মারা হয়েছে, আমরা তার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। বেবি কোলে-সহ যারা যারা এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত, পুলিশের কাছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। আমাদের দল এদের পাশে দাঁড়াবে না।’

  • Link to this news (এই সময়)