নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাকপুর: তৎকালীন কুমারহট্ট, অধুনা হালিশহরে ৩০০ বছর আগে জন্ম হয় সাধক কবি রামপ্রসাদ সেনের। হালিশহর পুরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডে শিবের গলি মেইন রোডে আজও তাঁর ভিটে বাড়ি রয়েছে। ‘মনরে কৃষিকাজ জানো না’ সহ অসংখ্য গান লিখেছেন ওই ভিটেতে বসেই। সেই জন্মভিটেকে এবার নতুন করে সাজিয়ে তুলতে উদ্যোগী হয়েছে পর্যটন দপ্তর। স্থানীয় বিধায়ক সুবোধ অধিকারী এই ঐতিহাসিক স্থানকে বিশেষভাবে সাজিয়ে তুলতে পর্যটন দপ্তরের কাছে আবেদন করেছিলেন। সেই আবেদন অনুসারে দপ্তর ৯৬ লক্ষ টাকা অনুমোদন করেছে।
প্রথম পর্যায়ের জন্য পর্যটন দপ্তর ৪৯ লক্ষ ৬ হাজার ২৫৬ টাকার অনুমোদন দিয়েছে। শীঘ্রই রামপ্রসাদের ভিটে সংস্কার ও সৌন্দর্যায়নের কাজ শুরু হবে। প্রতিবছর ছাব্বিশে জানুয়ারি ওই ভিটেয় অন্নকূট উৎসব হয়। শ্যামাপূজায় রামপ্রসাদের ভিটেতে বিভিন্ন জেলা থেকে বহু ভক্তের সমাগম হয়। ২০২২ সালের ২৬ ডিসেম্বর সাধক রামপ্রসাদের তিনশো বছর জন্মবার্ষিকীও উদযাপন হয়েছিল ধুমধাম করে। তারপর থেকেই সাধক কবির ভিটেবাড়িকে কেন্দ্র করে পর্যটন কেন্দ্র গড়ার উদ্যোগ নিয়েছেন স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক সুবোধ অধিকারী।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, রামপ্রসাদের ভিটের মন্দিরটি অনেকটা দক্ষিণেশ্বরের আদলে করার ভাবনা-চিন্তা হয়েছে। মন্দিরের একটি চূড়া তৈরি করা হবে। তবে এর গর্ভগৃহের কোনও পরিবর্তন করা হবে না। সামনের দিকে এবং নাটমন্দিরে ঢোকার গেটের সামনে চার চালার একটি গেট তৈরি হবে। ঘোষপাড়া মেন রোড এবং শিবের গলি মেন রোডের সংযোগস্থলে একটি তোরণও করা হবে। শিবের গলি মেন রোডের দুই পাশ, রামপ্রসাদ গঙ্গাঘাট (গঙ্গার যে ঘাটে তাঁর আরাধ্য মা কালীকে নিয়ে পুজোর পরের দিন বিসর্জন দেওয়ার সময়ে ডুব দিয়েছিলেন রামপ্রসাদ) এবং মন্দির সংলগ্ন অঞ্চল সৌন্দর্যায়ন করা হবে। রামপ্রসাদ ভিটের রান্নাঘর এবং শিবমন্দির সংস্কার করার পাশাপাশি
পার্কিংয়ের জায়গায় উচ্চ বাতিস্তম্ভ বসানো হবে।
বিধায়ক সুবোধ অধিকারী জানিয়েছেন, পর্যটন মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে সাধক কবি রামপ্রসাদ সেনের ভিটে বাড়ি সংস্কার করার আবেদন জানিয়েছিলাম। তারই অনুমোদন মিলেছে। খুব শীঘ্রই শুরু হয়ে যাবে। ২৬ শে জানুয়ারির আগে এই কাজ শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে। হালিশহর পুরসভার চেয়ারম্যান শুভঙ্কর ঘোষ বলেন, বিধায়কের উদ্যোগে হালিশহরবাসীর স্বপ্নপূরণ হতে চলেছে।