গোবিন্দ রায়: চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে দ্বিচারিতা চলছে। এসএলএসটি নিয়ে দায়ের হওয়া আদালত অবমাননা মামলায় বাম-কংগ্রেস-বিজেপি আইনজীবীদের বিঁধলেন সাংসদ তথা হাই কোর্টের আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। এই মামলায় তৃণমূল কংগ্রেসের অন্যতম রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের হয়ে সওয়াল করছেন তিনি। এদিন বিরোধীদের দ্বিচারিতার মুখোশ খুলে দিলেন তিনি। এদিন আদালতে কল্যাণ নিশানা করেন, একসময় যাদের হয়ে মামলা করেছিলেন, মামলা জিতিয়েছিলেন, তাঁরা চাকরি পেতেই তাঁদের বিরুদ্ধেই পালটা মামলা!
কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন জানান, এই চাকরি প্রার্থীদের হয়ে একসময় মামলা করছিলেন ফিরদৌস শামিম। রাজ্য চাকরিপ্রার্থীদের জন্য অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরি করল। তখন এরাই রাজ্যের সেই সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় মামলা করলেন। এদিন কল্যাণের আরও সওয়াল, “আপনি রাজনৈতিক আক্রমণ করবেন, কিন্তু আপনাকে পাল্টা আক্রমণ করা হলে আদালতের নিরাপত্তা চাইবেন, এটা কি হতে পারে?” কল্যাণের কথায়, “আইনজীবী যদি রাজনৈতিক কথা বলেন এবং অন্য প্রতিপক্ষ দলের নেতাদের আক্রমণ করেন, তাহলে কি তিনি আদালতের রক্ষাকবচ চাইতে পারেন?” আদালতে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশ্ন তুলেছেন, “প্রতিদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করছে। রাজনৈতিক দলের মুখপাত্র হয়ে আমি কী করব?”
তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ আদালতকে অসম্মান সমর্থন করেন না। এদিন আদালতে সেই বিষয়টিও স্পষ্ট করে দিয়েছেন আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে তাঁর কথোপকথনের স্ক্রিনশর্টও আদালতে পেশ করা হয়। চাকরিপ্রার্থীদের আইন না ভাঙতে বারবার বলা হয়েছিল। তাহলে কীভাবে আদালত অবমাননা করা হল? সেই প্রশ্ন আদালতে তোলা হয়। এদিন কল্যাণ আরও বলেন, “বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর অবমাননার ক্ষেত্রে আমার কিছু বলার নেই। কিন্তু আইনজীবীদের হেনস্তা কি আদৌ অপরাধমূলক আদালত অবমাননা হতে পারে?”
কিছু আইনজীবী প্রত্যেকদিন মামলার পর রাজনৈতিক বক্তব্য রাখছেন। আন্দোলনকারীদের অবস্থান মঞ্চে গিয়ে রাজনৈতিক বক্তব্য রাখছেন। তাঁদের অবস্থান কী? সেই প্রশ্ন এদিন তুলেছেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। এই প্রসঙ্গে প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রসঙ্গও তোলেন তিনি। কল্যাণ বলেন, “একজন প্রাক্তন বিচারপতি সমস্ত বিশ্বাস এবং আস্থা ভেঙেচুরে দিয়েছেন। চেয়ারে বসে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘কান ধরে তুলে নিয়ে আয়’, এটা একজন বিচারপতির আচরণ?”