• পাটুলি ভাসমান বাজারে বড় বদল আসছে, মাছ-মাংসের দোকান থাকবে না আর নৌকার উপর
    হিন্দুস্তান টাইমস | ৩০ জুন ২০২৫
  • কলকাতার পাটুলি ভাসমান বাজারের আমূল পরিবর্তন আসতে চলেছে। তবে সেই পরিবর্তনের সঙ্গে হারিয়ে যেতে পারে বাজারের পুরনো রূপও। কারণ, এবার আর দোকানদাররা নৌকার উপর বসে বেচাকেনা করতে পারবেন না। তাঁদের জন্য ঝিলের পাড় বরাবর জলের উপর লোহার পাটাতনের উপর তৈরি হবে নতুন দোকান।


    এই সংস্কারের দায়িত্বে রয়েছে কেএমডিএ । সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, যাঁরা এতদিন ভাসমান নৌকায় বসে বাজার চালাচ্ছিলেন, তাঁদের সকলকে তুলে আনা হবে পাড় ঘেঁষা নতুন কাঠামোয়। ফলে ক্রেতারাও আর ভিজে কাঠের সাঁকোতে ওঠানামা না করে সোজা হাঁটতে হাঁটতে দোকানে পৌঁছে যেতে পারবেন। তাহলে কি ভাসমান বাজার আর ভাসমান থাকছে না? সেই প্রশ্নও উঠছে। যদিও কেএমডিএ জানিয়েছে, কিছু নৌকা ভবিষ্যতেও রাখা হবে ওই জলাশয়ে। তবে সেখানে আর সব্জি, মাছ, মাংসের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস নয়। কারণ জলাশয়ে আবর্জনা হচ্ছিল। তাই বাংলার হস্তশিল্প, খাবারদাবার ও হ্যান্ডলুম পণ্য নিয়ে সরকারি ব্র্যান্ডের দোকান খোলা হতে পারে। যেমন তন্তুজ, শাড়ি, ডোকরা, মুখোশ, বিভিন্ন খাদ্যপণ্য সহ বাংলার বিভিন্ন হস্তশিল্প সামগ্রীর সরকারি ব্র্যান্ডের দোকান চালু করা হতে পারে নৌকায়। তাছাড়াও ক্যাফে চালুর পরিকল্পনা আছে।

    উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে যাত্রা শুরু হয়েছিল পাটুলি ভাসমান বাজারের। দু’টি ঝিল একত্র করে তৈরি হয়েছিল এই বাজার। কাঠের রাস্তা, সাঁকো আর ১১২টি নৌকার উপরে প্রায় ২০০টি দোকান চালু হয়েছিল সেবার। সব মিলিয়ে খরচ হয়েছিল প্রায় ১০ কোটি টাকা। তার মধ্যে ৪ কোটি খরচ হয়েছিল নিকাশি ব্যবস্থার উন্নয়নে। চালু হওয়ার পর প্রথমদিকে বাজার জনপ্রিয়ও হয়েছিল। কিন্তু ২০২০ সালে ঘূর্ণিঝড় আমফানে ক্ষতিগ্রস্ত হয় বাজার। অধিকাংশ নৌকা ভেঙে যায়, ব্যবসা বন্ধ হয়ে যায় প্রায় ৯০ শতাংশ দোকানের। পরে দু’দফায় সংস্কার করা হয় প্রথমে ৫৭টি, পরে প্রায় ১০০টি নৌকা বাজারে ফেরে। তাতে ফের কিছুটা চাঙ্গা হয় বেচাকেনা।

    কিন্তু সমস্যা থেকেই যায়। নৌকা মেরামত, রং করা, কাঠের কাজ এসব নিয়মিত করা ছোট ব্যবসাদারদের পক্ষে সম্ভব নয়। আর সেই কারণেই এবার স্থায়ী কাঠামো বানিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। কেএমডিএ জানিয়েছে, এই নতুন দোকান ঘর তৈরি করতে খরচ হবে প্রায় ২ কোটি ৯১ লক্ষ টাকা। এই সংস্কারের পাশাপাশি, বাইপাসের দিক থেকে বাজারের ভেতরের দৃশ্য যেন বাইরে না দেখা যায়, সে দিকেও নজর দিচ্ছে কেএমডিএ। পরিকল্পনা রয়েছে, বাজার ঘিরে লাগানো হবে বিশেষ ধরনের শিট, যার উপর আঁকা থাকবে কলকাতার স্কাইলাইনের নকশা। স্থানীয় কাউন্সিলর বাপ্পাদিত্য দাশগুপ্ত বলছেন, এই বাজারকে ঘিরে সরকারের বড় পরিকল্পনা রয়েছে। শুধু ব্যবসা নয়, এই জায়গাকে আরও সাজিয়ে তুলতে চায় কেএমডিএ।
  • Link to this news (হিন্দুস্তান টাইমস)