আজকাল ওয়েবডেস্ক: মুর্শিদাবাদ জেলার বেলডাঙা থানা এলাকায় ভারত সেবাশ্রম সংঘের দায়িত্বপ্রাপ্ত মহারাজ তথা ২০২৫ সালের অন্যতম পদ্মশ্রী প্রাপক কার্তিক মহারাজের বিরুদ্ধে গত বৃহস্পতিবার দায়ের হওয়া ধর্ষণের মামলায় তদন্তের স্বার্থে মঙ্গলবার তাঁকে সশরীরে নবগ্রাম থানায় হাজির হওয়ার নির্দেশ দিল পুলিশ।
সোমবার সকালে বেলডাঙা থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক শমিত তালুকদার বেলডাঙা ভারত সেবাশ্রম সংঘের আশ্রমে গিয়ে সেখানকার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিকদের হাতে নবগ্রাম থানার নোটিশটি তুলে দেন। তবে বেলডাঙা থানার আধিকারিকরা যখন নোটিশটি পৌঁছে দিতে আশ্রমে গিয়েছিলেন সেই সময় স্বামী প্রদীপ্তানন্দজি ওরফে কার্তিক মহারাজ আশ্রমে ছিলেন না।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে , তাঁর পরিবর্তে আশ্রমের অন্যতম দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক স্বামী অনির্বাণানন্দ সাক্ষর করে পুলিশের নোটিশটি গ্রহণ করেছেন।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার মুর্শিদাবাদ পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (লালবাগ) রাসপ্রীত সিং জানিয়েছিলেন, 'চাকরি দেওয়ার অছিলায় এক মহিলাকে ধর্ষণ করার অভিযোগে কার্তিক মহারাজের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট ধারায় এফআইআর রুজু করা হয়েছে এবং তদন্ত চলছে।' গত ২৬ জুন নবগ্রাম থানায় এক মহিলা লিখিত অভিযোগ করে দাবি করেন ২০১২-১৩ সালে ভারত সেবাশ্রম সংঘ পরিচালিত একটি আদিবাসী স্কুলে চাকরি দেওয়ার অছিলায় কার্তিক মহারাজ তাঁকে একাধিকবার ধর্ষণ করেন। এর ফলে ২০১৩ সালের জুন মাস নাগাদ তিনি গর্ভবতী হয়ে পড়েন এবং ওই সময় কার্তিক মহারাজ তাঁকে জোর করে গর্ভপাত করতে বাধ্য করেছিলেন। জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানান, ওই মহিলার লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে ইতিমধ্যে নবগ্রাম থানার পুলিশ আইপিসি-র ৩৭৬(২)(কে), ৩১৩ ,৪১৭ এবং ৫০৬ ধারায় মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে।
বেলডাঙা থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক নবগ্রাম থানার নোটিশটি ভারত সেবাশ্রম সংঘের বেলডাঙা কার্যালয়ে পৌঁছে দেওয়ার পর বলেন ,'নবগ্রাম থানায় কার্তিক মহারাজের বিরুদ্ধে যে লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে সেই মামলায় তদন্তকারী আধিকারিকের কাছে মঙ্গলবার সশরীরে হাজিরা দেওয়ার জন্য তাঁকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই নোটিশই আজ বেলডাঙা থানার তরফ থেকে ভারত সেবাশ্রম সংঘে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। '
ওই আধিকারিকের কথায়,'কার্তিক মহারাজ আশ্রমে না থাকার জন্য নোটিশটি তাঁর হাতে দেওয়া যায়নি। ওঁর পরিবর্তে আশ্রমের যিনি দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকের হাতে নোটিশটি তুলে দেওয়া হয়েছে।' অন্যদিকে নোটিশটি গ্রহণ করার পর স্বামী অনির্বাণানন্দ জানান, 'একটি মামলার তদন্তে সহযোগিতা করার জন্য কার্তিক মহারাজকে পুলিশের তরফ থেকে নোটিশ দেওয়া হয়েছে। তবে এই মুহূর্তে তিনি আশ্রমে নেই।' এর বেশি তিনি কিছু বলতে রাজি হননি।