• থিওসফিক্যাল সোসাইটিতে বন্ধ প্ল্যানচেট, পূর্বপুরুষদের ‘ডাকা’র অনুরোধে বিরক্ত কর্তারা!
    প্রতিদিন | ০১ জুলাই ২০২৫
  • অভিরূপ দাস: যে ঘরে এসেছিলেন ছত্রপতি শিবাজির আত্মা। সেখানেই পরলোকগত পরিজনকে ডাকতে চান তাঁর কুটুম্ব-স্বজন। প্রার্থনা একাধিক।
    বয়সজনিত কারণে অকস্মাৎ মারা গিয়েছেন দাদু। ভাগ্যহীনা নাতনির বক্তব্য, “অনেক কথা বলে যেতে পারেননি। একটু সাহায্য করুন। সে কথা জানতে চাই।”
    স্বজন হারানো পরিবারবর্গের ভিড় কলেজ স্কোয়ারে বঙ্কিম চ্যাটার্জি স্ট্রিটে দ্য বেঙ্গল থিওসফিকাল সোসাইটিতে। সংগঠনের অ্যাসোসিয়েট মেম্বার জয়শ্রী দাসের কথায়, “ফি সপ্তাহে কেউ না কেউ আসছেন। সকলকেই আমরা বলি এখানে এসে কোনও লাভ নেই। আমরা এখন প্ল্যানচেট করি না। যদি সত্যিই জানতে চান প্রয়াত প্রিয়জনের কথা, একান্তে ধ্যানে বসুন। মনঃসংযোগ করতে পারলে সেখান থেকেই উত্তর পাবেন।”

    কেন এত ভিড় ৪/৩ এ বঙ্কিম চ্যাটার্জি স্ট্রিটের ঠিকানায়? নিচের বই-ঘর পেরিয়ে মান্ধাতার আমলের সিঁড়ি দিয়ে উঠে গেলে যে হলঘর। সেখানেই তো প্ল্যানচেটে বসেছিলেন খোদ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। পুত্র শমীন্দ্রনাথের আত্মাকে নামিয়ে এনেছিলেন।

    ১১৬ বছর আগে প্রখ্যাত আইনজীবী সৌরীন্দ্রমোহন মুখোপাধ্যায়ও নিয়মিত ঘর অন্ধকার করে প্ল্যানচেট করতেন এখানে। কথায় বলে তাঁর প্ল্যানচেটে এসেছিলেন খোদ ছত্রপতি শিবাজি। সেসব গল্প লোকমুখে ফেরে। যে কারণে প্রয়াত স্বজনদের সঙ্গে কথা বলতে অনেকেরই ভরসা বেঙ্গল থিওসফিকাল সোসাইটি।

    ১৮৭৫-এ আমেরিকায় এই সোসাইটি প্রতিষ্ঠা করেন দুই পরলোকবাদী হেলেনা পেত্রোভনা ব্লাভাটস্কি, কর্নেল হেনরি অলকট। দুই পরলোকবাদীর মৃত্যুর পর থিওসফিকাল সোসাইটির সভাপতি হন অ্যানি বেসান্ত। পরলোকচর্চায় তিনিও অত্যন্ত সুপরিচিত। ১৮৮২ সালে তাঁর উদ্যোগে কলকাতায় গড়ে ওঠে এই শাখা। কলকাতায় যে ঘরে অ্যানি বেসান্ত থাকতেন তা এখনও বিরাজমান। একসময় এই সমিতির পরিচালনায় যুক্ত ছিলেন রবীন্দ্রনাথের দাদা দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুর, দিদি স্বর্ণকুমারী। দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলায় প্রেতচর্চায় চর্চিত নাম।
  • Link to this news (প্রতিদিন)