নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: দু’জনেরই পাহাড়ে চড়ার নেশা। পাহাড়ে চড়তে চড়তেই তাঁদের মন দেওয়া-নেওয়া। তারপর সাতপাকে বাঁধা পড়া। দু’মাস হল বিয়ে হয়েছে আলিপুরদুয়ারের সুস্মিতা সরকার ও সায়ন ঘোষের। এখনও হানিমুনে যাওয়া হয়নি। তেমন কোনও পরিকল্পনাও নেই। বরং বিয়ের আগে থেকে দু’জনে ঠিক করে রেখেছিলেন, আর পাঁচজন তো বিয়ের পর পছন্দের জায়গায় হানিমুনে যান, কিন্তু তাঁদের প্রথম ‘প্রেম’ পাহাড়। ফলে বিয়ের পর তাঁরা যাবেন কঠিন কোনও পর্বত অভিযানে। জয় করে ফিরবেন দুর্গম শৃঙ্গ। সেই মতো উত্তরের আরও দশ অভিযাত্রীর সঙ্গে আজ, মঙ্গলবার লাদাখ হিমালয়ের পোলোগঙ্কা শৃঙ্গ অভিযানে রওনা দিচ্ছেন সায়ন-সুস্মিতা। সোমবার জলপাইগুড়িতে অভিযানের ফ্ল্যাগ অফ হয়। অভিযাত্রীদের শুভেচ্ছা জানানোর পাশাপাশি অভিযানের ফ্ল্যাগ অফ করেন হিমালয়ান মাউন্টেনিয়ারিং ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ রজনীশ জোশি। বাকি অভিযাত্রীদের সঙ্গে সেখানে হাজির ছিলেন নয়া দম্পতি সায়ন ও সুস্মিতা।
দার্জিলিং হিমালয়ান মাউন্টেনিয়ারিং থেকে পর্বতারোহণের প্রশিক্ষণ নিয়েছেন সায়ন। এর আগে শামিল হয়েছেন একাধিক শৃঙ্গ জয়ের অভিযানে। অন্যদিকে, সুস্মিতা এর আগে সাড়ে ১২ হাজার ফুট উঁচু কেদারকণ্ঠ শৃঙ্গ অভিযান করেছেন। তবে এবারের অভিযান তাঁর কাছে একেবারে অন্যরকম। লাদাখ হিমালয়ের ২০ হাজার ৯৬০ ফুট উঁচুতে অবস্থিত পোলোগঙ্কা। তাছাড়া অভিযানের রুট অত্যন্ত দুর্গম। অক্সিজেনের অভাব তো আছেই। সঙ্গে প্রচণ্ড ঠান্ডা এবং শৃঙ্গপথে পাহাড় থেকে আলগা পাথর গড়িয়ে আসার আশঙ্কাও রয়েছে। তবে সমস্ত প্রতিকূলতাকে জয় করে শৃঙ্গে পৌঁছনোকেই ‘পাখির চোখ’ করেছেন সুস্মিতা।
এদিন সুস্মিতা বলেন, পাহাড়ে চড়তে গিয়েই সায়নের সঙ্গে আলাপ। ভালোলাগা। ২২ এপ্রিল বিয়ে করেছি। আগে থেকেই ঠিক করে রেখেছিলাম, বিয়ের পর সবাই হানিমুনে যায়। কিন্তু আমরা যাব না। পরিবর্তে দুর্গম শৃঙ্গ জয় করে ফিরব। সুস্মিতার কথায় সায় দিয়েছেন সায়ন। বলেন, আমাদের ইচ্ছেকে উৎসাহ জুগিয়েছেন দুই পরিবারের সদস্যরা। তাঁদের সহযোগিতা না থাকলে এটা সম্ভব হতো না।
উত্তরবঙ্গ থেকে এবারই প্রথম অ্যাডভেঞ্চার ক্লাবগুলি যৌথভাবে পর্বতারোহণে যাচ্ছে। আলিপুরদুয়ার থেকে শিলিগুড়ি, এই অভিযানে শামিল হয়েছে ছ’টি অ্যাডভেঞ্চার ক্লাব। সুস্মিতা ছাড়াও অভিযাত্রী দলে আছেন শিলিগুড়ির কলেজ ছাত্রী পিয়ালি বিশ্বাস। অভিযানের টিম লিডার ভাস্কর দাস।