• রাবার স্ট্যাম্প বানিয়ে বিতর্কে অস্থায়ী কর্মী
    বর্তমান | ০১ জুলাই ২০২৫
  • সঞ্জিত সেনগুপ্ত, শিলিগুড়ি: ফের বিতর্কে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার স্পেশালিটি ব্লকের ‘মিঠু স্যার’। কিছুদিন আগেই অভিযোগ উঠেছিল, দ্রুত পরিষেবা পাইয়ে দেওয়ার জন্য হাসপাতালের টিকিটে সুপারিশ লিখে রোগীদের তিনি বলতেন, ডাক্তারকে বলবেন মিঠু স্যার পাঠিয়েছেন। এই কাজের জন্য আগেই বিতর্কে জড়িয়েছিলেন চুক্তির ভিত্তিতে নিযুক্ত নিরাপত্তা ও সাফাই কর্মী নিয়োগের ঠিকাদার সংস্থার সুপারভাইজার মিঠু সাহা। এবার আরও বড় বিতর্কে জড়ালেন হাসপাতালের ডিমান্ড বুকে জিনিস কেনার জন্য সরাসরি প্রস্তাব পাঠিয়ে। ফেসিলিটি ম্যানেজার, সুপার স্পেশালিটি ব্লক, এনবিএমসিএইচ লেখা রাবার স্ট্যাম্পও বানিয়ে নিয়েছেন তিনি। আলমারি, সেল্ফ সহ বেশকিছু দামি জিনিস কেনার জন্য ডিমান্ড বুকে রাবার স্ট্যাম্প মেরে সইও করেছেন মিঠু স্যার। 

    হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, মিঠু সাহা হাসপাতালের অস্থায়ী কর্মী। কাজেই তাঁর এসব করার এক্তিয়ার নেই। মেডিক্যাল সূত্রেই জানা গিয়েছে, সুপার স্পেশালিটি ব্লকের জন্য দীর্ঘদিন ধরে তিনি এভাবে ডিমান্ড বুকে রাবার স্ট্যাম্প মেরে সই করে হাসপাতালের স্থায়ী সম্পত্তি কিনিয়েছেন। এই নিয়ম বিরুদ্ধ কাজ ধরেন হাসপাতালের অ্যাকাউন্টস অফিসার মহম্মদ মুর্তুজ হোসেন। তিনি বলেন, সম্প্রতি মিঠু সাহা নামে সুপার স্পেশালিটি ব্লকের ঠিকাদার সংস্থার সুপারভাইজার ডিমান্ড বুকে হাসপাতালের ফেসিলিটি ম্যানেজারের রবার স্ট্যাম্প লাগিয়ে সই করে বেশকিছু দামি জিনিস কেনার জন্য আবেদন করেন। এব্যাপারে তাঁর কোনও এক্তিয়ারও নেই। হাসপাতালে কোনও কর্মী না হয়ে তিনি কীভাবে এই সাহস দেখালেন বুঝতে পারছি না। 

    কী বলছেন মিঠু সাহা? যদিও প্রথমে বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি। বলেন,আমি রিসিভ করি। কিন্তু ডিমান্ড বুকে রাবার স্ট্যাম্প ও সইয়ের বিষয়টি তুলে ধরতেই মিঠু কার্যত ভেঙে পড়েন। বলেন, আমার ভুল হয়েছে। জানতাম না। ওই রাবার স্ট্যাম্পে ঠিকাদার সংস্থার নাম থাকা উচিত ছিল বলেও তিনি স্বীকার করেন। তাঁর বক্তব্য, রাবার স্ট্যাম্পটি হাসপাতাল থেকেই আমাকে বানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। 

    আর এখানেই প্রশ্ন হাসপাতাল থেকে কে বা কারা এই রাবার স্ট্যাম্প বানিয়ে দিয়েছিলেন? ডিমান্ড বুকে সকলের নজর এড়িয়ে কীভাবে জিনিস কেনা হচ্ছিল? তাহলে কী এর পিছনে অন্য কোনও রহস্য রয়েছে। মিঠু সাহাকে সামনে রেখে কেউ কেউ কী ব্যক্তিগত স্বার্থ চরিতার্থ করতেই এই কাজকে প্রশ্রয় দিয়েছেন? অ্যাকাউন্টস অফিসার বলেন, গোটা বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানাচ্ছি। পাশাপাশি ডিমান্ড বুকে এই মিঠু সাহার চাহিদা অনুযায়ী এর আগে কী কী জিনিস কেনা হয়েছে এবং সেগুলি কী অবস্থায় কোথায় রয়েছে তার অডিট করার কথাও ভাবা হচ্ছে। হাসপাতালের সুপার ডাঃ সঞ্জয় মল্লিক বলেন, মিঠু সাহার একাজ করার কোনও এক্তিয়ারই নেই। তিনি কেন এক্তিয়ারের বাইরে গিয়ে এটা করলেন তা জানতে চাওয়া হবে। বিতর্কিত সেই স্ট্যাম্প ও সই। - 

    নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)