• নবদ্বীপের নন্দীপাড়ায় প্রাচীন পলকেশ্বর শিব মন্দিরে সোনার চাঁদ, রুপোর বেলপাতা চুরি, চাঞ্চল্য এলাকায়
    বর্তমান | ০১ জুলাই ২০২৫
  • সংবাদদাতা, নবদ্বীপ: নবদ্বীপের নন্দীপাড়ায় প্রাচীন পলকেশ্বর শিবমন্দিরে চুরির ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। সোমবার সকালে মন্দির কমিটির এক সদস্য দেখতে পান, শিবলিঙ্গের মাথার সোনার চাঁদ এবং রুপোর বেলপাতা চুরি গিয়েছে। চুরির ঘটনা জানাজানি হতেই সকাল থেকে স্থানীয় লোকজন মন্দিরে ভিড় করতে শুরু করেন। নবদ্বীপ থানায় খবর দেওয়া হয়। পুলিস চুরির ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।

    নবদ্বীপ পুরসভার ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের নন্দীপাড়া রোডে এই প্রাচীন পলকেশ্বর শিব মন্দিরটি রয়েছে। প্রতিদিনের মতো এদিন সকালে স্থানীয় এক যুবক মন্দির পরিষ্কার করতে আসেন। যথারীতি মন্দির পরিষ্কার করে তিনি বাড়ি চলে যান। পরে কমিটির এক সদস্য মন্দিরে এসে দেখেন, শিবের মাথায় সোনার চাঁদ এবং রুপোর বেলপাতা নেই।

    কমিটির সদস্য তথা স্থানীয় বাসিন্দা সুকান্ত গুঁই বলেন, সকাল ৭টায় বাবাকে প্রণাম করতে মন্দিরে যাই। প্রতিদিন যে ছেলেটি মন্দির পরিষ্কার করে, সে সেইসময় কাজ সেরে চলে যায়। তারপর খেয়াল করি, শিব ঠাকুরের মাথায় তিন গ্রাম ওজনের সোনার চাঁদ এবং ২৪ গ্রাম ওজনের রুপোর বেলপাতাটা নেই। যে ছেলেটি মন্দির পরিষ্কার করে, সে এই পাড়ারই বাসিন্দা। ও বহুদিন ধরেই পরিষ্কারের কাজ করছে। স্থানীয় বাসিন্দা মন্টু মল্লিক বলেন, কমিটির সদস্যদের কাছ থেকে বিষয়টি জানতে পেরে আমিও শিব মন্দিরে যাই। তারপর পুলিসকে খবর দেওয়া হয়।

    পলকেশ্বর মন্দির কমিটির সভাপতি নবেন্দু রাঢ়ী বলেন, এই শিব মন্দিরটি দেড়-দু’শো বছরের প্রাচীন। মন্দির ঘিরে এলাকার মানুষের ধর্মীয় ভাবাবেগ জড়িয়ে আছে। এদিন সকালবেলায় প্রতিদিনের মতো মন্দির পরিষ্কার করতে এসে ছেলেটি হারিয়ে যাওয়ার বিষয়টি খেয়াল করেনি। পরিষ্কার করার পর মন্দিরের পিছনদিকে জল খেতে গিয়েছিল। তারপর সে মন্দিরের কাজ শেষ করে বাড়ি চলে যায়। আমরা বিষয়টি থানায় জানিয়েছি। পুলিস এসে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।

    নবদ্বীপ গৌড়ীয় বৈষ্ণব সমাজের কার্যকরী সভাপতি তথা গৌরাঙ্গ মহাপ্রভু মন্দিরের অন্যতম সেবায়েত সুদিন গোস্বামী। তিনি বলেন, নবদ্বীপের মন্দিরগুলিতে নিজস্ব সিসি ক্যামেরার দ্বারা নজরদারি না করলে চুরির হাত থেকে বাঁচা কঠিন। আমাদের নবদ্বীপে গৌরাঙ্গ মহাপ্রভুর টোল মন্দির থেকে প্রায় দু’বছর আগে বাসনপত্র চুরি যায়। তারপর আমরা মন্দিরে সিসি ক্যামেরা বসাই। প্রশাসনের তরফে মন্দিরে সিসি ক্যামেরা লাগাতে বলা হয়েছিল। সেক্ষেত্রে চুরি হলে ক্লু পাওয়া যাবে। এখানে সব থেকে বড় বিষয় হচ্ছে, মন্দিরে বিভিন্ন ধরনের মানুষ আসছে। এর মধ্যে যাকে সেবার কাজে নিযুক্ত করব, তার ঠিকানা, আধার কার্ড এগুলি যাচাই করা দরকার। নবদ্বীপ প্রশাসনের তরফ থেকেও বিভিন্ন মন্দিরে মাসে অন্ততপক্ষে একবার করে খবর নেওয়া উচিত। মন্দির কর্তৃপক্ষ কাউকে নিয়োগ করলে সেই বিষয়টি নবদ্বীপ থানাকে জানানো উচিত।  নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)