• কেন্দ্রের অধীন সংস্থায় চাকরির টোপ, অফিস খুলে প্রতারণা
    বর্তমান | ০১ জুলাই ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: ‘প্রশিক্ষণ শেষে কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রিত সংস্থায় চাকরির সুযোগ’। এজাতীয় বিজ্ঞাপন হামেশাই চোখে পড়ে। কখনও লিফলেটের মাধ্যমে আবার কখনও সোশ্যাল মিডিয়ায় বিজ্ঞাপন ছড়িয়ে দেওয়া হয়। যোগাযোগের জন্য নির্দিষ্ট ঠিকানা বা ফোন নম্বর উল্লেখ থাকে। চাকরি পাওয়ার আশায় বেকার যুবক-যুবতীদের ভিড় উপচে পড়ে। প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য ২০-২৫ হাজার টাকা দাবি করা হয়। কিন্তু প্রশিক্ষণ শেষে আর চাকরি হয় না। সোমবার এমনই অভিযোগ তুলে বর্ধমানের ঢলদিঘির কাছে একটি প্রশিক্ষণ সেন্টারের সামনে বিক্ষোভ দেখানো হয়। বিক্ষোভকারীদের দাবি, প্রশিক্ষণের জন্য ২১হাজার টাকা নেওয়া হলেও চাকরি হয়নি। মাসের পর মাস কেটে গিয়েছে। কোনও উপায় না থাকায় এদিন বিক্ষোভ দেখানো হয়। বর্ধমান থানার পুলিস এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়। একজনকে আটক করা হয়। পুলিস জানিয়েছে, লিখিত অভিযোগ হলে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। 

    প্রতারিত আরামবাগের এক যুবতী বলেন, চাকরি পাওয়ার আশায় পূর্ব বর্ধমান, হুগলি সহ বিভিন্ন জেলার বাসিন্দারা প্রশিক্ষণ নিতে শুরু করেন। কারও কাছে ২০ হাজার আবার কারও কাছে ২৫হাজার টাকা নেওয়া হয়। প্রথমে বলা হয়েছিল, তিন মাসের প্রশিক্ষণ শেষে চাকরি পাইয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু তা হয়নি। বিজেপির যুব মোর্চার নেতা পিন্টু সাম বলেন, আমার এক আত্মীয় টাকা জমা দিয়েছিল। প্রশিক্ষণ নেওয়ার পরও চাকরি না হওয়ায় এদিন ওই সংস্থার অফিসে গিয়েছিলাম। ওরা সদুত্তর দিতে পারেনি। আমার ওই আত্মীয় এদিন বিক্ষোভে শামিল হয়েছিল। 

    স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, এরকম ঘটনা হামেশাই ঘটছে। বেকার যুবতীদের নিয়ে ছেলেখেলা করা হচ্ছে। কয়েকদিন আগে গৃহবধূদের চাকরির আশ্বাস দিয়ে অন্য এক জায়গায় আবেদনপত্র জমা নেওয়া হয়। আবেদনপত্রের সঙ্গে ৫০০টাকা ফি জমা করতে হয়। তারপর শুরু হয় প্রশিক্ষণ। তারপর আর কারও চাকরি হয়নি। কয়েকজনকে ইন্সুরেন্সে এজেন্টের কাজ পাইয়ে দেওয়া হয়। কয়েকদিন কাজ করার পর তাঁরা ছেড়ে দেন। 

    বর্ধমান পুরসভার চেয়ারম্যান পরেশ সরকার বলেন, অনেকেই বাইরে থেকে এসে বৈধ কোনও নথি ছাড়াই অফিস খুলে বসছে। পুরসভার কাছে কোনও তথ্য থাকছে না। আমরা মাঝেমধ্যে অভিযান চালাই। যাদের কাছে ট্রেড লাইসেন্স নেই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জেলা পুলিসের এক আধিকারিক বলেন, কোথাও টাকা দেওয়ার আগে যাচাই করা দরকার। পুলিস অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নেয়। প্রতরণার অভিযোগে আগে অনেকেই গ্রেপ্তার হয়েছে। অনেক সময় যুবক-যুবতীরা প্রতারিত হওয়ার পরও অভিযোগ জানায় না। সেক্ষেত্রে ব্যবস্থা নিতে সমস্যা হয়। এদিন বিষয়টি জানার পরই পুলিস ঢলদিঘি এলাকায় গিয়ে তল্লাশি চালায়।
  • Link to this news (বর্তমান)