মুরারইয়ে রেলের উচ্ছেদ অভিযান আপাতত স্থগিত, ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত সময় দিল রেল
বর্তমান | ০১ জুলাই ২০২৫
সংবাদদাতা, রামপুরহাট: বাসিন্দাদের আবেদন এবং স্থানীয় বিধায়ক থেকে তৃণমূল নেতাদের তৎপরতায় আপাতত উচ্ছেদ অভিযান স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিল রেল। সোমবারই মুরারই স্টেশন সংলগ্ন রেলের জায়গা খালি করার কথা ছিল। তার আগে রবিবার পঞ্চায়েত সমিতির অফিসে রেলপুলিস ও আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনায় বসে তৃণমূল নেতৃত্ব। উপস্থিত ছিলেন বিডিও, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ও বস্তিবাসীদের প্রতিনিধি। অবশেষে আরও কিছুটা সময় দিয়ে আপাতত আগামী ৩১অক্টোবর পর্যন্ত উচ্ছেদ অভিযান স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেয় রেল কর্তৃপক্ষ।
মুরারই স্টেশনের সন্নিকটে কলপুকুর রেল কলোনিতে গত ৩০বছরেরও বেশি সময় ধরে ছিটেবেড়া তৈরি করে বসবাস করছে প্রায় ১৩০টি পরিবার। কেউ পরিচারিকার কাজ করেন। কেউ আবার পাথর খাদানের শ্রমিক। কেউ স্থানীয় দোকানে দিনমজুরের কাজ করে কোনরকমে দিনগুজরান করেন। দিনকয়েক আগে রেলের পক্ষ থেকে বস্তিবাসীদের নোটিস দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়, আগামী ৩০জুনের মধ্যে রেলের জায়গা খালি করে দিতে হবে। নচেত উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে। নোটিস দেখে মাথায় হাত পড়ে চাঁদ শেখ, নূর আলম শেখ, শ্যামলী সিংহ, মেরিনা বিবি, সুজাতা সরকারদের। তাঁরা বলেন, বৃষ্টির সময় ছোট সন্তানদের নিয়ে যাব কোথায়? ঘর ভাড়া নিয়ে থাকব তারও উপায় নেই। সামান্য আয়ে সংসার চালানোই দায়, তার উপরে এত ভাড়া কোথায় পাব? নিজের জায়গাও নেই যে সেখানে ত্রিপল টাঙিয়ে থাকব। এই অবস্থায় আশ্রয় চলে গেলে বৃষ্টির মধ্যে খোলা আকাশের নীচে থাকা ছাড়া উপায় থাকবে না। জটিল পবিস্থিতির মধ্যে পড়েছেন এইসমস্ত দুঃস্থ মানুষজন। বস্তিবাসীরা দুর্গাপুজো পর্যন্ত সময় চেয়ে স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক মোশারফ হোসেনের মাধ্যমে ডিআরএমের কাছে গণসাক্ষরিত আবেদন জানান। তারপর থেকেই দুশ্চিন্তায় রাত কাটে বস্তিবাসীদের। এদিকে এদিনই ছিল উচ্ছেদের নির্ধারিত দিন। সেইমতো রেল পুলিস ও কর্তারা মুরারইয়ে পৌঁছে যান। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি থেকে তৃণমূল নেতৃত্ব তাঁদের আলোচনায় বসার জন্য বলেন। সেই মতো পঞ্চায়েত সমিতির অফিসে আলোচনা হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিডিও বীরেন্দর অধিকারী, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বিপ্লব শর্মা, জেলা পরিষদের সদস্য প্রদীপ ভকত, সমিতির কর্মাধ্যক্ষ ফাল্গুনী সিংহ সহ এলাকার মানুষজন। তাঁরা রেলকর্তাদের মানবিকতার দিক থেকে বিচার করার আহ্বান জানিয়ে ছটপুজো পর্যন্ত সময় চান। ছটপুজোর পর তাঁরা নিজে থেকেই সরে যাবেন বলে জানান। অবশেষে রেলকর্তারা ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত উচ্ছেদ অভিযান স্থগিত রাখার কথা জানান। বস্তিবাসীরা নির্দিষ্ট সময়ের আগে সরে যাবেন বলে লিখিত আকারে রেলকে জানান জনপ্রতিনিধিরা। প্রদীপবাবু বলেন, রেলের কাছে ছটপুজো পর্যন্ত সময় চাওয়া হয়েছিল। রেল কর্তৃপক্ষ তাতে সম্মতি দিয়েছে।
বিডিও বলেন, বস্তিবাসী ও এখানকার জনপ্রতিনিধিরা সময় চেয়েছিল। সেইমতো রেল আগামী ৩১অক্টোবর পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে।