নিজস্ব প্রতিনিধি, সিউড়ি: সাইবার প্রতারণার জাল ক্রমশ ছড়াচ্ছে। পুলিসের তরফে সচেতনতার বার্তা সত্ত্বেও প্রতিনিয়ত বহু মানুষ সাইবার প্রতারকদের ফাঁদে পড়ছেন। অ্যাকাউন্ট থেকে খোয়া যাচ্ছে মোটা টাকা। সর্বস্বান্ত হচ্ছেন বহু মানুষ। এই সংক্রান্ত প্রচুর অভিযোগ আসছে। রাজ্যের পাশাপাশি বীরভূম জেলাতেও সাইবার প্রতারণার ঘটনা বেড়েই চলেছে। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, এনসিআরবি রিপোর্ট অনুসারে জেলায় এক বছরের ব্যবধানে সাইবার প্রতারণার ঘটনা ২৫০শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। যা নিয়ে জেলার পুলিস মহল যথেষ্টই উদ্বিগ্ন। প্রতারকরা নিত্যনতুন কৌশলে প্রতারণার ছক কষছে। বহুক্ষেত্রে সাইবার প্রতারকরা সরকারি প্রকল্পকে সামনে রেখে প্রতারণার ফাঁদ পাতে। এক্ষেত্রে অনায়াসেই সাধারণ মানুষ প্রতারকদের ফাঁদে পড়ছেন। জেলার পুলিস সুপার আমনদীপ বলেন, সাইবার প্রতারণা রুখতে নিয়মিত সচেতনতা বৃদ্ধির কাজ জারি রয়েছে। সেইসঙ্গে একাধিক পদক্ষেপও গ্রহণ করা হচ্ছে।
সাইবার প্রতারকদের হাত থেকে আমজনতাকে বাঁচাতে নিয়মিত সচেতনতার পাঠ দেওয়া হচ্ছে। অভিযোগ পেলে প্রতারণার তদন্ত করছে পুলিস। তা সত্ত্বেও নিত্যনতুন কৌশলে প্রতারণার ফাঁদ পাতছে সাইবার অপরাধীরা। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, সাইবার প্রতারকরা সরকারি প্রকল্পগুলিকে টার্গেট করে। নির্দিষ্ট কোনও সরকারি প্রকল্পের আওতায় উপভোক্তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা দেওয়ার কাজ শুরু হলেই সাইবার প্রতারকরা তৎপর হয়ে ওঠে। নির্দিষ্ট প্রকল্পের সুবিধাভোগী উপভোক্তাদের চিহ্নিত করে তাদের প্রতারণার জালে ফাঁসানোর কাজ শুরু হয়। প্রকল্পের উপভোক্তাদের ফোন করে টাকা পাঠাতে সমস্যা হচ্ছে বলে জানাচ্ছে প্রতারকরা। সমস্যা সমাধানের টোপ দিয়ে হোয়াটসঅ্যাপে ভুয়ো অ্যাপের লিঙ্ক পাঠানো হচ্ছে। এরপর সেই অ্যাপে উপভোক্তার ব্যক্তিগত তথ্য আপলোড করতে বলা হয়। সরল বিশ্বাসে টাকা ঢোকার আশায় সাইবার প্রতারকদের ফাঁদে পা দিচ্ছেন অনেকে। তাদের পাঠানো অ্যাপে তথ্য আপলোড করতেই বিপত্তি ঘটে যায়। মূহূর্তের মধ্যে অ্যাকাউন্ট ফাঁকা হয়ে যায়। এক পুলিস কর্তা জানান, পিএম কিষান থেকে শুরু করে জননী সুরক্ষা যোজনা সহ একাধিক সরকারি প্রকল্পকে সামনে রেখে সাইবার প্রতারকরা অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা হাতাচ্ছে।
সাইবার ক্রাইম দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২৩ সালের জুলাই থেকে ২০২৪সালের জুন পর্যন্ত যে সংখ্যক সাইবার প্রতারণার অভিযোগ এসেছে তার পরের এক বছরে ২৫০শতাংশ বেড়েছে। ২০২৪ সালের জুলাই থেকে ২০২৫সালের জুন মাস পর্যন্ত ওই অভিযোগ জমা হয়েছে। সাইবার ক্রাইম বিভাগের কর্তাদের কথায়, প্রতারকরা প্রতিনিয়ত কৌশল বদলাচ্ছে। তাদের হাত থেকে বাঁচতে ব্যক্তিগত তথ্য যেমন জন্মতারিখ, মোবাইল নম্বর সোশ্যাল মিডিয়ায় না দিতে পুলিসের তরফে আবেদন জানানো হচ্ছে। সেইসঙ্গে অনলাইনে টাকা লেনদেনের ক্ষেত্রেও সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।