স্বামীকে ছেড়ে প্রেমিকের সঙ্গেই থাকতে চান গৃহবধূ, সালিশির জন্য হাজির থানায়
বর্তমান | ০১ জুলাই ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, তমলুক: দুই সন্তানের জননী চান প্রেমিকের সঙ্গে থাকতে। কিন্তু পেশায় রাজমিস্ত্রি তাঁর স্বামী স্ত্রীকে ছাড়তে নারাজ। এই অবস্থায় যুবতী কার কাছে থাকবেন, তা ঠিক করার দায়িত্ব এসে পড়ল ভূপতিনগর থানার ঘাড়ে। সোমবার সাত সকালে সালিশির জন্য থানায় হাজির ওই দম্পতি। দাম্পত্য জীবনের এই অদ্ভুত সঙ্কট নিরসনে থানায় বসে সালিশি সভা। ভূপতিনগর থানার ওসি শেখ মহম্মদ মহিউদ্দিন বলেন, ওই গৃহবধূ প্রেমিকের সঙ্গে ঘরবাঁধার পক্ষে। অপরদিকে, স্বামী তাঁকে নিয়ে সংসার করতে চান। দম্পতির দু’টি সন্তান আছে। একটি হাঁটতে শিখেছে, অপরটি মায়ের কোলে। এই সমস্যার সমাধানের উপায় ভেবেই চিন্তায় আকূল তিনি। সাব ইনস্পেক্টর আমিনুল ইসলামের উপস্থিতিতে সালিশি সভায় যুবতী পরিষ্কার জানিয়ে দেন, তিনি স্বামীর সঙ্গে থাকতে চান না। প্রেমিককে তাঁর ভালো লাগে। সুতরাং তাঁকে প্রেমিকের সঙ্গেই থাকতে দেওয়া হোক। ওদিকে স্বামীর দাবি, বধূর সিঁথিতে তিনিই সিঁদুর দিয়েছেন। তাঁদের আইনি বিচ্ছেদও হয়নি। তাই রীতি মেনে স্ত্রীকে তাঁর কাছেই থাকতে হবে।
সোমবার ভোর ৬টায় ভূপতিনগর থানার বায়েন্দা গ্রাম থেকে ওই দম্পতি থানায় হাজির। থানার বাইরে কিছুটা দূরে অপেক্ষা করছিল বধূর প্রেমিক। তিনি অবিবাহিত। ছ’ বছর আগে ওই দম্পতি সাতপাকে বাঁধা পড়ে। দম্পতির দু’টি ছেলে আছে। পেশায় রাজমিস্ত্রি ওই যুবক রোজগারের জন্য সবসময়ে বাড়িতে থাকতে পারেন না। এই সুযোগেই তাঁর স্ত্রী পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। দু’দিন আগে গভীর রাতে প্রেমিকের উপস্থিতিতেই ওই বধূ স্বামীকে ফোন করেন। ফোনে সাফ জানিয়ে দেন, প্রেমিককে তাঁর ভালো লাগে। তিনি প্রেমিককেই বিয়ে করবেন। কারণ, ওই যুবক তাঁকে বেশি সময় দিচ্ছেন। খেয়াল রাখছেন। বিয়ের পর পরই স্বামী এমনটা করলেও তারপর দ্রুত বদলে গিয়েছেন বলে বধূর দাবি।
বধূর স্বামী বাড়ি এসে স্ত্রীকে বোঝানোর চেষ্টা করেন। দুই সন্তানের ভবিষ্যতের কথা ভেবে একত্রে সংসার করার পরামর্শ দেন। কিন্তু, প্রেমিকের ভালোবাসায় হাবুডুবু খাওয়া ওই বধূর কানে সেসব পৌঁছয়নি। তিনি প্রেমিকের সঙ্গে সংসার করতে নাছোড়বান্দা। এই পরিস্থিতিতে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দ্বন্দ্ব প্রকট হয়। সোমবার সকালে তাঁরা থানায় হাজির হন। থানায় সালিশিতে যাতে একতরফা সিদ্ধান্ত না হয় সেজন্য প্রেমিককে সঙ্গে নেন ওই যুবতী। থানায় এসে ওই বধূর স্বামী বলেন, ‘স্ত্রীকে অ্যান্ড্রয়েড ফোন দিয়েছিলাম। সেটাই কাল হল। আমি স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে একসঙ্গে থাকতে চাই। তবে, ভবিষ্যতে স্ত্রীর কাছে ফোন রাখতে চাই না।’
পুলিস জানিয়েছে, পরকীয়া সম্পর্ক এখন সংক্রামক ব্যধির মতো ছড়াচ্ছে। কর্মসূত্রে স্বামী বাইরে থাকার কারণে সম্পর্কে ফাটল তৈরি হচ্ছে। প্রেমিক জোগাড় করে সেই ফাটল বোজানোর কাজ সেরে নিচ্ছেন কিছু বধূ। যে কারণে নাবালিকাদের পাশাপাশি বউ পালানোর ঘটনাও বাড়ছে।