• ফের টানা বৃষ্টি, নতুন করে বন্যা পরিস্থিতি হওয়ার শঙ্কা জেলায়
    বর্তমান | ০১ জুলাই ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, মেদিনীপুর: ঘন ঘন বৃষ্টি। তাতেই ফের বাড়তে শুরু করেছে জলস্তর। তাই সোমবার দুপুরে তড়িঘড়ি বৈঠকে বসল জেলা প্রশাসন। হুল দিবসের অনুষ্ঠান শেষে সেই বৈঠকে যোগ দেন সেচমন্ত্রী মানস ভূঁইয়া। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে কন্ট্রোল রুমে বসেই পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন মন্ত্রী ও প্রশাসনের আধিকারিকরা। জানা গিয়েছে, গত বছর যেখানে ৯৯ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছিল, সেখানে এবছর ২৬০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। ফলে ফের বন্যা পরিস্থিতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। প্রশাসনের আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, রাজ্যের উচ্চপদস্থ কর্তাদের মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রী খোঁজখবর নিচ্ছেন। জল বাড়লে সোমবার রাত থেকেই গ্রামে গ্রামে জল ঢুকে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিচ্ছে। সেই পরিস্থিতি তৈরি হলে রাতেই উদ্ধারকার্যে নামবে প্রশাসন।

    জেলাশাসক খুরশিদ আলি কাদরি বলেন, প্রশাসন সবরকম ভাবে প্রস্তুত। বন্যা পরিস্থিতি হতে পারে, এমন ব্লকগুলোর সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। বিপর্যয় মোকাবিলা দলও তৈরি। 

    সপ্তাহখানেক আগে প্রবল বৃষ্টিপাতে গড়বেতা-১ ও গড়বেতা-২ ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়েছিল। এতে বিপুল ক্ষয়ক্ষতি হয়। তবে এই এলাকা থেকে জল দ্রুত সরে গেলেও ভেসে যায় ঘাটাল মহকুমার একাধিক এলাকা। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বাড়তে থাকে। জানা গিয়েছে, ওই সময়ে প্রায় তিনশো কোটি টাকার বেশি ক্ষতি হয়। তিন হাজারের বেশি বাড়ি ভেঙে যাওয়ায় সমস্যায় পড়ে বহু পরিবার। তবে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মানুষের পাশে দাঁড়ায় জেলা প্রশাসন।

    কিন্তু ঘাটাল মহকুমায় ফের বন্যার ভ্রুকুটি প্রশাসনের আধিকারিকদের কপালে ভাঁজ ফেলেছে। সোমবার বিকেলে তড়িঘড়ি ঘাটাল মহকুমায় বৈঠক করেন মানসবাবু। তিনি বলেন, সোমবার বেলা ১১টা পর্যন্ত সব ঠিকঠাক ছিল। কিন্তু তারপরই ক্ষীরপাইয়ে কেঠিয়া নদীতে জল বাড়তে শুরু করেছে। সেজন্যই ডিএম অফিসে মিটিং করেই তড়িঘড়ি করে ঘাটালে আসার সিদ্ধান্ত নিলাম। এসডিআরএফ (রাজ্য দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনী) এনডিআরএফ (জাতীয় দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনী) নিয়ে রেডি হয়ে যাচ্ছি। সেই সঙ্গে অন্যান্য দপ্তরকেও প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।

    শনিবার ও রবিবারের নিম্নচাপের জেরে ব্যাপক বৃষ্টিপাতের ফলে এদিন দুপুর থেকে ক্ষীরপাইয়ের কেঠিয়া এবং দাসপুর-১ ব্লকে গাদিঘাট এলাকায় জলস্তর বাড়তে শুরু করেছে। সাধারণ মানুষের উদ্দেশ্যে মন্ত্রী আশ্বাস দিয়ে বলেন, অযথা টেনশনের কারণ নেই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে আমরা পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছি।

    এদিন দুপুর থেকে ঘাটাল মহকুমার বিভিন্ন নদীতে জল বেড়ে যাওয়ার কারণে বিশেষ করে চন্দ্রকোণা-২ ব্লকের বাসিন্দাদের ঘুম ছুটে গিয়েছে। চন্দ্রকোণা-২ পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ জগজিৎ সরকার বলেন, আমাদের ব্লকে নদী ও বড় খাল মিলিয়ে ২৩টি জায়গায় কয়েক দিন আগেই বাঁধ ভেঙে গিয়েছে। সেগুলি এখনও সংস্কারের সুযোগ হয়নি। তার উপর এই মুহূর্তে নদীর জল বাড়লে বহু মানুষ সমস্যায় পড়ে যাবেন।  ঘাটাল মহকুমা শাসকের দপ্তরে বৈঠকে সেচমন্ত্রী মানস ভূঁইয়া।-নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)