সিম পোর্ট করানোর নামে নথি হাতিয়ে বারাসতে ধৃত আরও ২
বর্তমান | ০১ জুলাই ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাসত: ছাতা খাটিয়ে অস্থায়ী স্টল তৈরি করে সিম কার্ড পোর্ট করানো চলছিল। নথি জমা নেওয়া এবং বায়োমেট্রিক্স করানোও হচ্ছিল যথারীতি। এসব নথির ভিত্তিতে যে সিম ইস্যু করা হতো, তা পোর্ট করাতে আসা গ্রাহককে দেওয়া হতো না। সেই সিম সরাসরি চলে যাচ্ছিল প্রতারকদের হাতে। গ্রাহকদের ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছিল একটি অকেজো বা বাতিল সিম। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চালিয়ে সাইফুল্লা গাজি নামে এই চক্রের একজনকে আগেই গ্রেপ্তার করে পুলিস। তারপর এই চক্রে জড়িত অভিযোগে বকুল বিশ্বাস এবং সামিরুল হক নামে দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিস জানিয়েছে, ধৃতদের বাড়ি অশোকনগরে। তাদের কাছ থেকে ২২ টি সিম কার্ড সহ তিনটি মোবাইল উদ্ধার করেছে পুলিস। প্রতারণা চক্রে আর কেউ যুক্ত আছে কি না, খতিয়ে দেখছে বারাসত সাইবার থানা।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, বারাসত, আমডাঙা এবং অশোকনগর এলাকায় প্রতারণার এই চক্রটি বেশ সক্রিয় হয়ে উঠেছে সম্প্রতি। গ্রাম ও শহর এলাকায় অস্থায়ীভাবে ছাতা খাটিয়ে কিংবা টোটোয় ঘুরে ঘুরে এই চক্রে জড়িতরা সিম কার্ড বিক্রি করে। চালু সিম অন্য কোম্পানিতে পোর্ট করিয়ে নিলে টকটাইম, প্রতিদিনের ইন্টারনেট ডেটা বেশি পাওয়ার সুবিধা সহ বিভিন্ন ধরনের লোভনীয় অফার গ্রাহকদের দিয়ে থাকে এই অভিযুক্তরা। সিম পোর্ট করিয়ে দেওয়ার কথা বলে এরা গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় নথি সংগ্রহ করত। গ্রাহকদের বায়োমেট্রিক্সও নেওয়া হতো। নতুন সিম কার্ড তুলে নিত প্রতারকরা। এদিকে, নতুন সিম চালু না হলে গ্রাহকরা ছুটে আসছিলেন ওই অস্থায়ী স্টলে। কখনও তাদের বলা হতো, আধারের ছবির সঙ্গে মুখের ছবি মিলছে না। আবার কখনও ইন্টারনেটের সমস্যার কথা বলে গ্রাহকদের ফিরিয়ে দেওয়া হতো। ততক্ষণে অন্যের নথিতে তোলা নতুন সিম কার্ড চলে যেত অপরাধীদের হাতে। সেই নতুন সিম ব্যবহার করে গ্রাহকদের লোন পাইয়ে দেওয়ার নাম করে টাকা হাতানো, ভুয়ো কল সেন্টার চালানোর মতো বিভিন্ন অপরাধ চালিয়ে যেত প্রতারণা চক্রটি।
দু’দিন আগেই এই চক্রে যুক্ত সাইফুল্লা গাজিকে গ্রেপ্তার করে পুলিস। তাকে জেরা করে বকুল বিশ্বাস ও সমিরুল হককে অশোকনগর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। বারাসতের এসডিপিও বিদ্যাগর অজিঙ্কে বলেন, ‘ইন্ডিয়ান সাইবার ক্রাইম কো-অর্ডিনেশন সেন্টারের তথ্যের ভিত্তিতে তিন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’