এই সময়, শিলিগুড়ি: সোনার দোকানে ডাকাতি, এটিএম ভাঙার পর এ বার এক বৃদ্ধার মুখে কাপড় গুঁজে কান ছিঁড়ে গয়না নিয়ে চম্পট দিল দুষ্কৃতীরা। শিলিগুড়ির দক্ষিণ শান্তিনগরে ভোররাতে এক বাড়িতে ঢুকে বৃদ্ধাকে বেধড়ক মারধর করে লুটপাট চালায় চোরের দল।
গোটা ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকায়। একের পর এক দুষ্কৃতী ক্রিয়াকলাপে শহরের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ঘটনায় এনজেপি থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের ডিসিপি (পূর্ব) রাকেশ সিং দ্রুত ব্যবস্থার আশ্বাস দিয়ে বলেন, ‘ইতিমধ্যেই আমরা একজনকে চিহ্নিত করতে পেরেছি। আপাতত সে এলাকা ছাড়া রয়েছে। আমরা শুধু এই অপরাধীদের ধরব তা নয়, যা যা ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজন সেটাই নেব।’
দুষ্কৃতীরা বাড়ির পিছনের একটি পুরোনো দরজার ছিটকিনি কোনও ভাবে খুলে ভিতরে প্রবেশ করে। পুলিশের অনুমান, দুষ্কৃতীরা বাড়িটি সম্পর্কে ভালোই ওয়াকিবহাল।
সোমবার ভোরে বছর ৭৩-এর শ্যামলী চক্রবর্তীর বাড়িতে ঢোকে দুষ্কৃতীর দল। বৃদ্ধা বলেন, ‘ভোররাতে ঘরের ভিতর তিন দুষ্কৃতী ঢুকে আমার মুখে কাপড় গুঁজে দেয়। গয়না খুলতে গিয়ে কান ছিঁড়ে দেয় আমার। ঘরে লুটপাট করে বহু জিনিস চুরি করে নিয়েছে ওরা।’
শ্যামলীর বয়ান অনুযায়ী, ঘরে ঢুকেছিল তিনজন। দুটো আলমারি ভেঙে বিভিন্ন জিনিসপত্র নিয়ে গেছে দুষ্কৃতীরা। এ ছাড়াও গাড়ির চাবি ও দামি সামগ্রী কোথায় রয়েছে বারবার জিজ্ঞাসা করতে থাকে দুষ্কৃতীরা। প্রত্যেকের মুখ কালো কাপড়ে বাঁধা ছিল।
পাশের ঘরে থাকলেও কিছু টের পাননি বৃদ্ধার ছেলে সৌরভ। তিনি বলেন, ‘রাত দুটো নাগাদ ঘুমোতে যাই। ভোরের দিকে মা এসে দরজা ধাক্কাতে থাকেন। মায়ের গোঙানির আওয়াজে তড়িঘড়ি দরজা খুলে গোটা বিষয়টি বুঝতে পারি।
এই শহরে কোনও নিরাপত্তা নেই। খুব ভয়ে আছি।’ শুধু কান ছিঁড়ে দুল নেওয়া নয়, শ্যামলীকে ঘুসিও মেরেছে দুষ্কৃতীরা। মারের চোটে বৃদ্ধার চোখে কালশিটে ছোপ, কানে রক্ত দেখা গিয়েছে।
প্রতিবেশী গণেশ চৌধুরী বলেন, ‘এক সপ্তাহ আগে পাশে একজনের বাড়িতে চুরি হয়েছে। দু’দিন আগে এলাকায় এক মহিলার গলার চেন ছিনতাই হয়েছে। পুলিশে অভিযোগ জানানো হলেও এখনও অপরাধী ধরা পড়েনি।’
খবর পেয়ে এ দিন সকালে ঘটনাস্থলে যান ডাবগ্রাম ফুলবাড়ির বিজেপি বিধায়ক শিখা চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘পুলিশ কোনও কাজ করছে না। লাগাতার চুরি-ছিনতাই হচ্ছে। এরকমটা চলতে থাকলে এলাকায় বসবাস করা যাবে না।’