• অযোগ্যদের পরীক্ষায় বসার সুযোগ কেন? রাজ্য-এসএসসিকে প্রশ্ন হাইকোর্টের
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ০১ জুলাই ২০২৫
  • নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে প্রশ্নের মুখে পড়ল স্কুল সার্ভিস কমিশন। রাজ্য এবং স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)-এর কাছে আদালত জানতে চেয়েছে, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরেও কেন অযোগ্যদের নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বসার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে? আদালত পুরনো বিধি মেনে নিয়োগ প্রক্রিয়া চালুর কথা বললেও কেন নতুন বিধি আনা হল, তাও জানতে চেয়েছে আদালত। এই বিষয়ে আগামী সোমবারের মধ্যে রাজ্য এবং কমিশনকে জবাব দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্য।

    মঙ্গলবারের শুনানিতে বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্য বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরেও কেন অযোগ্যদের নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের অনুমতি দেওয়া হল? আপনাদের ৩০ মে-র বিজ্ঞপ্তিতে কোথাও বলা নেই অযোগ্য চাকরিপ্রার্থীরা আবেদন করতে পারবে না। আমার পর্যবেক্ষণে এটা ওই বিজ্ঞপ্তিতে না থাকাটা গলদ।’ স্কুল সার্ভিস কমিশনের ২০২৫ সালের বিধি চ্যালেঞ্জ করেই কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হয়েছিল মামলা। মঙ্গলবার বিচারপতি প্রশ্ন তোলেন, ‘৩০ মের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে নির্দিষ্ট করে চিহ্নিত অযোগ্যদের কেন নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে স্পষ্ট ভাষায় নিষেধ করা হল না?’

    আবেদনকারীদের দাবি, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে বলা হয়েছে শুধুমাত্র ‘যোগ্য’ চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষিকারাই নতুন করে পরীক্ষায় বসতে পারবেন। পাশাপাশি বয়সে ছাড় দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। বিজ্ঞপ্তিতে কোথাও দাগি (দুর্নীতির প্রমাণ মিলেছে এমন) এবং দাগি নন (দুর্নীতির প্রমাণ মেলেনি), এমন চাকরিপ্রার্থীদের পৃথক করার কথা বলা হয়নি। তা নিয়ে গোড়া থেকেই আপত্তি জানাচ্ছিলেন নিজেদের যোগ্য বলে দাবি করা চাকরিহারারা। পাশাপাশি বয়সে ছাড়ের বিষয়টি সুস্পষ্ট ভাবে উল্লেখ করা হয়নি বলে দাবি আবেদনকারীদের। যেহেতু ১৪ জুলাই এই বিজ্ঞপ্তির প্রেক্ষিতে আবেদনের শেষ দিন, তাই জরুরি ভিত্তিতে মামলাটি শুনানির জন্য আবেদন করা হয়েছিল।

    প্রসঙ্গত, চলতি বছর এপ্রিলের শুরুতে ২০১৬ সালে এসএসসির নিয়োগ সংক্রান্ত গোটা প্যানেলটি ‘অসাংবিধানিক’ অ্যাখ্যা দিয়ে বাতিল করে দেয় সুপ্রিম কোর্ট। এর ফলে প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মীর চাকরি রাতারাতি বাতিল হয়ে যায়। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশেই নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করে এসএসসি। গত মাসের শেষেই ২০১৬ সালের চাকরিহারাদের জন্য নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করার বিজ্ঞপ্তি জারি করে এসএসসি। পরীক্ষার বিধিতেও নানা বদল আনা হয়।

    বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের আগের দিন গভীর রাতে নিয়োগের নয়া বিধি প্রকাশ করে এসএসসি। নয়া বিধিতে জোর দেওয়া হয় শিক্ষকতার পূর্ব অভিজ্ঞতা এবং ক্লাস নেওয়ার দক্ষতার উপরে। নবম-দশম এবং একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির সহকারী শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বিষয়ের পরীক্ষা হবে ৬০ নম্বরের। এটি আগে ৫৫ নম্বর ছিল। শিক্ষাগত যোগ্যতার উপরে থাকবে সর্বোচ্চ ১০ নম্বর। আগে এটি ছিল ৩৫ নম্বর। ইন্টারভিউয়ের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ নম্বর অপরিবর্তিত থাকছে। এই ক্ষেত্রে আগে ১০ নম্বর ছিল, নতুন নিয়োগ বিধিতেও তা-ই রাখা হয়েছে। শিক্ষকতার অভিজ্ঞতার উপর দেওয়া হচ্ছে সর্বোচ্চ ১০ নম্বর। এ ছাড়া ‘লেকচার ডেমনস্ট্রেশন’-এর জন্যও সর্বোচ্চ ১০ নম্বর রাখা হচ্ছে।
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)