‘কার্তিক মহারাজের কাছে যাবে না কেন ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং দল’
দৈনিক স্টেটসম্যান | ০১ জুলাই ২০২৫
চাকরির বিনিময়ে দিনের পর দিন ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে বেলডাঙ্গার ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের প্রধান কার্তিক মহারাজের বিরুদ্ধে এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই একের পর এক আক্রমণের তীর ছুঁড়েছে তৃণমূল। এবার শাসকদলের বড় প্রশ্ন, কসবা-কাণ্ডের জেরে কলকাতায় আসা বিজেপির ‘ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং’ কমিটি কার্তিক মহারাজের কাছেও যাবে তো? সোমবার সাংবাদিক বৈঠক করে রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজার প্রশ্ন, ‘তৃণমূল জানতে চায়, কার্তিক মহারাজের বিরুদ্ধে বারংবার যে নির্যাতিতা অভিযোগ করে চলেছেন, তাঁর কাছে কেন পৌঁছবে না বিজেপির ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং দল? এই দ্বিচারিতা বাংলা সহ্য করবে না!’ পাশাপাশি তৃণমূল মুখপাত্র অরূপ চক্রবর্তীর কটাক্ষ, ‘মহারাজ, আজ কি সাধু হলেন? বিজেপির আগে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং করতে যাওয়া উচিত ওই ভণ্ড, বেড়াল তপস্বীর কাছে। দম আছে কার্তিক মহারাজকে গিয়ে প্রশ্ন করার? তাঁর বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ করার? আসলে ক্ষমতা নেই আপনাদের, বাংলা মানুষ সব বোঝেন।’
প্রসঙ্গত, কসবা-কাণ্ডের প্রেক্ষিতে বিজেপির জাতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা গড়েছেন একটি ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং দল। সোমবার রাজ্যে এসেছে চার সদস্যের সংশ্লিষ্ট দলটি। সম্পূর্ণ ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ উল্লেখ করে সেই রিপোর্ট জেপি নাড্ডার কাছে জমা দেবে দলটি। বাংলায় বিজেপির প্রতিনিধিদলের আগমন নিয়েও কটাক্ষ করেছেন শশী। তাঁর ভাষায়, ‘বাংলায় গণতন্ত্র আছে, এর সবচেয়ে বড় প্রমাণ হল, বিজেপির প্রতিনিধিদলের কলকাতায় আসতে সক্ষম হয়েছে। হাথরাস থেকে অসমের ঘটনায় তৃণমূলের প্রতিনিধিদলকে যেতে দেওয়া হয়নি। কারণ বিজেপিশাসিত রাজ্যে গণতন্ত্রের অস্তিত্ব নেই!’ এখানেই শেষ নয়, নির্দিষ্ট দলের সদস্যদেরও ট্র্যাক রেকর্ড তুলে ধরেছেন মন্ত্রী শশী পাঁজা এবং অরূপ চক্রবর্তী। তাঁদের বক্তব্য, ‘ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ করেছিলেন বিপ্লব দেব। খুন-ধর্ষণ হয়ে উঠেছিল নিত্যদিনের ঘটনা। সে সময় মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন নিশ্চুপ।
তাঁর বিরুদ্ধে আবার অভিযোগ, তিনি ভারতের নাগরিকও নন, বাংলাদেশের নাগরিক। তিনি এসেছেন তথ্য সংগ্রহ করতে?’ তাঁদের সংযোজন, ‘দলের সদস্য মনন মিশ্র আগে বলেছেন, কোনো নির্যাতিতা যদি এসে বলেন যে, তাঁর উপর অত্যাচার হয়েছে তাহলে সর্বদা বিষয়টা গুরুত্ব দেওয়া উচিত নয়, কারণ অভিযোগ উঠলেই তা সত্যি প্রমাণ হয় না। এই ভাবনাচিন্তার মানুষ ধর্ষণ-কাণ্ডের সত্যতা খুঁজবেন? সত্যপাল সিংহ হাথরাসের ধর্ষণের ঘটনায় পুলিশ-প্রশাসন এবং রাজ্য সরকারের নিশ্চুপ থাকার পক্ষে সওয়াল করেছিলেন। প্রাক্তন সাংসদ মীনাক্ষী লেখি সংসদে দাঁড়িয়ে প্রকাশ্যে বিরোধী এক সাংসদকে কড়া ভাষায় বলেছিলেন, চুপ করে বসুন নয়তো ইডি-সিবিআই পাঠানো হবে। এটাই তাঁদের ট্র্যাক রেকর্ড! তাঁরাই আবার সত্যের উদ্ঘাটন করবেন? তাঁরা আসেন বাংলার মানুষকে বোকা বানাতে।’