খড়্গপুরে প্রবীণ বাম নেতাকে শারীরিক নিগ্রহের ঘটনায় তৃণমূল নেত্রী বেবি কোলেকে থানায় ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করল পুলিশ। অন্য দিকে, বেবিও পাল্টা ‘আমরা বামপন্থী’ সংগঠনের নেতা অনিল দাসের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন থানায়। মঙ্গলবার পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, দুই পক্ষের অভিযোগ জমা পড়েছে। দুই অভিযোগই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
সোমবার খড়্গপুরের খরিদা এলাকায় প্রবীণ বাম নেতা অনিলকে রাস্তায় ফেলে মারধরের অভিযোগ ওঠে ১০ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূলনেত্রী বেবির বিরুদ্ধে। নিজেকে বাঁচাতে একটি রঙের দোকানে ঢুকে গিয়েছিলেন ওই প্রবীণ ব্যক্তি। সেখান থেকে তাঁকে টেনে বার করে এনে রাস্তায় ফেলে মারধর করা হয়। একটি ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে (ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন), বৃদ্ধের গায়ে রং ঢেলে তাঁকে জুতোপেটা করছেন এক মহিলা। ওই ব্যক্তি কোনও রকম উঠে সেখান থেকে চলে যাওয়ার চেষ্টা করেন। তাঁকে আবার রাস্তায় ফেলে মারধর করা হয়। পরে স্থানীয়দের সাহায্য নিয়ে খড়্গপুর টাউন থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন অনিল। এখন হাসপাতালে ওই বৃদ্ধ। এর মধ্যে তৃণমূলনেত্রীর কাণ্ড দেখে তাঁকে শো কজ় করেছে তাঁর দল। সেই সঙ্গে তৃণমূলের তরফেও নেত্রীর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়।
ঘটনাক্রমে মঙ্গলবার বেবিকে থানায় ডেকে পাঠায় পুলিশ। জখম অনিলের পুত্র থানায় গিয়ে খোঁজ নেন এই মামলায় কী পদক্ষেপ করছে পুলিশ। তিনি জানতে চান, কেন তৃণমূলনেত্রীকে গ্রেফতার করা হল না। ওই যুবক বলেন, ‘‘পুলিশ উপযুক্ত পদক্ষেপ না করলে সিআইডি বা সিবিআই তদন্তের দাবি জানাব।’’
অন্য দিকে, বৃদ্ধকে মারধরের কারণ হিসেবে বেবি ‘যুক্তি’ দিয়েছেন। তাঁর দাবি, “ওই ব্যক্তি তিন মহিলার কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা করে নিয়েছেন। ২ বছর আগের ঘটনা সেটা। তিন জনকে কাজ পাইয়ে দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কাজ না-পাওয়ায় তিন জন টাকা চান। তখন ওই ব্যক্তি মুখ্যমন্ত্রীর নামে খারাপ কথা বলেন। এমনকি, ওই মহিলাদের কুপ্রস্তাব দেন। আমরা আগেও ওই ভদ্রলোকের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলাম। টাকা নেওয়ার জন্য এবং মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে কুরুচিকর মন্তব্যের জন্য এই ঘটনা ঘটেছে।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘মহিলাদের সঙ্গে অন্যায় হলে লড়াই তো করব। আমি দোষ করলে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে। মহিলাদের উপর অন্যায় হলে বসে থাকব না। তাঁদের উপর অন্যায় হলে বেবি কোলে আছে, থাকবে। আমি আমার নিজের প্রাচীর ভেঙেছি।’’
বৃদ্ধকে দেখতে হাসপাতালে যান খড়্গপুর সদরের বিজেপি বিধায়ক হিরণ চট্টোপাধ্যায়। অনিলের শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নিতে হাসপাতালে যান শাসকদলের প্রাক্তন বিধায়ক প্রদীপ সরকার, খড়্গপুর পুরসভার চেয়ারম্যান কল্যাণী ঘোষ প্রমুখ।