২০২৪ সালের ভোটার তালিকা থেকে কোনও নাম বাদ দেওয়া যাবে না, দিল্লি গিয়ে কমিশনকে বললেন কল্যাণ, ফিরহাদেরা
আনন্দবাজার | ০১ জুলাই ২০২৫
বিহারে বিধানসভা নির্বাচনের আগে ভোটার তালিকার বিশেষ সার্বিক পরিমার্জন (স্পেশাল ইন্টেনসিভ রিভিশন বা এসআইআর) নিয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। ভোটার তালিকা সংশোধনের বিষয়ে কয়েকটি নয়া পদ্ধতি পালনের জন্য প্রতিটি রাজ্যকে নির্দেশিকাও পাঠানো হয়েছে কমিশনের তরফে। তার প্রতিবাদ জানিয়ে মঙ্গলবার দিল্লির নির্বাচন সদনে গেল তৃণমূলের প্রতিনিধিদল।
দলের লোকসভার সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে রাজ্যসভার সাংসদ প্রকাশ চির বরাইক এবং রাজ্যের তিন মন্ত্রী— ফিরহাদ (ববি) হাকিম, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এবং অরূপ বিশ্বাস কমিশনের সদর দফতর গিয়ে এ বিষয়ে দলের আপত্তির কথা জানিয়েছেন। বাইরে বেরোনোর পরে কল্যাণ বলেন, ‘‘নির্বাচন কমিশন জানিয়েছিল, এসআইআর-এর উদ্দেশ্য হল কোনও ভোটার যেন বাদ না পড়েন। কিন্তু সাম্প্রতিক কিছু নির্দেশিকার ভিত্তিতে আমাদের মনে হচ্ছে, এই পদ্ধতিটির লক্ষ্য প্রথমে যোগ্যতা যাচাই এবং পরে অন্তর্ভুক্তি।’’
২০২৪ সাল পর্যন্ত তালিকাভুক্ত কোনও ভোটারের নাম যাতে বাদ না পড়ে, তা নিশ্চিত করার জন্য মঙ্গলবার কমিশনের কাছে দাবি জানিয়েছে তৃণমূলের প্রতিনিধিদল। কল্যাণ বলেন, ‘‘আমাদের দাবি ২০২৪ সালের ভোটার তালিকাকে ভিত্তি ধরে এসআইআর করা উচিত।’’ মহারাষ্ট্র, হরিয়ানা, দিল্লিতে বিধানসভা ভোটের আগে বিপুল পরিমাণ ভোটারের নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছিল কমিশন, যা নিয়ে কংগ্রেস, আপ, উদ্ধবসেনা-সহ বিভিন্ন বিরোধী দল আগেই আপত্তি তুলেছিল। বাংলার ক্ষেত্রে যাতে এমনটা না হয়, সে বিষয়েও কল্যাণ বার্তা দিয়েছেন কমিশনকে। তিনি বলেন, ‘‘আমরা বলেছি যে ১৮-২১ বছর বয়সি নতুন ভোটারদের অন্তর্ভুক্তিতে আমাদের কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু বিপুল সংখ্যক ৫০-৬০ বছর বয়সির নাম কী ভাবে হঠাৎ করে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারে?’’
মন্ত্রী ফিরহাদ বলেন, ‘‘দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে কল্যাণের নেতৃত্বে আমরা কমিশনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছি। ২০০৩ সালের পরে জন্মগ্রহণকারীদের কাছ থেকে জন্মের শংসাপত্র চাওয়ার নির্দেশিকা সম্পর্কে কথা বলেছি। আমরা বলেছি, ২০২৪ সাল পর্যন্ত যাঁরা ভোট দিয়েছেন তাঁদের এই ধরনের নথি জমা দেওয়ার প্রয়োজন নেই। নতুন ভোটারদের তাঁদের নথি জমা দিতে বলা যেতে পারে।’’ প্রসঙ্গত, নির্বাচন কমিশনের নতুন নির্দেশিকায় ২০০৩ সালকে ভিত্তি হিসেবে ধরার কথা বলা হয়েছে।
]মনোনয়নের ৪৫ দিন আগে তালিকায় নাম তোলার ব্যবস্থা জাল ভোটারের অন্তর্ভুক্তির আশঙ্কা তৈরি করে বলেও অভিযোগ জানান ফিরহাদ। সেই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘আরেকটি বিষয় হল, কেন্দ্রীয় বাহিনী বুথে প্রবেশ করা এবং কিছু জায়গায় ভোটারদের প্রভাবিত করার অভিযোগ। আমরা প্রস্তাব দিয়েছি, যদি কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকে, তা হলে রাজ্য পুলিশেরও বুথের ভেতরে থাকা উচিত। বুথের ভেতরে যেখানে ভোটগ্রহণ চলছে সেখানে কোনও বাহিনীকেই প্রবেশ করতে দেওয়া উচিত নয়।’’ দক্ষিণ ২৪ পরগনার চম্পাহাটিতে ৪৫০০ ভুয়ো ভোটারের নাম তালিকাভুক্ত করা হয়েছে বলেও অভিযোগ জানিয়েছে তৃণমূল। আধার এবং ভোটার কার্ডের লিঙ্ক যাতে কোনও অবস্থাতেই বাধ্যতামূলক করা না হয়, সে কথাও জানিয়েছে। পাশাপাশি, কমিশনের কাছে কল্যাণ-ফিরহাদদের দাবি, নির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরেই য়েন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের যাতায়াত নিয়ন্ত্রণ করে কমিশন।