• যৌনতা-ধর্ষণ-মদের মজলিস চলত কলেজের গার্ডরুমে, 'দাদা'র বিনোদনের দায়িত্বে থাকত 'অনুগামীরা'
    আজ তক | ০২ জুলাই ২০২৫
  • কসবার ল'কলেজের গার্ডরুমই ছিল মনোজিৎ মিশ্রের 'মস্তানি' করার জায়গা। গান শুনতে ভালবাসে সে। তাই প্রায়শই সেই গার্ডরুমে বসত গানের মজলিস। প্রিয় ম্যাঙ্গো দাদার জন্য মনোরঞ্জনের বন্দোবস্ত করার দায়িত্ব পড়ত জইব আহমেদ এবং প্রমিত মুখোপাধ্যায়ের উপর। কখনও গার্ড রুম বা কখনও ইউনিয়ন রুমে বসত মদ্যপানের আসর। মজলিসের আগে কোনও না কোনও ছাত্রীকে ‘টার্গেট’ করে রাখত মনোজিৎ। দাদার এক ইশারায় সেই 'টার্গেট'-কে গার্ডরুমে পৌঁছে দেওয়ার বন্দোবস্ত করত শাগরেদরা। এ রকম আসরে মদ আনার দায়িত্ব থাকত কোনও না কোনও 'দাদার অনুগামী'-র উপরই।

    কলেজ সূত্রে খবর, 'দাদার অনুগামী'-দের মধ্যে কেবলমাত্র ছাত্র নয়, জুনিয়র ছাত্রীরাও ছিল। ক্যাম্পাসে আসা নতুন ছাত্রীদের পাকড়াও করে দাদার কাছে পৌঁছে দেওয়ার নেপথ্যে সেই সব ছাত্রীদেরও বড় ভূমিকা রয়েছে। নতুন ভর্তি হওয়া ছাত্রীদের সঙ্গে সই পাতিয়ে তাঁরাই 'টার্গেট ফিক্স' করত মনোজিতের জন্য। মনোজিতের কথা মতো না চললে তরুণীদের চুলের মুঠি ধরে মারধর, শাসানোর কাজটা ওই ছাত্রীরাই করে দিত। 

    ক্যাম্পাসে হুমকি, ধমক, মারধর, প্রতিবাদীদের বাড়িতে গিয়ে হুমকি দেওয়া, মেয়েদের অশালীন ভাবে আক্রমণ করা, এই সমস্ত কিছুই কলেজে চালাত ম্যাঙ্গো দাদার আস্থাভাজন শাগরেদরা। মনোজিতের আজ্ঞাবহ দাস ছিল তারা। কলেজে এভাবেই 'থ্রেট কালচার' চালাত মনোজিৎ ও তার গ্যাং। ক্যাম্পাসে এদের ডানা ছাঁটা না হলে সেই সুস্থ পরিবেশ কোনও দিনও আসবে না বলেই মনে করছে পড়ুয়ারা। 

    কলেজের সেই গার্ডরুমে তল্লাশি চালিয়ে একাধিক তথ্যপ্রমাণ হাতে উঠে এসেছে পুলিশের। গার্ডরুমের ভিতরে তাঁর সঙ্গে যে পরিমাণ শারীরিক অত্যাচার হয়েছে, তা বয়ানে আগেই উল্লেখ করেছেন নির্যাতিতা। ক্রাইম সিন থেকে উদ্ধার হওয়া নানা তথ্যপ্রমাণ নির্যাতিতার বয়ানের দিকেই ইঙ্গিত করছে বলে সূত্রের খবর। গার্ডরুমে মিলেছে রক্তের দাগ, যা ফরেন্সিক টেস্টে পাঠানো হয়েছে। ঘর থেকে পাওয়া চাদরে যে দাগ পাওয়া গিয়েছে, তার DNA পরীক্ষা করা হচ্ছে। সেটি বীর্যের দাগ বলেই প্রাথমিক তদন্তে অনুমান। তদন্তকারীদের স্ক্যানারে রয়েছে নিরাপত্তারক্ষীর ঘরের অস্থায়ী বিছানা এবং সংলগ্ন শৌচালয় থেকে পাওয়া রক্তের দাগও। পাওয়া গিয়েছে ভাঙা মদের বোতলও।
  • Link to this news (আজ তক)