কোর্টের নির্দেশ পেলে কর্মশিক্ষা ও শারীরশিক্ষার তদন্তেও তৈরি সিবিআই
আনন্দবাজার | ০২ জুলাই ২০২৫
উচ্চ প্রাথমিক স্তরে কর্মশিক্ষা-শারীরশিক্ষার শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রেও দুর্নীতি সংক্রান্ত তথ্য পেয়েছিল সিবিআই। তবে সে ব্যাপারে তারা বিস্তারিত তদন্ত করেনি বলেই মঙ্গলবার কলকাতা হাই কোর্টে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। কর্মশিক্ষা-শারীরশিক্ষার শিক্ষক নিয়োগে অতিরিক্ত পদের বৈধতা নিয়ে বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর এজলাসে মামলা চলছে। তাতে দুর্নীতির প্রসঙ্গ উঠেছিল। এ ব্যাপারে সিবিআইয়ের বক্তব্য তলব করেন বিচারপতি বসু। এ দিন সিবিআই জানিয়েছে যে আদালত অনুমতি দিলে তদন্ত শুরু করতে পারবে তারা। আগামী শুক্রবার মামলার পরবর্তী শুনানি।
এ দিন কেন্দ্রীয় সরকারের ডেপুটি সলিসিটর জেনারেল (ডিএসজি) ধীরাজ ত্রিবেদী কোর্টে বলেন, ‘‘এসএসসি এবং প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে নেমে আমরা প্রচুর নথি পেয়েছিলাম। সেই নথির মধ্যে কর্মশিক্ষা এবং শারীরশিক্ষার নিয়োগ সংক্রান্ত নথিও ছিল। যেহেতু প্রাথমিক এবং এসএসসি নিয়োগ নিয়েই তদন্ত চলছিল তাই কোর্টের অনুমতি ছাড়া তদন্ত করা যায়নি।’’ প্রসঙ্গত, এ রাজ্যে তৃণমূল সরকার সিবিআই তদন্তের সার্বিক ছাড়পত্র (জেনারেল কনসেন্ট) প্রত্যাহার করে নিয়েছে। তাই কোর্টের নির্দেশ ছাড়া সিবিআই নিজে থেকে মামলা রুজু করতে পারে না।
সিবিআই সূত্রের খবর, কর্মশিক্ষা এবং শারীরশিক্ষার নিয়োগেও যে টাকা লেনদেন হয়েছিল সেই সংক্রান্ত তথ্যপ্রমাণ তদন্তকারীদের হাতে এসেছে। সেই কথা কুন্তল ঘোষ, শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে চার্জশিটে সংক্ষেপে উল্লেখও করা হয়েছিল। এ দিন সিবিআইয়ের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে বিচারপতি বসুর পর্যবেক্ষণ, কোন পদে কতগুলি কী ভাবে নিয়োগ হয়েছে? সিবিআই জানায়, তদন্ত ছাড়া বিস্তারিত ভাবে বলা সম্ভব নয়। বিচারপতি বসুর পর্যবেক্ষণ, তা হলে এ ক্ষেত্রে পৃথক মামলা রুজু করতে হবে।
মামলাকারী চাকরিপ্রার্থীদের আইনজীবী ফিরদৌস শামিমের বক্তব্য, ‘‘২০১৬ সালে প্রাথমিক এবং এসএসসির শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছিল তা প্রমাণিত। সে ক্ষেত্রে উচ্চ প্রাথমিকে নিয়োগ স্বচ্ছ ভাবে হয়েছে, এ কথা মেনে নেওয়া কঠিন।’’ প্রসঙ্গত, এসএসসি এবং প্রাথমিক নিয়োগের তদন্ত করতে গিয়ে প্রোমোটার অয়ন শীলের বাড়ি এবং অফিস থেকে বিভিন্ন পুরসভায় নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতির তথ্য পান তদন্তকারীরা। সেই তথ্য কোর্টে জানালে তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় তদন্তের নির্দেশ দেন। সেই তদন্তে বিভিন্ন পুরসভার দুর্নীতি সামনে আসে, দাবি তদন্তকারীদের। পুর নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তের নির্দেশের বিরুদ্ধে রাজ্য সুপ্রিম কোর্টেও যায়। তবে নির্দেশের বদল হয়নি। ফিরদৌস বলছেন, ‘‘যদি অন্য ঘটনার তদন্তের সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য এবং নথির ভিত্তিতে পুর নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত শুরু হতে পারে, তা হলে এ ক্ষেত্রেও সিবিআই তদন্ত প্রয়োজন।’’