অভিযোগ পেয়ে দ্রুত অ্যাকশন পুলিশের, ২ ঘণ্টার মধ্যে উদ্ধার নিউ ব্যারাকপুরের পণবন্দি ব্যবসায়ী
প্রতিদিন | ০২ জুলাই ২০২৫
অর্ণব দাস, বারাসত: রিয়েল এস্টেটের ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে মুক্তিপণ চাওয়া হয়েছিল। চাপের মুখে পড়ে ওই ব্যবসায়ীর পরিবার প্রথমে কিছু টাকাও দিয়েছিলেন। পরে পুলিশের দ্বারস্থ হন অপহৃতের স্ত্রী। অভিযোগ পেয়ে দ্রুত পদক্ষেপ করেন তদন্তকারীরা। অভিযোগ পাওয়ার দু’ঘণ্টার মধ্যে উদ্ধার করা হল ওই ব্যবসায়ীকে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ছয় অপহরণকারীকে। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি উত্তর ২৪ পরগনার নিউ ব্যারাকপুর থানা এলাকায়। অপহৃই ওই ব্যবসায়ীর নাম সৌমিত্র রায়।
জানা গিয়েছে, ব্যবসায়ী সৌমিত্র রায়ের বাড়ি নিউ ব্যারাকপুর থানার শহরপুর অঞ্চলে। গত ২৯ জুন তাঁর বাড়িতে কয়েকজন গিয়েছিলেন। কিছু কথার পর তাঁকে সঙ্গে নিয়ে যান ওই ব্যক্তিরা। তারপর থেকে ব্যবসায়ী সৌমিত্র রায়ের আর খোঁজ পাচ্ছিল না পরিবার। ক্রমে বাড়তে থাকে দুশ্চিন্তা। এর মধ্যে ওই ব্যবসায়ীর পরিবারের কাছে ফোন আসে। অভিযোগ, ফোনের অপরপ্রান্ত থেকে ৫ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ চাওয়া হয়। সেই ফোন পেয়ে ওই পরিবারের সদস্যদের মাথায় কার্যত আকাশ ভেঙে পড়ে। একাধিকবার মুক্তিপণ চেয়ে ফোন আসে বলে অভিযোগ। ব্যাঙ্কের ডিটেলসও দেওয়া হয় বলে খবর। একপ্রকার বাধ্য হয়ে ওই ব্যবসায়ীর স্ত্রী ৫০ হাজার টাকা দুষ্কৃতীদের দেওয়া ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠান। কিন্তু টাকা চেয়ে বারবার চাপ দেওয়া হতে থাকে বলে অভিযোগ। প্রায় আড়াই দিন ওই ব্যবসায়ী পণবন্দি থাকেন এভাবেই।
গতকাল, মঙ্গলবার সৌমিত্র রায়ের স্ত্রী নিউ ব্যারাকপুর থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ পেয়েই নড়েচড়ে বসেন পুলিশ আধিকারিকরা। আধিকারিকদের নিয়ে একটি স্পেশাল টিম তৈরি করা হয়। অপহরণকারীদের ফোনের লোকেশন ট্রেস করা শুরু হয়। দেখা যায় সেই লোকেশন উত্তর বিধাননগর থানা এলাকার। এরপর আর কালবিলম্ব না করে নিউ ব্যারাকপুর থানার পুলিশ লোকেশনের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। লোকেশন অনুযায়ী উত্তর বিধাননগর থানা এলাকায় বন্ধন গেস্ট হাউসে হানা দেন তদন্তকারীরা। গেস্ট হাউসের একটি ঘর থেকে উদ্ধার করা হয় ওই অপহৃত ব্যবসায়ীকে। সেখান থেকেই গ্রেপ্তার হয় ছয় অপহরণকারী।
ওই ব্যবসায়ীকে আটকে রেখে মারধর করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে। তাঁর শরীরের একাধিক জায়গায় চোট-আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। উদ্ধার হওয়া ব্যবসায়ী ও ছয় অপহরণকারীকে নিউ ব্যারাকপুর থানায় গতকাল রাতেই নিয়ে যাওয়া হয়। ধৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। আজ, বুধবার ধৃতদের বারাকপুর মহকুমা আদালতে তোলা হয়। ধৃতদের নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জেরা করা হবে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। কিন্তু কেন এই অপহরণ? জানা গিয়েছে, ওই ব্যবসায়ী ব্যবসায়িক কারণেই ধার-দেনায় জড়িয়ে পড়েছিলেন। চাপ দিয়ে পাওনা টাকা উদ্ধারের জন্যই কি অপহরণ? সেই বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।