ব্যয় বেশি, আর ইলেকট্রিক বাস কিনবে না, সিএনজি বাস কেনার ওপর জোর রাজ্যের
হিন্দুস্তান টাইমস | ০২ জুলাই ২০২৫
নতুন প্রযুক্তির ওপর ভরসা রেখে রাজ্য চালু করেছিল ইলেকট্রিক বাস পরিষেবা। লক্ষ্য ছিল- পরিবেশবান্ধব, আধুনিক, ব্যয় সাশ্রয়ী গণপরিবহণ গড়ে তোলা। কিন্তু বাস্তবে মাত্রাতিরিক্ত খরচের ফলে সেই বাস পরিষেবা আজ মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে পরিবহণ দফতরের। তাই আর ইলেকট্রিক বাস কিনতে চায়ছে না সরকার। এবার সিএনজি বাসের দিকে ঝুঁকছে রাজ্য। এবিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়ে গিয়েছে নবান্নে।
এই মুহূর্তে পশ্চিমবঙ্গ পরিবহণ নিগমের অধীনে ৮০টি ই-বাস রয়েছে। প্রতিটি বাসের দাম প্রায় এক কোটি টাকা বা তারও বেশি। নির্মাতা সংস্থাগুলি দাবি করেছিল, ফুল চার্জে ১০০ কিমির বেশি চলবে এই বাস, চলবে অন্তত ১২ বছর। কিন্তু বছর পাঁচেক কাটতে না কাটতেই দেখা গেল ব্যাটারি দ্রুত দুর্বল হয়ে পড়ছে, রোজগারের তুলনায় ব্যয় বাড়ছে।
একেকটি বাসে তিনটি করে ব্যাটারি থাকে, যার একটির দাম ১৮ লক্ষ টাকারও বেশি। ব্যাটারি বদলানো না গেলে বাস বসে যাচ্ছে। আর যন্ত্রাংশ মিলছে না ঠিক সময়ে। তাছাড়া রক্ষণাবেক্ষণের কাজেও সমস্যা হচ্ছে। পরিবহণ দফতরের হিসাব বলছে, বেশিরভাগ ই-বাস এখন আর ১০০ কিমি তো দূরের কথা, ৮০ কিমিও পার করছে না। এই অবস্থায় এত বড় বিনিয়োগ টিকিয়ে রাখা অসম্ভব বলে মনে করছে দফতর।
এই প্রেক্ষিতে বিকল্প উপায় ভাবতে শুরু করেছে রাজ্য। আর সেই ভাবনার ফল হল সিএনজি চালিত বাস। খরচ কম, পরিষেবা স্থায়ী এবং রক্ষণাবেক্ষণের ঝামেলা তুলনায় কম এই ধরনের বাসে। পরিবহণ দফতর সূত্রে খবর, ২০০টি নতুন সিএনজি এসি বাস কেনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। প্রতিটি বাসের দাম প্রায় ৪২-৪৪ লক্ষ টাকা। বাসগুলি ১৫ বছর পর্যন্ত পরিষেবা দিতে পারবে।
পরিকল্পনা মতো সব চললে পুজোর আগেই রাস্তায় নামবে প্রথম দফার ৩০-৪০টি সিএনজি বাস। যদিও সমস্যার এখানেও শেষ নেই। গোটা শহরে এখন কেবল একটি সিএনজি স্টেশন চালু রয়েছে। নতুন স্টেশন তৈরির পরিকল্পনা থাকলেও, বাস্তবে তা এখনও কাগজে কলমেই সীমাবদ্ধ। এখন প্রশ্ন উঠেছে ই-বাস চালানোর জন্য তৈরি হওয়া পরিকাঠামোর ভবিষ্যৎ নিয়ে। কারণ ১৪টি চার্জিং স্টেশন তৈরি হয়েছে কোটি কোটি টাকা খরচ করে। এখন যখন নতুন বাসই আসবে না, তখন সেই স্টেশনগুলি কোথায় ব্যবহার হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।