কলেজে ধর্ষণকাণ্ডের মামলায় যুক্ত হতে চায় নির্যাতিতার পরিবারও, বৃহস্পতিবার শুনানি
আনন্দবাজার | ০২ জুলাই ২০২৫
কসবার সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজে ধর্ষণের ঘটনায় মোট তিনটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে কলকাতা হাই কোর্টে। বৃহস্পতিবার তার শুনানি রয়েছে। তার আগে এই মামলাগুলিতে যুক্ত হতে চেয়ে হাই কোর্টে গেলেন নির্যাতিতার পরিবারের সদস্যেরা। আইনজীবীদের সঙ্গে এ নিয়ে পরামর্শ করেছেন তাঁরা। মামলায় যুক্ত হওয়া যায় কি না, হতে গেলে কী করতে হবে না হবে, সে বিষয়ে খোঁজখবর নিয়েছেন। নির্যাতিতার পরিবারের বক্তব্য, এই তিনটি জনস্বার্থ মামলার একটিতেও তাদের যুক্ত করা হয়নি। কিন্তু গোটা ঘটনার তদন্ত-সহ পুরো বিষয়টি নিয়ে মতামত দেওয়ার অধিকার তাদের রয়েছে। সেই কারণেই মামলায় তারা যুক্ত হতে চায়।
গত ২৫ জুন কসবায় কলেজ ক্যাম্পাসের ভিতরে ছাত্রীকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত-সহ মোট চার জনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। কলকাতা পুলিশের ৯ সদস্যের বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) ঘটনার তদন্ত করছে। বুধবার তদন্তভার দেওয়া হয়েছে গোয়েন্দা বিভাগকেও। উল্লেখ্য, নির্যাতিতার পরিবার আগেই জানিয়েছিল, তারা সিবিআই তদন্ত চায় না। কলকাতা পুলিশের তদন্তেই আস্থা আছে। কিন্তু এই ঘটনা নিয়ে যে তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছে, তাতে সিবিআই তদন্তের আবেদনও করা হয়েছে।
কসবাকাণ্ডের তিন জনস্বার্থ মামলার শুনানি বৃহস্পতিবার হবে বিচারপতি সৌমেন সেন এবং বিচারপতি স্মিতা দাসের ডিভিশন বেঞ্চে। মামলাকারীরা এই ঘটনায় অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নজরদারিতে সিবিআই তদন্ত চেয়েছেন। এ ছাড়া, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে পর্যাপ্ত সিসি ক্যামেরা বসানো, ছাত্রছাত্রীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা, নারীসুরক্ষা নিশ্চিত করার আবেদন জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে নিজেদের মতামতও আদালতে জানাতে চায় নির্যাতিতার পরিবার। বুধবার আইনজীবীদের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করেন পরিবারের সদস্যেরা। তাঁদের পরামর্শ নেন।
নির্যাতিতা এবং অভিযুক্তেরা প্রত্যেকেই তৃণমূলের ছাত্র পরিষদের (টিএমসিপি) সঙ্গে যুক্ত। অভিযোগপত্রে নির্যাতিতা জানিয়েছেন, বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে রাত ১০টা ৫০ মিনিট পর্যন্ত তাঁকে নির্যাতন করা হয়েছে। প্রথমে ইউনিয়ন রুমে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়। পরে রক্ষীর ঘরে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করা হয়। তাঁকে হকি স্টিক দিয়ে মারধরের চেষ্টাও করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। মূল অভিযুক্ত টিএমসিপি নেতা ওই কলেজের প্রাক্তনী এবং অস্থায়ী কর্মী। আলিপুর আদালতে আইনজীবী হিসাবে প্র্যাকটিস করতেন তিনি। বুধবার রাজ্য বার কাউন্সিলের তালিকা থেকে তাঁর নাম সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। বাকি দু’জন অভিযুক্ত কলেজের বর্তমান ছাত্র। এ ছাড়া কলেজে ওই সময়ে দায়িত্বে থাকা নিরাপত্তারক্ষীকেও পুলিশ গ্রেফতার করেছে।