উল্টোরথের পরে মহরম, শ্রাবণী মেলা! পর পর উৎসব সামলানোর প্রস্তুতি কেমন? জানতে বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী
আনন্দবাজার | ০২ জুলাই ২০২৫
সামনেই উল্টোরথ। তার ঠিক পরের দিনই মহরম! আবার ওই সপ্তাহ থেকেই শুরু হয়ে যাচ্ছে শ্রাবণী মেলা। পর পর উৎসব সামাল দিতে পারবে রাজ্য প্রশাসন? প্রস্তুতি কত দূর? জানতে নবান্নে বুধবার জরুরি বৈঠক করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠকে ছিলেন মুখ্যসচিব-সহ রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ কর্তারা। রাজ্য পুলিশের শীর্ষ আধিকারিকেরাও এই বৈঠকে ছিলেন। সূত্রের খবর, তাঁদের উৎসব নিয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়েছেন মমতা। উল্টোরথ এবং মহরম পাশাপাশি থাকায় কোনও ভাবেই যেন তাকে কেন্দ্র করে অশান্তি না ছড়ায়, পরিস্থিতি যাতে কোনও ভাবেই সাম্প্রদায়িক মোড় নিতে না-পারে, তা নিয়ে সতর্ক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। আগে থেকে প্রশাসনকে তার জন্য প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে।
আগামী শনিবার, ৫ জুলাই উল্টোরথ। দিঘার জগন্নাথ মন্দিরকে কেন্দ্র করে অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর রাজ্যে রথযাত্রা এবং উল্টোরথের উন্মাদনা অনেক বেশি। পুরীর মতো দিঘাতেও সমুদ্রের ধারে জগন্নাথ মন্দির তৈরি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। গত ৩০ এপ্রিল অক্ষয় তৃতীয়ার দিন এই মন্দিরের উদ্বোধন করেন তিনি। তার পর ২৭ জুন রথের দিনও মমতা দিঘায় ছিলেন। পুরীর আদলেই জগন্নাথ, বলরাম এবং সুভদ্রার জন্য তিনটি আলাদা রথ ছিল দিঘায়। মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে সেই রথের রশিতে টান পড়ে। সোনার ঝাড়ু উপহার দিয়েছিলেন মমতা। তা দিয়ে নিজে ঝাঁটও দেন রথযাত্রায়। শনিবার, উল্টোরথেও দিঘায় ধুমধামের আয়োজন রয়েছে। এ ছাড়া, রাজ্যের অন্যান্য প্রান্তেও উল্টোরথ পালিত হবে। তার পরের দিন, রবিবারই রয়েছে মহরম। পর পর দু’টি উৎসবকে কেন্দ্র করে যাতে কোনও রকম অশান্তি না হয়, তা নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর মমতা। সূত্রের খবর, বুধবারের বৈঠকে তা নিয়ে বিশদে আলোচনা হয়েছে। বৈঠকে ছিলেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ, রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার এবং বিভিন্ন দফতরের শীর্ষ আধিকারিক ও মন্ত্রীরা।
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী পর পর উৎসব নিয়ে আগেই হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছিলেন। ফলে তৃণমূলের আশঙ্কা, বিরোধীরা এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে অশান্তি বাধানোর চেষ্টা করবে। সেই কারণেই উৎসব নিয়ে বাড়তি সতর্ক সরকার।
আগামী ১০ জুলাই থেকে শুরু হচ্ছে শ্রাবণী মেলা। পুরো শ্রাবণ মাস জুড়ে এই মেলাকে কেন্দ্র করে তারকেশ্বরে পুণ্যার্থীদের ভিড় উপচে পড়ে। রাজ্যের নানা প্রান্ত থেকে তো বটেই, রাজ্যের বাইরে থেকেও শ্রাবণী মেলায় আসেন বহু মানুষ। মহাদেবের মাথায় জল ঢেলে পুণ্য অর্জন করেন তাঁরা। জুলাই এবং অগস্ট মাসের অধিকাংশ সময় জুড়ে তারকেশ্বরে শ্রাবণী মেলার ভিড় থাকে। এই ভিড় সামাল দিতে প্রতি বছরই হিমশিম খেতে হয় জেলা প্রশাসনকে। তা নিয়েও বুধবারের বৈঠকে আলোচনা হয়েছে বলে খবর। শ্রাবণী মেলার ভিড় নিয়ন্ত্রণের জন্য জেলা প্রশাসন কী ব্যবস্থা নিয়েছে, জানতে চেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।