• হাসপাতালে কৌস্তভের দাদাগিরি, ডাক্তারদের হুমকি বিজেপি নেতার
    প্রতিদিন | ০৩ জুলাই ২০২৫
  • অর্ণব দাস, বারাকপুর: বারাকপুর ওয়ারলেস মোড় সংলগ্ন একটি বেসরকারি হাসপাতালে বিজেপি নেতা কৌস্তভ বাগচীর তাণ্ডব! সোমবার ‘ডক্টর ডে’র রাতে আঙুল উঁচিয়ে চিকিৎসকদের হুমকি, শাসানোর অভিযোগের সেই ঘটনা ইতিমধ্যেই সমাজ মাধ্যমে ভাইরাল। যা নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে বিভিন্ন মহলে। প্রতিবাদে চিকিৎসকদের সংগঠন ডক্টর ফোরামের তরফে মুখ্যসচিবকে লিখিত জানানো হয়েছে। এদিকে বুধবার সন্ধেয় মোহনপুর থানায় কৌস্তভের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। 

    স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বারাকপুরের বাসিন্দা কার্তিক দাস এলাকার বিজেপি কর্মী। তাঁর বাবা দীনেশ দাস অসুস্থ হয়ে পড়লে প্রথমে বারাকপুর বিএন বসু মহকুমা হাসপাতাল, পরে অবস্থার অবনতি হলে মঙ্গলবার রাতে তাকে বারাকপুর ওয়ারলেস মোড় সংলগ্ন ওই মাল্টি স্পেশালিটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই মৃত্যু হয় দীনেশবাবুর। এনিয়ে পরিবারের তরফে মারাত্মক অভিযোগ তুলে বলা হয়, রোগীকে জরুরি বিভাগে রেখে চিকিৎসা করানোর বদলে কত টাকার প্যাকেজে ভর্তি করা হবে তা নিয়ে দর কষাকষি করছিল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এমন অবস্থায় রোগী ভর্তি হবে না দেখে হাসপাতালের উপস্থিত স্বাস্থ্যকর্মীদের কেউ অক্সিজেন মাস্ক খুলে দেয়। এর কিছুক্ষণের মধ্যে শ্বাসকষ্টে রোগীর মৃত্যু হয় বলেই অভিযোগ তোলে রোগীর পরিবার। এনিয়েই শুরু হয় বচসা।

    একসময় হাসপাতাল ভাঙচুরের পরিস্থিতি তৈরি হয়। খবর পেয়ে সেখানে পৌঁছন কৌস্তভ বাগচী। তিনিও চিকিৎসক-সহ স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্গে বাদানুবাদে জড়ায়। চলে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়। গোটা ঘটনা উপস্থিত অন্যান্য বিজেপি কর্মীরা ভিডিও করে। সেই ভিডিও সমাজ মাধ্যমে ভাইরাল হতেই চিকিৎসকদের সংগঠনের তরফে মুখ্যসচিবের কাছে লিখিত জানানো হয়। এনিয়ে কৌস্তভ বলেন, “রোগী মৃত্যুর ঘটনায় যেভাবে জনরোষ তৈরি হয়েছিল, আমি ছিলাম বলে হাসপাতাল ভাঙচুর হয়নি। চিকিৎসকরা মার খায়নি। হ্যাঁ উচ্চস্বরে কথা বলেছি ঠিকই, কিন্তু আমিই গণ্ডগোল থামিয়েছি। প্যাকেজ বোঝাতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এতটাই ব্যস্ত ছিল যে অক্সিজেন মাস্ক খুলে দেওয়া পরে সেটা যে পরাতে হবে সেই জ্ঞান ওদের ছিল না। এই ঘটনায় হাসপাতাল একে অপরের বিরুদ্ধে দোষ চাপাচ্ছিল, তার ভিডিও রয়েছে। আমি কোন হেনস্তা করিনি। নিজেদের দোষ ঢাকতে আবার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলছে। যা করেছি তাতে আমি বিন্দুমাত্র অনুতপ্ত নই।” হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, রোগীর একবার অ্যাটাক হয়ে গিয়েছিল, নিয়ে আসার পর আরেকবার অ্যাটাক হয়। চিকিৎসার কোনও গাফিলতি থাকলে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
  • Link to this news (প্রতিদিন)