• ট্র্যাকে জল কীভাবে? তদন্ত কমিটি গড়ল মেট্রো
    প্রতিদিন | ০৩ জুলাই ২০২৫
  • নব্যেন্দু হাজরা: মেট্রোর সুড়ঙ্গের ছাদ দিয়ে ফোয়ারার বেগে ঝরঝর করে পড়ছে জল। ভেসে যাচ্ছে লাইন। সোমবার সকালে সেন্ট্রাল এবং চাঁদনি চক স্টেশনের মাঝের এই ঘটনায় স্বভাবতই চোখ কপালে মেট্রোর আধিকারিকদের। রাস্তায় জমে থাকা জলই কি সুড়ঙ্গের ছাদ ফুটো থাকার কারণে লাইনে এল, নাকি অন্য কিছু হয়েছিল, সে বিষয়ে মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত মুখে কুলুপ এঁটেছে কর্তৃপক্ষ। সোমবার রাতে যাত্রী পরিষেবা বন্ধের পর ওই অংশ পরিদর্শন করেন মেট্রোর ইঞ্জিনিয়াররা। দিনদুয়েকের মধ্যে রিপোর্ট জমা দেবেন তাঁরা।

    তবে মেট্রোকর্তারাই জানাচ্ছেন, যেভাবে ছাদ দিয়ে স্রোতের বেগে জল টানেলে ঢুকেছে, তাতে এই সুড়ঙ্গের নিরাপত্তা নিয়েই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। তাছাড়া বর্ষার শুরুতেই যদি বৃষ্টির জল এভাবে সুড়ঙ্গে চলে আসে তাহলে অতিবৃষ্টি হলে তখন কী পরিস্থিতি হবে, সেকথাই ভাবাচ্ছে কর্তৃপক্ষকে। মেট্রোর ইঞ্জিনিয়াররা জানাচ্ছেন, কলকাতায় মেট্রো চালু হয়েছে তাও প্রায় ৪০ বছর হয়ে গিয়েছে। তবে শুরুতে তা চলেছে এসপ্ল্যানেড থেকে ভবানীপুর (বর্তমানে নেতাজি ভবন) পর্যন্ত। তারপর ধীরে ধীরে তার পরিধি বেড়েছে। তাও সুড়ঙ্গের যে অংশ দিয়ে জল ঝড়েছে তার বয়সও নেহাত কম নয়। ফলে সেখানে যে ভালোরকম সমস্যা দেখা দিয়েছে তা বলাই যায়। ইঞ্জিনিয়াররা জানাচ্ছেন, সুড়ঙ্গের ছাদের উপর রাস্তার নিকাশির কোনও পাইপলাইন আছে কি না, তা ফুটো হয়েছিল কি না, সেটাই পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে।

    উল্লেখ্য, গত শনিবারের পরে সোমবার, সুড়ঙ্গতে জল চলে আসায় বন্ধ করতে হয় আংশিক মেট্রো পরিষেবা। সুড়ঙ্গতে জল কীভাবে আসছে তা নিয়ে বিশেষ টিমও তৈরি করা হয়েছে। রাস্তার উপরে জমে থাকা জল, পুরসভার নিকাশি নালা মারফত সুড়ঙ্গতে প্রবেশ করছে কি না, তা নিয়েও বিশেষ পর্যবেক্ষণ চালাচ্ছে মেট্রো। আধিকারিকদের একাংশের দাবি, যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণে নজর থাকলে নিকাশি নালা দিয়ে জল বেরিয়ে যেত। দেওয়ালের ফাটল সহজেই ধরা পড়ত। আর এক্ষেত্রে কর্মীসংকট একটা বড় কারণ। তাই স্বাভাবিকভাবেই কলকাতা মেট্রোর সুড়ঙ্গের সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। সেই আলোচনা ঘুরে ফিরে আসছে মেট্রোর কামরাতেও। মঙ্গলবারও সকালে মেট্রোয় ওঠার সময় অনেককেই বলতে শোনা গেল, আবার মাঝপথে থমকে যাবে না তো ট্রেন! আবার কেউ বললেন, বৃষ্টি হলে রাস্তায় জল জমে জানতাম। কিন্তু মেট্রোর সুড়ঙ্গও যে ডুবে যায় এখন সেটাই দেখছি।
  • Link to this news (প্রতিদিন)