• নির্যাতিতা বেরিয়ে যাওয়ার পর রাতে কত ক্ষণ কলেজে ছিলেন অভিযুক্তেরা? কী করছিলেন? দেখছে পুলিশ, জেরা ১৬ জনকে
    আনন্দবাজার | ০২ জুলাই ২০২৫
  • সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে রাত ১০টা ৫০ মিনিট। অভিযোগপত্র বলছে, গত ২৫ জুন এই সময়ের মধ্যেই কসবার সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজের ভিতরে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছিল। কলেজের রক্ষীর ঘরে ধর্ষণ করা হয়েছিল ছাত্রীকে। তিনি অভিযোগপত্রে জানিয়েছেন, রাতে বাড়ি ফেরার সময়ে তিনি বাবাকে ডেকে নিয়েছিলেন। কিন্তু নির্যাতিতা বেরিয়ে যাওয়ার পরে আর কত ক্ষণ কলেজে ছিলেন অভিযুক্তেরা? কী করছিলেন? খতিয়ে দেখছে পুলিশ। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত মোট ১৬ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল নয়না চট্টোপাধ্যায়ও।

    পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনার দিন নির্যাতিতা বেরিয়ে যাওয়ার পরে আর খুব বেশি ক্ষণ অভিযুক্তেরা কলেজে ছিলেন না। ঘটনার পরপরই তিন জন বেরিয়ে যান। তবে তার আগের সময়টুকু তাঁরা কলেজে কী করছিলেন, কোনও প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা করেছিলেন কি না, খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কলেজ থেকে বেরোনোর পরে অভিযুক্তেরা কোথায় গিয়েছিলেন, কাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন, তদন্তকারীদের নজরে রয়েছে তা-ও। ধৃতদের ফোনকলের রেকর্ড ইতিমধ্যে খতিয়ে দেখা হয়েছে।

    সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, ঘটনার পর কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন মূল অভিযুক্ত। তাঁদের কল রেকর্ড এবং অন্যান্য তথ্যের ভিত্তিতে এই ঘটনা সম্পর্কিত লোকজনের একটি তালিকা প্রস্তুত করেছেন তদন্তকারীরা। তালিকা ধরে ধরে ১৬ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। মূলত যাঁর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ, তিনি ওই কলেজেরই প্রাক্তনী এবং অস্থায়ী কর্মী। তৃণমূলের ছাত্র পরিষদের গুরুত্বপূর্ণ পদেও ছিলেন। অভিযোগ, এর আগেও তাঁর বিরুদ্ধে অনেকে রকম অভিযোগ করেছিলেন। পুলিশের খাতায় তাঁর বিরুদ্ধে মোট ১১টি মামলা রয়েছে। মহিলাদের হেনস্থা সংক্রান্ত মামলা তার মধ্যে অন্যতম। পুলিশ জানিয়েছে, কেউ চাইলে এখনও তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করতে পারেন। তাতে কোনও বাধা নেই। আপাতত ধৃতেরা পুলিশি হেফাজতে রয়েছেন।

    কসবাকাণ্ডের তদন্তে প্রথমে কলকাতা পুলিশ ৯ সদস্যের বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করেছিল। বুধবার সেই তদন্তভার তুলে দেওয়া হয়েছে গোয়েন্দা বিভাগের হাতে। নির্যাতিতার বয়ান ইতিমধ্যে রেকর্ড করা হয়েছে। তাঁর এবং অভিযুক্তদের শারীরিক পরীক্ষা করানো হয়েছে। কলেজ ক্যাম্পাস থেকে ঘটনার দিনের সাড়ে সাত ঘণ্টার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছে পুলিশ। সূত্রের খবর, নির্যাতিতার বয়ানের সঙ্গে ফুটেজের ঘটনা মিলে গিয়েছে। ফুটেজে যে পোশাক পরে থাকতে দেখা গিয়েছিল অভিযুক্তদের, তাঁদের বাড়িতে গিয়ে সেই পোশাক খুঁজে পাওয়া গিয়েছে। ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য সে সব পাঠিয়েছেন তদন্তকারীরা। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে কলকাতা হাই কোর্টে মোট তিনটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার তার শুনানি রয়েছে। আদালতে এই মামলার সিবিআই তদন্তের আবেদন জানানো হলেও নির্যাতিতার পরিবার পুলিশের তদন্তেই আস্থা রেখেছে।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)