• চোপড়ার কালীগঞ্জে গ্রেপ্তার হরিয়ানার ৪, ময়নাগুড়ি, শিলিগুড়ির এটিএম লুটের নেপথ্যে ধৃতরা?
    বর্তমান | ০৩ জুলাই ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি ও সংবাদদাতা, চোপড়া: বিহার, উত্তরপ্রদেশের পর হরিয়ানার ‘নুহ’ গ্যাংয়ের ডেরার হদিশ! এবার চোপড়া। মঙ্গলবার রাতে চোপড়া থানার কালীগঞ্জ থেকে সশস্ত্র চার অভিযুক্তকে পাকড়াও করে পুলিস। ধৃতরা ময়নাগুড়ি ও শিলিগুড়ির এটিএম লুটের সঙ্গে জড়িত বলেই পুলিসের সন্দেহ। ধৃতদের বিষয়ে খোঁজ খবর নিচ্ছে শিলিগুড়ি ও জলপাইগুড়ি পুলিস। সমগ্র ঘটনা নিয়ে ব্যাপক আলোড়ন পড়েছে।

    ধৃতদের নাম মেহবুব খান, মুকিম খান, মহম্মদ দানিশ ও আকতার আলী। প্রত্যেকেই হরিয়ানার বাসিন্দা। ইসলামপুরের অতিরিক্ত পুলিস সুপার ডেন্ডুপ শেরপা বলেন, হরিয়ানার ওই দলটি বড় ধরনের ডাকাতির ছক কষেছিল বলে প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে। উত্তরবঙ্গের অন্যান্য অপরাধমূলক কার্যকলাপের সঙ্গে ধৃতদের যোগাযোগ থাকতে পারে বলে মনে হচ্ছে। শিলিগুড়ির ডেপুটি পুলিস কমিশনার (পূর্ব) রাকেশ সিং বলেন, ওই ধৃতদের সম্পর্কে খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে। এখানকার এটিএম লুটের সঙ্গে যোগসূত্র মিললে ধৃতদের হেফাজতে নেওয়া হবে।

    ওই রাতে টহলদারি পুলিসের জালে ফাঁসে দলটি।  পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কালীগঞ্জ এলাকায় রাস্তার ধারে দীর্ঘক্ষণ সন্দেহজনকভাবে ঘোরাঘুরি করছিল ওই দলটি। কাছে গিয়ে তাদের নাম ও ঠিকানা জানতে চান পুলিস কর্মীরা। উত্তর না দিয়ে দলটি সেখান থেকে পালানোর চেষ্টা করে বলে অভিযোগ। তখন ধাওয়া করে অভিযুক্তদের আটক করা হয়। তল্লাশি চালিয়ে ধারালো অস্ত্র উদ্ধারের পর অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিকভাবে পুলিসের সন্দেহ, ধৃতরা হরিয়ানার ‘নুহ’ গ্যাংয়ের সদস্য। ঘটনার রাতে ধৃতরা বড় কোনও অপারেশন চালানোর ছক কষেছিল।           

    বুধবার ধৃতদের ইসলামপুর মহকুমা আদালতে তোলা হয়। ধৃতদের জামিনের আবেদন খারিজ করা হয়েছে। ইসলামপুর মহকুমা আদালতের সরকারি আইনজীবী জনার্দন প্রসাদ সিংহ বলেন, ধৃতরা ডাকাতির উদ্দেশ্যে জড়ো হয়েছিল বলে পুলিসের সন্দেহ। ধৃতদের ছ’দিনের জন্য পুলিস হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

    দু’সপ্তাহের মধ্যে শিলিগুড়িতে পর পর দু’টি গ্যাংয়ের ডেরার হদিশ পেয়েছে পুলিস। ফাঁসিদেওয়ায় বিহারের এবং বাগডোগরায় উত্তরপ্রদেশের গ্যাংয়ের ঘাঁটি মিলেছে। এবার চোপড়ায় মিলল হরিয়ানার সন্দেহভাজন নুহ গ্যাংয়ের ডেরার হদিশ। চুটিয়াখোর গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীনে কালীগঞ্জ বাজার। পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় দেড় মাস আগে সেখানে একটি বাড়ি ভাড়া নিয়েছিল ধৃতরা। এদের কেউ বিরিয়ানির কারিগর পরিচয় দিয়েছিল। আবার কেউ কেউ জল প্রকল্পের নির্মাণ শ্রমিকের পরিচয় দেয়। দিনের অধিকাংশ সময় ধৃতরা বাড়িতেই থাকত। সন্ধ্যার পর এরা বাড়ি থেকে বের হতো। ধৃতরা জলপাইগুড়ির ময়নাগুড়ি, শিলিগুড়ির চম্পাসারির এবং রায়গঞ্জ ও ইটাহারের এটিএম লুটের সঙ্গে জড়িত বলেই প্রাথমিকভাবে পুলিসের অনুমান। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, হরিয়ানার নুহ গ্যাংয়ের সদস্যরা একাধিক দলে বিভক্ত হয়ে উত্তরবঙ্গে এসেছে। যারা লরি চালক, খালাসি, শ্রমিকের পরিচয়ে বিভিন্ন এলাকা রেকি করছে। সুযোগ বুঝে এটিএম লুট করে চম্পট দিচ্ছে। ধৃতরা ওই গ্যাংয়ের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সদস্য বলেই সন্দেহ।           

    জুন মাসে ময়নাগুড়ির এটিএম থেকে ৫৪ লক্ষ টাকা এবং চম্পাসারির এটিএম থেকে ১০ লক্ষ টাকার বেশি লুট করা হয়। সংশ্লিষ্ট দু’টি ঘটনায় এখনও দু’জন করে দুষ্কৃতী অধরা।
  • Link to this news (বর্তমান)