• তিনদিন রোগী দেখেন ডাক্তার, বাকি দিন চিকিত্সকের ভূমিকায় গ্রুপ ‘ডি’ কর্মী! ইন্ডোর পরিষেবা বন্ধ, বাহাদুরপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভোগান্তি
    বর্তমান | ০৩ জুলাই ২০২৫
  • সংবাদদাতা, হবিবপুর: সপ্তাহে দুই থেকে তিনদিন চিকিৎসক বসেন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। বাকিদিন গ্রুপ ‘ডি’ কর্মীরাই দিচ্ছেন প্রাথমিক চিকিৎসা পরিষেবা। বেড সহ ইমারজেন্সি চিকিৎসা পরিষেবা বন্ধ প্রায় পাঁচ বছর। ফলে গর্ভবতী সহ সমস্ত ইমারজেন্সি রোগীকে নিয়ে যেতে হয় ২০ কিমি দূরের বুলবুলচণ্ডী গ্রামীণ হাসপাতালে। হবিবপুর ব্লকের বৈদ্যপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বাহাদুরপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র নিয়ে মানুষের অভিযোগের শেষ নেই। অবিলম্বে ২৪ ঘণ্টা স্থায়ী চিকিৎসক রেখে ইন্ডোর এবং আউটডোর পরিষেবা চালুর দাবি তুলেছেন বাসিন্দারা। না হলে মুখ্যমন্ত্রীকে লিখিতভাবে জানাবেন বাসিন্দারা। এ ব্যাপারে হবিবপুর ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক বাবর আলি বলেন, একজন ডাক্তার, ফার্মাসিস্ট ও দু’জন গ্রুপ ‘ডি’ কর্মী সোম থেকে শনি পরিষেবা দিচ্ছেন। ইতিমধ্যে কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো রয়েছে। আবার জানাব। বাকি সমস্যার সমাধানের চেষ্টা হবে।

    স্থানীয়রা বলছেন, বৈদ্যপুর, আকতৈল, জাজইল, কানতুর্কা সহ বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার প্রায় ৬০ হাজার সাধারণ মানুষের চিকিৎসার একমাত্র ভরসা এই স্বাস্থ্যকেন্দ্র। এখানে সমস্ত রকমের পরিকাঠামো থাকা সত্ত্বেও ইন্ডোর পরিষেবা পুরোপুরি বন্ধ। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বিল্ডিং সহ বিভিন্ন সরঞ্জাম দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকায় নষ্ট হতে বসেছে। একাধিকবার প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করার পরেও চালু হয়নি ইন্ডোর পরিষেবা। অবিলম্বে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সব পরিষেবা চালু না হলে বড় আন্দোলনে নামার পরিকল্পনা নিয়েছেন গ্রামবাসী।

    তাঁদের অভিযোগ, সপ্তাহে দুই-তিনদিন ছাড়া আউটডোরে চিকিৎসককে পাওয়া যায় না। বাকি দিনগুলিতে নার্স এই পরিষেবা দিতেন। কয়েক মাস  তিনিও ছুটিতে। তাই গ্রুপ ‘ডি’ কর্মীরাই সেখানে চিকিত্সকের ভূমিকায়। জ্বর, সর্দি, গা-হাত ব্যথার ওষুধ দিচ্ছেন গ্রুপ-ডি কর্মীরা। পূর্ণিমা অধিকারী নামে স্থানীয় এক বধূ জানান, জ্বর, গা-হাতে ব্যথা সহ ছোটখাটো সমস্যায় ওষুধ আউটডোরে পাওয়া যায়। বেড পরিষেবা বন্ধ। নিয়মিত কোনও ডাক্তারবাবু স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বসেন না। বদু অধিকারী নামে এক গ্রামবাসীর অভিযোগ, ২০১৯ সালে বেড ব্যবস্থা চালু হয়েছিল। লকডাউনের কিছু সময় পর থেকে এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়মিত পরিষেবা পাওয়া যায় না। বেড পরিষেবা বন্ধ। আমরা জেলা, রাজ্য স্বাস্থ্যদপ্তরে লিখিতভাবে সমস্যাটি জানিয়েছিলাম। তারপরও বেডের ব্যবস্থা চালু হয়নি। এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়মিত বেড পরিষেবা সহ চিকিৎসা ব্যবস্থা চালু হলে বৈদ্যপুর, জাজইল, আকতৈল সহ কানতুর্কা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রায় ৫০ থেকে ৬০ হাজার গ্রামবাসী উপকৃত হবেন। অবিলম্বে এই স্বাস্থ্যকেন্দ্র সংস্কার করে চিকিৎসা পরিষেবা চালু না করা হলে আমরা আন্দোলনে নামব। সমস্যার কথা মেনে নেন বাহাদুরপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রের রোগীকল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন মণ্ডল। তিনি জানান, দীর্ঘদিন ধরে এখানে বেডের পরিষেবা চালুর জন্য জেলার বিভিন্ন দপ্তরে জানানো হয়েছে। আবার প্রশাসনের দ্বারস্থ হব।  বৈদ্যপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বাহাদুরপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বর্হিবিভাগে মাত্র তিনদিন চিকিৎসক বসেন।-নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)