ফাঁকিবাজি? মাইনে আটকে দেওয়া হল ১০ চিকিৎসকের, ন্যাশনাল মেডিক্যাল কাউন্সিলের রেডজোনে এনবিএমসি
বর্তমান | ০৩ জুলাই ২০২৫
সঞ্জিত সেনগুপ্ত, শিলিগুড়ি: ডাক্তারদের ফাঁকিবাজি বন্ধ করতে বেতন আটকানোর পথে হাঁটল উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ। কড়া পদক্ষেপ করে ১০ অধ্যাপক চিকিৎসকের জুন মাসের বেতন আটকে রাখা হল। অধ্যাপক চিকিৎসকদের একাংশ দিনের পর দিন কলেজ হাসপাতালে না এসেও বেতন পেয়ে যেতেন। এই অভিযোগ দীর্ঘদিনের। এতে পরিষেবা বিঘ্নিত হওয়ার পাশাপাশি ন্যাশনাল মেডিক্যাল কাউন্সিলের আতশকাচের তলায় রয়েছে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ। তাই এবার অধ্যাপক চিকিৎসকদের ফাঁকিবাজি বন্ধ করতে ১০ জনের জুন মাসের বেতন আটকে দেওয়া হয়েছে। কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, বেতন পেতে গেলে তাঁদের অনুপস্থিতির দিনগুলি ছুটি নিতে হবে। ছুটি না থাকলে বেতন কাটা যাবে। ১০ চিকিৎসককে নোটিসও পাঠানো হয়েছে।
এনিয়ে অধ্যাপক চিকিৎসকদের একাংশের পাল্টা অভিযোগ, ১০ জনের বাইরে আরও অনেক অধ্যাপক চিকিৎসক রয়েছেন, যাঁরা দিনের পর দিন হাসপাতালে আসেন না। কিন্তু তাঁদের বেতন আটকে রাখা হয়নি। এক্ষেত্রে নেফ্রোলজি, অর্থোপেডিক বিভাগ নিয়ে সবচেয়ে বেশি অভিযোগ। এক চিকিৎসক বলেন, নেফ্রোলজি বিভাগে পর্যাপ্ত স্থায়ী চিকিৎসক থাকা সত্ত্বেও চুক্তির ভিত্তিতে আনা চিকিৎসককে দিয়ে আউটডোর চালাতে হচ্ছে। নেফ্রোলজি বিভাগে যেসব স্থায়ী অধ্যাপক চিকিৎসক রয়েছেন, তাঁদের অধিকাংশই নিয়মিত মেডিক্যাল কলেজে আসেন না।
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের প্রিন্সিপাল সঞ্জয় মল্লিক অবশ্য গণ অনুপস্থিতির অভিযোগ মানতে নারাজ। তিনি বলেন, অধ্যাপক চিকিৎসকদের একাংশের ফাঁকিবাজির কারণে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল ন্যাশনাল মেডিক্যাল কাউন্সিলের রেডজোনে পড়ে গিয়েছে। এই মেডিক্যাল কলেজকে জরিমানাও করা হয়েছে। তাই ডাক্তারদের ফাঁকিবাজি বন্ধ করতে ১০ জনের বেতন আটকে রাখা হয়েছে। তাঁদের বলা হয়েছে, জুন মাসে তাঁরা যে ক’দিন অনুপস্থিত ছিলেন, সেই দিনগুলিতে ছুটির আবেদন করতে। ছুটি নিলে তবেই বেতন ছেড়ে দেওয়া হবে।
কলেজে নিয়মিত না আসা ১০ জনের বাইরে আরও অনেক চিকিৎসক রয়েছেন, এই অভিযোগ ঠিক নয় বলে জানান সঞ্জয় মল্লিক। তিনি বলেন, যাঁদের কথা বলা হচ্ছে, তাঁরা ছুটি নিয়ে কলেজে আসেননি। তাঁদের ছুটির আবেদনও রয়েছে। কেউ তাঁর প্রাপ্য ছুটি নিতেই পারেন। এখানে কারচুপি বা পক্ষপাতিত্বের বিষয় নেই।
প্রিন্সিপাল জানান, বায়োমেট্রিকে প্রত্যেককে হাজিরা দিতে হয়। বায়োমেট্রিক দেখেই ডাক্তারদের ফাঁকিবাজির দিকটি নজরদারি রাখা হচ্ছে। ছুটি না নিয়ে কলেজে অনুপস্থিত থাকলে সেই অধ্যাপক চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে নিয়মানুযায়ী পদক্ষেপ করতেই হবে।