• ছাঁটাই শ্রমিকদের পুনর্বহালের দাবিতে বিধায়কের নেতৃত্বে আন্দোলন বন্দরে
    বর্তমান | ০৩ জুলাই ২০২৫
  • সংবাদদাতা, হলদিয়া: বুধবার ফের ছাঁটাই শ্রমিকদের নিয়ে তাঁদের কাজে পুনর্বহালের দাবিতে বন্দরের বেসরকারি সংস্থার অফিস ঘেরাও করলেন বিধায়ক তাপসী মণ্ডল। ওই শ্রমিকরা হলদিয়া বন্দরে পণ্য ওঠানামার কাজে যুক্ত একটি স্টিভেডরিং এজেন্সিতে কাজ করতেন। গত ১২ জুন ওই সংস্থা ৫০ জন শ্রমিককে বিনা নোটিসে ছাঁটাই করে বলে অভিযোগ। এঁরা ২০-২৫ বছর ধরে ওই সংস্থায় কাজ করছেন। তাঁদের অভিযোগ, অফিসে ডেকে চা বিস্কুট খাইয়ে তাঁদের ছাঁটাই করে কর্তৃপক্ষ। 

    এমনকী, শ্রমিকদের আইডি লক করে দেওয়ায় কাজে যোগ দেওয়া শ্রমিকরা গেটে আটকে পড়েন। সিআইএসএফ তাঁদের অনুপ্রবেশকারী বলে আটকায়। শেষমেশ হাতেপায়ে ধরে মুক্তি পান ওই শ্রমিকরা। এরপরই ওই ছাঁটাই শ্রমিকরা তাঁদের পুনরায় কাজে নিয়োগের আবেদন জানিয়ে বিধায়কের দ্বারস্থ হন। তাঁদের অসহায়তার কথা জানিয়ে বিধায়ককে উদ্যোগ নেওয়ার আর্জি জানান শ্রমিকরা। এরপরই হলদিয়ার বিধায়ক গত ১৮ জুন প্রথমবার শ্রমিকদের পুনর্বহালের দাবিতে ওই সংস্থার অফিস ঘেরাও করেন। তবে ওইদিন সংস্থার কেউই বিধায়কের সঙ্গে দেখা করতে কিংবা কথা বলতে চাননি। পরে ওই সংস্থা আলোচনার জন্য সময় চেয়ে নেয়। 

    ওই শ্রমিকদের পুনর্বহালের দাবিতে আইএনটিটিইউসির পাশাপাশি পথে নামে শ্রমিক সংগঠন সিটু›ও। আইএনটিটিইউসি চাপ বাড়াতে থাকে। সংস্থার আধিকারিকদের নিয়ে তমলুকে আইএনটিটিইউসির জেলা কোর কমিটি বৈঠক করেন। ওইদিন মিটিংয়ে সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল আইএনটিটিইউসি। কিন্তু ছাঁটাই শ্রমিকদের কাজে পুনর্বহাল না করায় দু’ সপ্তাহ পর এদিন ফের বড় আকারে আন্দোলনে শুরু হয়েছে বন্দরে। এদিন বিধায়কের নেতৃত্বে আইএনটিটিইউসির ঝান্ডা কাঁধে নিয়ে মিছিল করে গিয়ে ওই সংস্থার অফিস ঘেরাও করা হয়। শ্রমিকদের দাবি, তাঁদের কাজে পুনর্বহাল না করা পর্যন্ত অফিস খুলতে দেওয়া হবে না। ফলে এদিন ওই সংস্থার অফিসার ও কর্মীরা এবং সংস্থার মালিকও অফিসে ঢুকতে পারেননি বলে অভিযোগ। সকাল ৯টা থেকে সন্ধে পর্যন্ত দিনভর ওই সংস্থার অফিস ঘেরাও করে রাখা হয়। ঘটনাস্থলে পুলিস মোতায়েন ছিল। 

    অভিযোগ, ছাঁটাই শ্রমিকদের আন্দোলনে যোগ দেওয়ার জন্য এদিন বন্দরের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বন্দরের রেলওয়ে ওয়াগন থেকে কয়লা নামানোর কাজে যুক্ত শ্রমিকদের আইএনটিটিইউসি ঝান্ডা নিয়ে কাজে বাধা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। কর্মরত শ্রমিকরা অবশ্য তাদের ফিরিয়ে দেন। ঘটনাস্থলে বন্দরের আধিকারিক ও পুলিস ছুটে আসে। বিধায়ক বলেন, আন্দোলনে যোগ দেওয়ার জন্য আবেদন জানানো হয়েছিল, কাউকে জোর করা হয়নি। তবে ওই সংস্থাকে এদিন সন্ধে ৬টা পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারা শ্রমিকদের কাজে পুনর্বহাল না করায় বৃহস্পতিবার থেকে লাগাতর অবস্থান, ঘেরাও ও শ্রমিক বিক্ষোভ চলবে বন্দরে। ওই সংস্থার তরফে কেউ মুখ খুলতে চায়নি। তবে এই আন্দোলন বাড়তে থাকলে বন্দরের কাজে প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা বন্দর কর্তৃপক্ষের।-নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)