ধৃত সিভিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলতে খুন-ধর্ষণের হুমকি মা ও দিদিকে, চাঞ্চল্য
বর্তমান | ০৩ জুলাই ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, তমলুক: সিভিক ভলান্টিয়ারের বিরুদ্ধে এফআইআর না তুললে পাঁশকুড়ার চিপস কাণ্ডে আত্মঘাতী স্কুলপড়ুয়ার মা ও দিদিকে ধর্ষণ ও খুনের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠল। মঙ্গলবার বাড়িতে চড়াও হয়ে ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ারের ঘনিষ্ঠরা হুমকি দিয়েছে বলে অভিযোগ। ঘটনার জেরে আতঙ্কিত ওই পরিবার। রাতেই মৃত ছাত্র কৃষ্ণেন্দু দাসের মা সুমিত্রা দাস পাঁশকুড়া থানায় এফআইআর করেছেন। হুমকি দেওয়ার ঘটনায় একজন হোমগার্ড, একজন সিভিক ভলান্টিয়ার ও তাদের পরিবার যুক্ত রয়েছে বলে অভিযোগ। অভিযুক্তরা ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ার শুভঙ্কর দীক্ষিতের ঘনিষ্ঠ ও আত্মীয়।
সুমিত্রাদেবী বলেন, মঙ্গলবার সকাল ১০টা নাগাদ গোপীমোহনপুর গ্রাম থেকে সিভিক ভলান্টিয়ারের ঘনিষ্ঠ কয়েকজন আমাদের বাড়িতে আসে। শুভঙ্করের বিরুদ্ধে কেস তুলে নেওয়ার জন্য চাপ তৈরি করে। আমরা রাজি না হওয়ায় দু’পক্ষের মধ্যে বচসা হয়। সেইসময় ধর্ষণ ও খুনের হুমকি দেওয়া হয়। ছেলের মৃত্যুর পর অনেকেই আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। কিন্তু, অভিযুক্ত সিভিকের বাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় অনেকের বিরুদ্ধে মামলা হওয়ায় এবং বেশ কয়েকজন গ্রেপ্তার হওয়ার পর আমরা নিঃসঙ্গ। এই মুহূর্তে ভয়ে কেউ পাশে আসতে চাইছেন না। এই অবস্থায় বাধ্য হয়ে থানায় এফআইআর করেছি।
গত ২২মে তমলুক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কৃষ্ণেন্দু মারা যায়। ২৫তারিখ মৃত ছাত্রের মা সুমিত্রাদেবী পাঁশকুড়া থানায় সিভিক ভলান্টিয়ার শুভঙ্করের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেন। পরদিন তাকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেন পুলিস সুপার সৌম্যদীপ ভট্টাচার্য। ৮জুন অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ারকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার পক্ষ নিয়ে গোপীমোহনপুর গ্রামের একজন হোমগার্ড ও আরও এক সিভিক ভলান্টিয়ার সহ তাদের পরিবারের লোকজন সুমিত্রাদেবীর বাড়িতে চড়াও হয় বলে অভিযোগ। অবিলম্বে মামলা না তুললে পরিণতি ভালো হবে না বলে হুমকি দেওয়া হয়।
কেশাপাট পঞ্চায়েতের প্রধান বিজেপির নমিতা বেসরা সোরেন বলেন, মঙ্গলবার সুমিত্রা দাসের বাড়ি চড়াও হয়ে হুমকি দেওয়ার কথা জানিয়ে পরিবারের লোকজন আমার দ্বারস্থ হন। আমি ওই বুথের নির্বাচিত সদস্যা। নিহত ছাত্রের মা সুমিত্রাদেবী আমার কাছে একটি অভিযোগ জমা দেন। আমি তাঁদের থানায় যাওয়ার পরামর্শ দিই। সেইমতো ওরা থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করেছেন।
পাঁশকুড়া থানার পুলিস জানিয়েছে, অভিযোগ নথিভুক্ত হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র এলাকায় তুমুল আলোড়ন পড়েছে। মানুষজন অবিলম্বে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের দাবিতে সরব হয়েছেন। তাঁরা জানিয়েছেন, অবিলম্বে পুলিসকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।