নিজস্ব প্রতিনিধি, আরামবাগ: কেন্দ্রীয় সরকার টাকা বন্ধ করেছে। তার জেরে থমকে আরামবাগ মহকুমার জল জীবন মিশন প্রকল্পের কাজ। বাড়ি বাড়ি পানীয় জলের পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বাসিন্দারা। কবে মিলতে পারে প্রকল্পের ফান্ড, তা নিয়েও কোনও সদুত্তর পাওয়া যায়নি। হুগলি জেলা জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তরের এক ইঞ্জিনিয়ার বলেন, জেলায় প্রায় ন’লক্ষ বাড়িতে নল বাহিত পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার টার্গেট রয়েছে। এখনও পর্যন্ত প্রায় ছ’লক্ষ বাড়িতে সংযোগ হয়েছে। কিন্তু, টাকা না পাওয়ায় মাঝপথে আপাতত থমকে রয়েছে কাজ। কিছু জায়গায় কাজ চলছে। ফান্ড এলে ফের কাজে গতি বাড়বে।
পিএইচই-র আরামবাগ মহকুমার এক আধিকারিক বলেন, মহকুমাজুড়ে প্রায় ৬০টি জল প্রকল্পের কাজ চলছিল। অনেক জায়গাতেই কাজ এখন আর হচ্ছে না। কিছু জায়গায় জমি পাওয়া গেলেও তহবিলের অভাবে কাজ শুরু করা যাচ্ছে না।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের যৌথ উদ্যোগে জল জীবন মিশন প্রকল্পের কাজ চলছিল। চলতি বছরের মার্চ মাসের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করার টার্গেট নেওয়া হয়েছিল। যদিও বর্তমানে তার মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২৮ সাল করা হয়েছে। এক্ষেত্রেও বাংলাকে ‘বঞ্চনা’র অভিযোগ উঠেছে। কেন্দ্রীয় সরকার প্রকল্পের জন্য টাকা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। প্রকল্প গড়তে তহবিল না মেলায় অনেক জায়গাতেই কাজ থমকে গিয়েছে। যার খেসারত সাধারণ মানুষকে গুনতে হচ্ছে।
জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি বছরে তীব্র গ্রীষ্মে আরামবাগ মহকুমার বহু জায়গায় পানীয় জলের সঙ্কট দেখা যায়। পিএইচই জলের ট্যাঙ্ক পাঠিয়ে পরিষেবা স্বাভাবিক করার চেষ্টা করে। কিন্তু, তাতেও জলকষ্ট মেটেনি।
হুগলি জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ দপ্তরের কর্মাধ্যক্ষ দেবীপ্রসাদ রক্ষিত বলেন, কেন্দ্র প্রকল্পের মেয়াদ বাড়িয়ে তহবিল দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। তারফলে কাজের গতি শ্লথ হয়েছে। পাম্প ও ভাল্ব অপারেটরদের মাইনে নিয়েও সমস্যা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেলার বাসিন্দাদের কথা ভেবে ফান্ড দিচ্ছেন। কেন্দ্রীয় সরকার সবকিছুতেই বাংলাকে বঞ্চনা করছে। জলের ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে।
গোঘাট-১ এর কর্মাধ্যক্ষ প্রদীপ রায় বলেন, গোঘাটে বিভিন্ন জায়গায় জল কষ্ট রয়েছে। কেন্দ্র টাকা দিলে কাজগুলি হয়তো গতি পেত। পুরশুড়ার বিজেপি বিধায়ক বিমান ঘোষ বলেন, কেন্দ্রীয় বঞ্চনার অভিযোগ ভিত্তিহীন। কেন্দ্র অধিকাংশ টাকা দিয়েছে। কিন্তু, রাজ্য কেন্দ্রের টাকা ব্যবহার করলেও নিজেদের বরাদ্দ দেয়নি। তারফলে প্রকল্পের অবস্থা বেহাল হয়েছে। কোথাও পাইপ বসলেও জল পড়ছে না। কোথাও আবার ট্যাপ বসলেও জল পড়েনি। এই পরিস্থিতিতে তৃণমূল রাজনৈতিক ফায়দা তোলার চেষ্টা করছে। নিজস্ব চিত্র