কসবার কাণ্ডের তদন্তভার হাতে নিল কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ
দৈনিক স্টেটসম্যান | ০৩ জুলাই ২০২৫
কসবার আইন কলেজের ধর্ষণকাণ্ডের তদন্তভার গ্রহণ করেছে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে কলকাতা পুলিশ। বুধবার দুপুরেই কসবা থানা থেকে ধর্ষণকাণ্ডের কেস ডায়েরি গোয়েন্দা বিভাগের হাতে হস্তান্তর করা হয়েছে।
কসবার কলেজে গণধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর পরই বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করে তদন্ত করেছে কলকাতা পুলিশ। প্রথমে পাঁচ সদস্যের তদন্তকারী দল গঠন করা হলেও পরে তা বাড়িয়ে ৯ জন করা হয়। এই দলের নেতৃত্বে ছিলেন কলকাতা পুলিশের অ্যাসিস্ট্যান্ট পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ শহরতলি) প্রদীপকুমার ঘোষাল। এ বার সেই মামলায় তদন্তভার দেওয়া হল কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগকে। এই মামলায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আরও কয়েকটি ধারা যোগ করেছে কলকাতা পুলিশ। প্রথমে গণধর্ষণের মামলা রুজু করা হলেও পরে অপহরণ, অস্ত্র দিয়ে আঘাতের মতো ধারাগুলিও যুক্ত করা হয়।
উল্লেখ্য, গত ২৫ জুন সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজে এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। নির্যাতিতার অভিযোগ, প্রথমে কলেজের ইউনিয়ন রুমে তাঁকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়। পরে তাঁকে পাশের নিরাপত্তারক্ষীর ঘরে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করা হয়। সেই সময় রক্ষীকে বাইরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এই ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার মূল অভিযুক্ত সহ ৩ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে কলেজের নিরাপত্তারক্ষীকে গ্রেপ্তার করা হয়। ঘটনার পরেই সিট গঠন করে তদন্ত শুরু করে পুলিশ।
তদন্তে নেমে নির্যাতিতার বয়ান রেকর্ড করেছে পুলিশ। পাশাপাশি অভিযুক্তদের বাড়ি থেকেও তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। মূল অভিযুক্ত যে পোশাক পরে ধর্ষণ করেছিলেন বলে অভিযোগ সেই পোশাকটিও তাঁর বাড়ি থেকে বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। সেটি ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। ঘটনার আগে ও পরে অভিযুক্তেরা কাদের সঙ্গে কথা বলেছিলেন, কাদের ফোন করেছিলেন ইত্যাদি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি তাঁদের কলরেকর্ডও সংগ্রহ করা হয়েছে। ঘটনার আগে ও পরে অভিযুক্তরা কোথায় ছিলেন তা জানতে ফোনের লোকেশন ট্র্যাক করছেন তদন্তকারীরা। খতিয়ে দেখা হচ্ছে কলেজের সিসিটিভি ফুটেজও। অভিযুক্তরা প্রমাণ লোপাট করার চেষ্টা করেছিলেন কি না তা–ও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।
কসবা কাণ্ডে সিবিআই তদন্ত চেয়ে কলকাতা হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টে একাধিক জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে। তবে সিবিআই তদন্তে আপত্তি জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন নির্যাতিতার পরিবার। পরিবার চায়, কলকাতা পুলিশ যেভাবে তদন্ত করছে সেভাবেই যেন তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।