• জেলা পরিষদের দরপত্রে অনিয়মের নালিশ হুগলিতে
    আনন্দবাজার | ০৩ জুলাই ২০২৫
  • ৩১টি কাজ। তার ২১টির জন্য হুগলি জেলা পরিষদে দরপত্র ডাকা হয়েছে মাত্র একটি।

    এই ঘটনা সম্পূর্ণ বেআইনি বলে দাবি ঠিকাদারদের একাংশের। ‘বিশেষ কাউকে’ সুবিধা পাইয়ে দিতেই এ কাজ করা হয়েছে বলে তাদের দাবি। জেলাশাসক-সহ সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন ঠিকাদারদের সংগঠন ‘অ্যাসোসিয়েশন অব হুগলি ডিস্ট্রিক্ট কো-অপারেটিভ ইঞ্জিনিয়ার্স।’

    কেন্দ্রের পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের প্রায় ২২ কোটি টাকায় বিভিন্ন ব্লকে ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলি তৈরির কথা। টেন্ডার ডেকেছে হুগলি জেলা পরিষদ।সভাধিপতি রঞ্জন ধাড়া অবশ্য এতে অনিয়ম দেখছেন না। ২১টি ভবনের দরপত্র এক সঙ্গে ডাকা হয়েছে বলে স্বীকার করলেও তাঁর দাবি, ‘‘নিয়ম মেনেই সব হয়েছে।’’ অনিয়মের অভিযোগ মানেননি জেলা বাস্তুকার (জেলা পরিষদ) রামাচরণ চৌধুরীও। শুধু জানান, জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষকে জানিয়েই দরপত্র ডাকা হয়েছে।

    অভিযোগকারী ঠিকাদার সংস্থার সম্পাদক রুদ্রেন্দ্রপ্রসাদ পাকড়াশি জানান, অঞ্চল অনুযায়ী নির্মাণ সামগ্রীর দাম ভিন্ন হবে, এটাই স্বাভাবিক। সে ক্ষেত্রে ‘রেট চার্ট’ ভিন্ন হওয়ায় টেন্ডারও আলাদা হতে হবে। পাশাপাশি, একটি ভবন তৈরির ক্ষেত্রে কতগুলি পিলার হবে, কত পরিমাণ রড লাগবে— সমস্ত কিছু বিজ্ঞপ্তিতে দেওয়া থাকবে। কিন্তু জেলা পরিষদের বিজ্ঞপ্তিতে সে সব নেই। বিষয়টি বেআইনি বলেই দাবি তাঁর।

    জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ (পূর্ত) বিজন বেসরাও বলেন, ‘‘দরপত্রের বিজ্ঞপ্তিতে ভবন তৈরির পুঙ্খানুপুঙ্খ হিসেব (ডিটেল এস্টিমেট) থাকাটা বাধ্যতামূলক। এ ক্ষেত্রে কী হয়েছে বা কেন হয়েছে তা নিয়ে জেলা বাস্তুকারের সঙ্গে কথা বলব।’’

    ঠিকাদার সংগঠনের সদস্যেরা জানান, জেলার বিভিন্ন ব্লকে ৩১টি স্বাস্থ্যকেন্দ্র ভবন তৈরির কথা। স্বচ্ছতা বজায় রাখতে প্রতিটি ভবনের জন্য আলাদা দরপত্র ডাকার কথা বলে দাবি তাঁদের। সংগঠন সূত্রের খবর, ২১টি ভবনের জন্য ১৩ কোটি ৬১ লক্ষ টাকার একটি মাত্র দরপত্র ডাকা হয়েছে। বাকি ১০টির ক্ষেত্রে তিনটি (দু’টিতে তিনটি করে ভবন, একটিতে চারটি) দরপত্র ডাকা হয়েছে। প্রশাসন সূত্রের খবর, ১৬ জুন দরপত্রের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। ১৭ জুন থেকে ৭ জুলাই পর্যন্ত অনলাইনে দরপত্র জমা দেওয়ার দিন ধার্য হয়।

    ওই সদস্যদের অনেকেরই বক্তব্য, এক সঙ্গে ২১টি ভবনের জন্য দরপত্রে যোগ দেওয়ার মতো আর্থিক ক্ষমতা অনেকেরই নেই। তাই প্রতিযোগিতা কার্যত হবেই না। আবার, প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় মুষ্টিমেয় যে সব ঠিকাদার দরপত্রে যোগ দেবেন, তাঁরা বেশি ছাড় দেওয়ার রাস্তায় যাবেন না। ফলে, আখেরে লোকসান হবে সরকারের। তাঁদের অভিযোগ, ‘পছন্দসই’ ঠিকাদারকে বরাত পাইয়ে দিতেই এই অনিয়ম। দরপত্রের বিজ্ঞপ্তিতে ভবন নির্মাণের নিয়মাবলীও সম্পূর্ণ দেওয়া নেই বলে দাবি সংগঠনের।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)