খুঁটি পুঁতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জমি দখলের অভিযোগ উঠল। বুধবার আলিপুরদুয়ার শহর লাগোয়া তপসিখাতার পররপাড় বিএফপি বিদ্যালয়ের ঘটনা। ঘটনার প্রতিবাদে এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে আলিপুরদুয়ার-সোনাপুর সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান বিদ্যালয়ের অভিভাবক ও পড়ুয়ারা। যার জেরে আলিপুরদুয়ার ও ফালাকাটার মধ্যে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ বিদ্যালয়ের মাঠে পুঁতে রাখা খুঁটিও উপড়ে দেন। স্কুলের জমি দখলের অভিযোগের তদন্ত করে দ্রুত রিপোর্ট দিতে স্থানীয় অবর বিদ্যালয় পরিদর্শককে নির্দেশ দিয়েছেন জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের (ডিপিএসসি) কর্তারা।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজা চট্টোপাধ্যায় নামে এক ব্যক্তি দীর্ঘ দিন ধরে বিদ্যালয়ের জমির একাংশ তাঁর বলে দাবি করে আসছিলেন। গত সোমবার জমির মাপজোক করেন তিনি। অভিযোগ, ওই রাতেই স্কুল মাঠের একাংশে কংক্রিটের খুঁটি পুঁতে দেওয়া হয়। প্রধান শিক্ষক মানিক দত্ত বলেন, “স্কুল জমির একাংশ তাঁর বলে দাবি করে রাজা চট্টোপাধ্যায় যত বার আমাদের কাছে এসেছেন, তত বারই তাঁকে জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদে কথা বলতে অনুরোধ করেছি। তা না-করে স্কুলের মাঠে খুঁটি পুঁতে দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ ছাড়াও স্থানীয় প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানিয়েছি।”
স্কুলের পড়ুয়া ও অভিভাবকদের একাংশের অভিযোগ, যে ভাবে মাঠে খুঁটি পুঁতে দেওয়া হয়েছে, তাতে স্কুলের জমির একাংশই বাদ পড়ে যাচ্ছে। পড়ুয়াদের খেলার মাঠ, মিডডে মিলের রান্নাঘরও তার মধ্যে পড়ছে।
পাপিয়া রায় নামে এক অভিভাবক বলেন, ‘‘পড়ুয়াদের খেলার মাঠ, মিডডে মিল রান্নার ঘর দখল করা যাবে না। প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপ করা উচিত।’’
স্কুলের মাঠে খুঁটি পোঁতার কথা স্বীকার করেছেন রাজা চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “জমির যে অংশে খুঁটি পোঁতা হয়েছে, সেটি আমার ঠাকুমার নামে রয়েছে। যার সব কাগজপত্র আমাদের কাছে রয়েছে। ঠাকুমা মারা যাওয়ায় বংশানুক্রমে ওই জমিটি আমাদের প্রাপ্য। বিষয়টি নিয়ে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে অনেক বার বলেছি। কোনও সুরাহা না হওয়ায় মাপজোক করে সেখানে খুঁটি পুঁতি।”বামপন্থী শিক্ষক সংগঠন এবিপিটিএ-র জেলা সম্পাদক প্রসেনজিৎ রায় বলেন, ‘‘শিক্ষার অধিকার আইনে স্কুলের সীমানা পাঁচিল করার কথা থাকলেও সিংহভাগ স্কুলেই তা হয়নি। আমরা মনে করি জমির দলিল, দানপত্র, খতিয়ান ধরে স্কুলের জমি চিহ্নিত করে পাঁচিল বা খুঁটি দিয়ে তারের বেড়া দেওয়া উচিত।’’
জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান পরিতোষ মণ্ডল বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি। অবর বিদ্যালয় পরিদর্শককে দ্রুত এর তদন্ত করে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।”