• ‘হুমকি প্রথা’য় নাম জড়ানো ইন্টার্ন ফের হেনস্থায় অভিযুক্ত
    আনন্দবাজার | ০৩ জুলাই ২০২৫
  • অপারেশন থিয়েটারে (ওটি) সহপাঠিনীকে হেনস্থার অভিযোগ উঠল বর্ধমান মে়ডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের এক ইন্টার্নের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত প্রীতম পালের বিরুদ্ধে আর জি কর হাসপাতালে ঘটনার পরে, আন্দোলনের পর্বেও বেশ কিছু অভিযোগ উঠেছিল। তবে রাজ্যের শাসক দলের ছাত্র সংগঠনের অন্যতম নেতা বলে কলেজের অন্দরে পরিচিত ওই ইন্টার্নের বিরুদ্ধে তখন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। মঙ্গলবার রাতে হাসপাতালের ওটি-তে কর্মরত ইন্টার্ন ছাত্রীকে হেনস্থার অভিযোগ ওঠার পরে, ফের সরব হয়েছেন সে সময়ের আন্দোলনকারীরা। প্রীতম অবশ্য সব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। অভিযুক্তের সঙ্গে সংগঠনের সম্পর্ক মানতে চায়নি তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি)।

    বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে জানা যায়, বুধবার অধ্যক্ষের কাছে অভিযোগ করেন ওই মহিলা ইন্টার্ন। অধ্যক্ষ মৌসুমী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিষয়টি কলেজের ‘জেন্ডার হ্যারাসমেন্ট কমিটি’র কাছে পাঠানো হয়েছে। শুক্রবার (কাল) জরুরি ভিত্তিতে কলেজ কাউন্সিলের বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেখানে সিদ্ধান্ত হবে।’’ তবে কী ধরনের হেনস্থার অভিযোগ উঠেছে, তা স্পষ্ট নয়। ফোন বন্ধ থাকায় অভিযোগকারিণীর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। জবাব মেলেনি মোবাইল-বার্তার।

    আর জি কর হাসপাতালে মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ-খুনের ঘটনার পরে আন্দোলনের পর্বে, বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে ‘হুমকি-প্রথা’ (থ্রেট কালচার) চালানোর মাথা বলে যাঁদের নাম উঠে এসেছিল, প্রীতম তাঁদের ঘনিষ্ঠ ছিলেন বলে অভিযোগ। কলেজ সূত্রের দাবি, তখন কলেজ কাউন্সিলের কাছে প্রীতমের নামে মহিলাদের সঙ্গে অভব্য আচরণ, পরীক্ষা ব্যবস্থায় হস্তক্ষেপের মতো গোটা ছয়েক অভিযোগ জমা পড়েছিল। তদন্ত-কমিটির সামনে হাজিরা দিয়েছিলেন তিনি। তবে কলেজের ২০ জন পড়ুয়াকে ওই ধরনের নানা অভিযোগে সাসপেন্ড করা হলেও, প্রীতমের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

    কলেজে আন্দোলনকারীদের মুখপাত্র তথা চতুর্থ বর্ষের পড়ুয়া সম্প্রীত দত্তের প্রশ্ন, “ছ’টি অভিযোগের পরেও প্রীতমের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি কেন!” তাঁর দাবি, “নির্দিষ্ট ছাত্র সংসদ না থাকায় কিছু ইন্টার্ন ও পড়ুয়ার বাড়বাড়ন্ত হচ্ছে বলে জানিয়েছি কলেজ কর্তৃপক্ষকে। নির্বাচিত ইউনিট (শাখা) গঠনের দাবি তোলা হয়েছে। তা না হলে, হুমকি-প্রথা বন্ধ করা যাবে না।” অভিযুক্তকে জুনিয়র ডাক্তারদের সংগঠনের একটি অনুষ্ঠানে সম্প্রতি কলেজের একাধিক কর্তা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে দেখা গিয়েছে, দাবি তাঁর। পড়ুয়াদের একাংশের দাবি, যখন কলেজে টিএমসিপি-র শাখা ছিল, তার নেতা ছিলেন প্রীতম। তবে টিএমসিপি-র পূর্ব বর্ধমান জেলা সভাপতি স্বরাজ ঘোষের দাবি, “এই নামে আমাদের কোনও সদস্য ছিলেন বলে জানা নেই। ভুল তথ্য দেওয়া হচ্ছে।”

    কলেজ কর্তৃপক্ষ সূত্রের দাবি, সেই সময়ে যে সব অভিযোগ জমা পড়েছিল, তার তদন্ত করে রিপোর্ট স্বাস্থ্য ভবনে পাঠানো হয়। সেখান থেকে যাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ এসেছিল, সে অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হয়েছিল। প্রীতমের নাম সেই তালিকায় ছিল না। এ দিন প্রীতম দাবি করেন, “হাসপাতালের ভিতরে সিসি ক্যামেরা রয়েছে। অন্য কর্মীরা আছেন। তাঁদের সামনে এমন কী ভাবে ঘটবে? আমার নামে অপবাদ দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে।”
  • Link to this news (আনন্দবাজার)