তেলঙ্গানার কারখানায় বিস্ফোরণের পরে এখনও প্রিয়জনদের খোঁজ নেই। তাই ডিএনএ-পরীক্ষা ভরসা পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুরের হরিরাজপুরের দু’টি পরিবারের।
দাসপুর থেকে তেলঙ্গানার পাশামিলারেমের উদ্দেশে মঙ্গলবারই রওনা হন নিখোঁজ দুই পরিযায়ী শ্রমিক অসীম টুডু ও শ্যামসুন্দর টুডুর পরিজন ও প্রতিবেশীরা। সিগাচি কারখানায় বিস্ফোরণস্থলে পৌঁছে তাঁরা দেখেন, সার দিয়ে রাখা মৃতদেহ। সেগুলি এমন ভাবে পুড়েছে, শনাক্ত করার উপায় নেই। ডিএন পরীক্ষা একমাত্র ভরসা। বিস্ফোরণে আহত শ্যামসুন্দরের বাবা তারাপদ হাসপাতালে ভর্তি। শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছে তাঁর। কোনও রকমে তাঁর দেহ থেকে রক্ত সংগ্রহ করা হয় নিখোঁজ ছেলে শ্যামসুন্দরের জন্য। রক্ত দিয়েছেন অসীমের ভাই অমিতও। তিনি বলেন, “বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলাম আশঙ্কা নিয়ে। মনে হচ্ছে, আশঙ্কাই সত্যি হতে চলেছে।”
সোমবার সকালে তেলঙ্গানার এক শিল্পতালুকে একটি কারখানায় ওই বিস্ফোরণ হয়। কারখানার ছাদ ভেঙে চাপা পড়েন শতাধিক শ্রমিক। আগুনে পুড়ে মৃত্যু হয় অনেকের। বিস্ফোরণের সময় সেখানে ছিলেন দাসপুরের তিন শ্রমিক। তাঁদের মধ্যে তারাপদকে মঙ্গলবার স্থানীয় প্রশাসন উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করায়। তবে অন্য দুই শ্রমিক, তারাপদের ছেলে শ্যামসুন্দর এবং গ্রামেরই এক যুবক অসীমের খোঁজ পাওয়া যায়নি।
বুধবার বিস্ফোরণস্থলে অমিত যখন দেখছিলেন দগ্ধ দেহগুলি, হরিরাজপুর তখন ছিল প্রতীক্ষায়। এই বুঝি খবর এল! অসীম অথবা শ্যামসুন্দর— কারও নাম আহতের তালিকায় নেই। ডিএনএ পরীক্ষার রিপোর্টের জন্যও অপেক্ষা করতে হবে অন্তত আরও এক দিন। তবে কঠিন এই সময়ে অমিতরা পেয়েছেন তেলঙ্গানার আত্মীয়তা। স্থানীয়দের কেউ তাঁদের দিয়েছেন খাবার, কেউ পানীয় জল। সাহায্যে মিলেছে স্থানীয় প্রশাসনের তরফেও।