স্থানীয় বাজারেও কি ছড়িয়েছে জাল নোট? পাঁচশো টাকার নোটের ‘প্রিন্ট আউট’ বের করে মানুষকে ঠকানোর চক্রের হদিস মিলতেই এ নিয়ে জোর আলোচনা শুরু হয়েছে তালড্যাংরা বাজার এলাকায়। হাত ঘুরে জাল নোট তাঁদের পকেটে ঢুকে পড়েছে কি না তা নিয়ে পান বিক্রেতা থেকে আনাজ ব্যবসায়ী অনেকেই সন্দিহান। যদিও পুলিশ এ নিয়ে আশ্বস্ত করছে।
বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার বৈভব তিওয়ারি বলেন, ‘‘প্রিন্ট আউট করা ওই নকল নোট দেখলেই চেনা যাবে। বাজার এলাকায় খুব বেশি ওই নোট ছড়ায়নি। তবে কোনও ভাবে কেউ পেয়ে থাকলে থানায় জমা করার জন্য পুলিশ সচেতন করছে।’’
সম্প্রতি দোকানে কেনাকাটা করতে গিয়ে তালড্যাংরা বাজারে জাল নোটের কারবারিরা পুলিশের জালে ধরা পড়ে। সেই থেকে বাজারে আরও ওই নোট ছড়িয়েছে কি না, তা নিয়ে বাসিন্দাদের দুশ্চিন্তা তৈরি হয়েছে। তবে পুলিশের দাবি, সাধারণ কাগজে ছাপানো ওই নোট হাতে এলেই বোঝা যাবে তা জাল।
জাল নোট কাণ্ডে এখন জেল হেফাজতে রয়েছে স্থানীয় লালবাঁধ গ্রামের চার যুবক গোলাম খান, দুলাল হাসান মল্লিক, শামিম খান, কেয়ামত আলি বায়েন। ধৃতদের কাছ থেকে মোট ১২টি পাঁচশো টাকার জাল নোট ও একটি স্ক্যানার কাম প্রিন্টার উদ্ধার হয়েছে।
গোলাম খান ও দুলাল হাসান মল্লিক পাঁচশো টাকার একটি নোট দোকানে বাজারে চালাতে এলে এক দোকানির সন্দেহ হয়। তিনি তৎক্ষণাৎ বিষয়টি তালড্যাংরা থানায় জানালে পুলিশ ওই দুই যুবককে আটক থেকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। পরে তাদের গ্রেফতার করে। পরে ওই চক্রের আরও দু’জন গ্রেফতার হয়।
পুলিশের তদন্তে উঠে আসে, ধৃতেরা কেউ দিনমজুর, কেউ আনাজ বিক্রেতা, কেউ বা রাজমিস্ত্রি। পুলিশের দাবি, ধৃতেরা স্বীকার করেছে তাদের মধ্যে দুলাল ইউটিউবে ওয়েব সিরিজ দেখে জাল নোট তৈরির কৌশল শেখে। সে বন্ধু গোলামকে সঙ্গে নিয়ে একটি প্রিন্টার কিনে জাল নোট ছাপানো শুরু করে। দূর থেকে দেখলে টাকা যে নকল তা বোঝা যায় না। তবে হাতে ওই জাল নোট এলে সহজেই ফারাক বোঝা যায়।
তদন্তকারীদের দাবি, ‘কল গার্ল’দের পেমেন্ট দেওয়া থেকে রাতে জুয়া খেলার জন্যই মূলত ধৃতেরা এই কারবার শুরু করে। ব্যক্তিগত স্বার্থে লোক ঠকাতেই তারা এই কারবার শুরু করেছিল বলে পুলিশের কাছে জেরায় দাবি করেছে। তালড্যাংরা থানার এক আধিকারিক জানান, এ ধরনের জাল নোটের বিষয়ে এলাকায় সচেতনতার প্রচার করা হবে।