একদিকে ভিন্ রাজ্যে হেনস্থা হওয়ার আশঙ্কা। আর এক দিকে রাজ্যে একশো দিনের কাজ পুনরায় শুরু হতে চলেছে। কী করবেন পরিযায়ী শ্রমিকেরা? উত্তর হল, ভিন্ রাজ্যের কাজকেই বেছে নিচ্ছেন বেশিরভাগ পরিযায়ী।
গত ১৮ জুন কলকাতা হাই কোর্ট কেন্দ্রীয় সরকারকে নির্দেশ দেয় আগামী ১ অগস্ট থেকে রাজ্যে ফের একশো দিনের কাজ চালু করতে হবে। হাইকোর্টের নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, দুর্নীতি রুখতে কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যকে যে কোনও শর্ত আরোপ করতে পারে। কিন্তু কাজ আটকে রাখা যাবে না।
হাই কোর্টের নির্দেশের পরে প্রায় তিন বছর ধরে বন্ধ থাকা একশো দিনের কাজ চালু হওয়ার অপেক্ষায় দিন গুনছেন গ্রামীণ এলাকার মানুষ। তবে একশো দিনের কাজ চালু হলে পরিযায়ী শ্রমিকরা এতে কতটা উপকৃত হবেন? তা নিয়েও জোর চর্চা শুরু হয়েছে।
ভগবানগোলার পরিযায়ী শ্রমিক এন্টু শেখ বলেন, “একশো দিনের কাজ চালু হলে আমাদের খুব সুবিধা হয়। ভিন্ রাজ্যে হেনস্থা হওয়ার চাইতে ভাল নিজ এলাকায় অল্প রোজগার করব।” কিন্তু মহারাষ্ট্রে কর্মরত পরিযায়ী শ্রমিক জাকির হোসেন বলেন, “ভিন্ রাজ্যে যে অর্থ উপার্জন করছি, একশো দিনের কাজে তা সম্ভব না। এতে পরিবার চালানো মুশকিল। তাই ভিন্ রাজ্যে কাজে যেতেই হচ্ছে।”
দিল মহম্মদ অবশ্য বলেন, “এখানে কাজ নেই বলে ভিন্ রাজ্যে যেতে হচ্ছে। কাজ পেলে ভিন্ রাজ্যে যাব কেন?” আনসার আলি বলেন, “১০০ দিনের কাজ পেলে সুবিধা হয়। কিন্তু জব কার্ড নেই।”
পরিযায়ী শ্রমিক ঐক্য মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক আসিফ ফারুক জানান, “এলাকায় কাজ পেলে পরিযায়ী শ্রমিকদের ভিন্ রাজ্যে যাওয়ার প্রবণতা কিছুটা হলেও কমবে। যাঁরা এলাকায় কাজ করতে চান, তাঁদের কাজের ব্যবস্থা করুক প্রশাসন। এই মর্মে প্রশাসনের কাছে আমরা লিখিত আবেদন জানাবো।”
একশো দিনের কাজ শুরু হচ্ছে শুনে বহু পরিযায়ী শ্রমিকের মুখে হাসি ফুটেছে। অন্য দিকে পরিস্থিতি ভিন্ রাজ্যে নিয়ে যেতে বাধ্য করছে কাউকে। কেউ কেউ কাজের ইচ্ছা প্রকাশ করলেও সেই সুযোগ হচ্ছে না।
মুর্শিদাবাদের অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) চিরন্তন প্রামাণিক জানান, “এই সংক্রান্ত কোনও সরকারি নির্দেশিকা এখনও অবধি আসেনি। নির্দেশিকা মেনে কাজ হবে।”