একটি কর্মসূচির জন্য দু’বার আদালতের দ্বারস্থ হতে হল বিজেপির যুব মোর্চাকে। আর সেই কর্মসূচি থেকেই তৃণমূলের ‘শহিদ দিবসে’র দিন, ২১শে জুলাই ‘উত্তরকন্যা অভিযানে’র ডাক দিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
কলকাতার আইন কলেজে গণধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার ‘কসবা চলো’র ডাক দিয়েছিল বিজেপির যুব মোর্চা। উপস্থিত থাকার কথা ছিল বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু, যুব মোর্চার রাজ্য সভাপতি ইন্দ্রনীল খাঁ প্রমুখের। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমতি না পেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল যুব মোর্চা। শর্তসাপেক্ষে আদালত মঙ্গলবারই অনুমতি দিয়েছিল। সেই মতো এ দিন সকাল থেকে কসবায় মঞ্চ বাঁধার কাজ শুরু হয়। কিন্তু অভিযোগ, পুলিশের বাধায় মঞ্চ তৈরির কাজ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। খুলে দেওয়া হয় এলাকায় লাগানো পোস্টার, ব্যানার। ফের এক বার আদালতে যায় যুব মোর্চা। জরুরি ভিত্তিতে শুনানি করে মঞ্চ বাঁধার অনুমতি নিয়ে আসে তারা। শেষ পর্যন্ত রাসবিহারী থেকে কসবা পর্যন্তবৃষ্টি-ভেজা মিছিলে হেঁটে ওই মঞ্চে বক্তৃতা করেন শুভেন্দু। তিনি বলেন, “মনোজ বর্মার (কলকাতার নগরপাল) গালে কাল একটা থাপ্পড় পড়েছিল। আজ দু’টো থাপ্পড় পড়েছে!’’
ওই মঞ্চ থেকে শুভেন্দু ঘোষণা করেছেন, “আমরা বৃহস্পতিবার নতুন রাজ্য সভাপতিকে বরণ করব। তার আগে এ দিন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সুনীল বনসলকে সামনে রেখে কথা বলে এসেছি। কলকাতায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে দিন ডিম-ভাতের অনুষ্ঠান করবেন, সে দিনই শিলিগুড়িতে যুব মোর্চা উত্তরকন্যা অভিযান করবে।’’ ফের এ দিন এক বার নবান্ন অভিযানের কথাও বলেছেন শুভেন্দু। তাঁর মন্তব্য, ‘‘আর জি করের নিহত তরুণী চিকিৎসকের মা-বাবা যদি চান, ৯ অগস্ট নবান্ন অভিযান করতে হবে। আমরা পতাকা ছাড়া সেখানে যাব।’’
উত্তরকন্যা ঘেরাওয়ের কর্মসূচি সম্পর্কে তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ অবশ্য বলেছেন, ‘‘সিপিএমের গণহত্যার সেই দিনে আলাদা কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। সিপিএম-বিরোধী আন্দোলনে ওঁদের যে কোনও ভূমিকা ছিল না, এতে স্পষ্ট হয়ে যায়! সচিত্র ভোটার পরিচয়পত্রের দাবিতে আন্দোলনের ডাক দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘ওই দিন উত্তরবঙ্গ থেকেও মানুষ আসবেন। এই কর্মসূচির অর্থ প্ররোচনা তৈরি করা।’’
গণধর্ষণের ঘটনার পরে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ও দক্ষিণ কলকাতা আইন কলেজের পরিচালন সমিতির সব সদস্যের পদত্যাগ দাবি করে এ দিনই গড়িয়াহাট মোড়ে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন দক্ষিণ কলকাতা জেলা কংগ্রেসের কর্মী-সমর্থকেরা। জেলা কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ প্রসাদের বক্তব্য, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে নারী সুরক্ষা, আইন-শৃঙ্খলা এখন প্রশ্নের মুখে। তৃণমূলের ছাত্র-নেতা মনোজিত মিশ্র কার সুপারিশে তার নিজের কলেজে চাকরিতে ঢুকল? আইন পাশ করে কী করে গ্রুপ ডি কর্মী হিসেবে চাকরি পেল? ওই আইন কলেজের পরিচালন কমিটির সদস্যদের পদত্যাগ করা উচিত!’’