• বিধাননগর থেকে অপহৃত ব্যবসায়ীকে উদ্ধার, ধৃত ৬
    আনন্দবাজার | ০৩ জুলাই ২০২৫
  • এক ব্যবসায়ীকে আটকে রেখে তাঁর পরিবারের কাছে মুক্তিপণ চাওয়া হয়েছিল। পরিবার কিছুটা টাকা দিলেও কাজ হয়নি। উল্টে ক্রমশ মুক্তিপণের অঙ্ক বাড়ছিল। এর পরে মঙ্গলবার অপহৃত ব্যবসায়ীর স্ত্রী পুলিশের দ্বারস্থ হন। অভিযোগ পেয়ে বিশেষ দল গঠন করে তল্লাশি শুরু হয়। প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে অভিযান চালিয়ে সে দিন রাতে কেষ্টপুর খাল সংলগ্ন বিধাননগরের একটি অতিথিশালা থেকে অপহৃত ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করে নিউ ব্যারাকপুর থানার পুলিশ। এই ঘটনায় ছ’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম সুমন সাহা, শিব ছেত্রী, বিশাল দাস, শুভজিৎ মুখোপাধ্যায়, আব্দুল খালিক এবং শেখ আনিসুদ্দিন। বুধবার অভিযুক্তদের ব্যারাকপুর আদালতে তোলা হলে পাঁচ দিনের পুলিশি হেফাজত হয়।

    পুলিশ সূত্রের খবর, মঙ্গলবার নিউ ব্যারাকপুর থানার শহরপুর এলাকার বাসিন্দা সুদীপা রায় থানায় অভিযোগ করেন যে, তাঁর স্বামী সৌমিত্র রায় ব্যবসা সংক্রান্ত কাজে ২৯ জুন বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। এর পরে নিজের ফোন থেকে তিনি স্ত্রীকে টেক্সট মেসেজ করে জানান, টাকা না দিলে তাঁকে ছাড়া হচ্ছে না। তাঁকে যেন বার বার ফোন না করা হয়। তিনি কথা বলতে পারবেন না। সেই মেসেজ পেয়ে সুদীপা ফোনে তাঁর স্বামীর সঙ্গে কথা বলেন। অপহরণকারীরা মুক্তিপণ হিসাবে প্রথমে পাঁচ লক্ষ ও পরে আরও তিন লক্ষ টাকা দাবি করে। মুক্তিপণ চাওয়ার পাশাপাশি অপহৃত ব্যবসায়ীকে মারধরও করা হয় বলে অভিযোগ। এর পরে বিধাননগরের অতিথিশালায় সুদীপাকে সঙ্গে নিয়েই অভিযান চালায় পুলিশ। অভিযানের শেষে সুদীপা দেখেন, তাঁর স্বামী সৌমিত্র হাঁটতে পারছেন না। সুদীপার দাবি, আটকে রেখে তাঁর স্বামীকে মারধরও করেছে অভিযুক্তেরা।

    প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জেনেছে, ব্যবসায় অনেক ধার-দেনা হয়েছিল সৌমিত্রের। তাই ২৯ জুন তাঁকে বাড়ি থেকে ডেকে আনে অভিযুক্তেরা এবং আটকে রাখে। তাঁর স্ত্রী অপহরণকারীদের ৫০ হাজার টাকা পাঠালেও পরে মুক্তিপণের অঙ্ক বাড়তে থাকে। এর পরে গয়না বিক্রি করতে বেরিয়ে শেষে সিদ্ধান্ত বদলে নিউ ব্যারাকপুর থানায় যান তিনি।

    অভিযোগ পেয়েই পুলিশ একটি বিশেষ দল গঠন করে। অপহৃতের মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন দেখে সেই রাতে বিধাননগর উত্তর থানা এলাকার একটি অতিথিশালায় হানা দেয় পুলিশ। সেখানে একটি ঘরে অপহৃত ব্যবসায়ী-সহ সাত জনকে দেখতে পায় তারা। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, ব্যবসায়িক লেনদেন সংক্রান্ত গোলমালের কারণে বকেয়া টাকা আদায়ে ওই ব্যবসায়ীকে আটকে রাখা হয়েছিল। জেরায় এমনই দাবি করেছে অভিযুক্তেরা। সেই দাবি যাচাই করে দেখছে পুলিশ।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)